গানের সময় ব্যাক স্ক্রিনে প্রজেকশনে লাদাখে অনশনরত প্রতিবাদী সোনম ওয়াংচুক
স্বৈরাচার দেখে ভয় পাচ্ছি
৩৬৫ দিন। শহরে রুপম একক মানেই উত্তেজনা। আর এটা নাকি ৫৩ তম একক। একক রুপমের অন্য ক্যারিশমা। যেন আয়নার সামনে দাড়িয়ে ও আসলে নিজের সঙ্গেই কথা বলছে। গর্জন করলেন প্রতিবাদী রুপম। গানে,কবিতায়,কোথায় প্রতিবাদ আর শিরদাঁড়া সোজা করে দাড়ানো রুপম। ওর অনুভূতি,ওর রাগ,ভালোবাসা,চিৎকার সবটাই যেন সেই আয়নায় প্রতিফলিত হচ্ছে। আর কখন যেন সেই একক সমবেত অনুভূতি হয়ে উঠেছে গোটা নজরুল মঞ্চ জুড়ে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে তীব্র আগুন উগড়ে দেওয়া গিটার অলক্ষে গণকণ্ঠস্বরের চেহারা নিয়ে নিল।
বেশি প্রতিবাদী হলে আমার ফোনে আড়ি পাতা হবে। পিছনে তাড়া করবে ট্রেন্ড ডগ। পালাতে হবে সব ছেড়ে। তবুও এবাবেই জানাবো প্রতিবাদ। পরিবেশ রক্ষার জন্য,প্রকৃতিকে বাঁচানোর জন্য লাদাকের মহান বিজ্ঞানী,সমাজসেবী, সোনম ওয়াংচুকের টানা ২১ দিন অনশন ধাক্কা দিয়ে যায় রুপমের গিটারের তারে। মিনি চিপ মাইক্রোফোনে আছড়ে পড়ে ওর প্রতিবাদ। সমবেত সমষ্ঠী হয়ে ওঠে এককের মঞ্চ। হায় আদালত! কখনও দুশ্চিন্তা হয়,কোথায় পাব বিচার। প্রশ্ন তোলেন রুপম। নিজেই বাঁচিয়ে রাখেন সুবিচারের আশা। নজরুল মঞ্চে একক অনুষ্ঠানে যেন রুপম যেন হয়ে উঠলেন বাংলার বব ডিলান। নারী ধর্ষকদের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ঝরে পড়ে রুপমের, কেন প্রশ্ন ওঠে ছোট পোশাকই ধর্ষনের কারণ! হল্লা চলছে যুদ্ধের মত যুদ্ধবাজ দেশগুলো সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছে মৃত্যুর হাতছানি। সিরিয়া থেকে ইউক্রেন, প্যালেস্টাইন, হাজার হাজার নিরপরাধ মানুষের মৃত্যুর জন্য কে দায়ী? তবুও যুদ্ধহীন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখালেন রুপম। সাড়ে তিন ঘন্টার শোতে ওর প্রকাশিত, অপ্রকাশিত, অর্ধেক কিংবা অনুচ্চারিত শব্দরা গান হয়ে গর্জন করে উঠল। দাপুটে ভাষা, ইস্পাত কঠিন ভাবনা আর নিজস্ব গায়কীতে প্রতিটা গান যেন অনুভূতির, লড়াইয়ের,প্রতিবাদের হাতিয়ার হয়ে উঠল। কানায় কানায় পূর্ণ নজরুল মঞ্চে রুপম একক যেন আনপ্যারালাল একটা সমাজতান্ত্রিক মিজিক্যাল জার্নি ।