ডায়মন্ড হারবারের সভায় অভিষেকের গর্জন
৩৬৫ দিন। ৪০০ পারের গল্প দিচ্ছে তো, ২০০য় গাড়ি আটকে যাবে। ৪ তারিখ ১০ বছর পর পরিবর্তনের যে সরকার তৈরি হবে, সেখানে অগ্রণী ভূমিকা নেবে তৃণমূল ও বাংলার মানুষ। মানুষ ভোট দেবে, ইডি সিবিআই তো ভোট দেবে না। এভাবেই আজ ভাজপার ৪০০ আসনের হুংকারের পাশাপাশি বিরোধীদের বিরুদ্ধে এজেন্সি রাজনীতির কথা তুলে ধরে তীব্র আক্রমণ শোনালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্র থেকে অভিষেকের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিতে সরাসরি কেন্দ্রীয় এজেন্সির ডিরেক্টরদের নামানোর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে অভিষেক বলেন, আমি তো বলেছিলাম এত রাগ যখন আমার বিরুদ্ধে, তাহলে ইডি সিবিআইয়ের ডিরেক্টরকে ডায়মন্ড হারবার থেকে দাঁড় করান। মেঘনাদ না হয়ে সম্মুখ সমরে আসুন। ভোেট ঘোষণা হয়েছে ১৬ মার্চ, বিজেপি প্রার্থী ঘোষণা করছিল ১৬ এপ্রিল। ভোেট কীভাবে কাটা যায় অপেক্ষা করছিল। আমি তো বলেছি যে খুশি দাঁড়াক। যারা এলাকা চেনে না, কটা ব্লক, ক’টা পুরসভার কটা ওয়ার্ড বলতে পারবে না, তারা নাকি অভিষেককে খেদাবে। আমি বলব, ৩ নম্বরে ছিল, ৩ নম্বরেই থাকবে। মানুষকে দুর্বল ভাবা, পারবে না। বাড়ির প্রতিশ্রুতি এই মঞ্চ থেকেই দিয়ে গেলাম। এ বছর শেষের আগেই।
কি বললেন অভিষেক
এই গরমে ৭ দফায় নির্বাচন করছে। যত কেন্দ্রীয় বাহিনী বাড়বে, তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান তত বাড়বে।
আমি গণতন্ত্রে রাজনীতির ছাত্র, মানুষের ক্ষমতায় বিশ্বাস করি, কোনও রাজনেতার ক্ষমতায় নয়। তাই যে ডায়মন্ড হারবার নিয়ে পাঁচ বছর ধরে কটাক্ষ করেছিল, প্রার্থী খুঁজতে দেড় মাস লেগে গিয়েছে। এটা আমার সাফল্য বা জয় নয়, আপনাদের জয়। অনেকে আমাকে বলেন, ডায়মন্ড হারবারের মানুষের সত্যি খুব ভাল ভাগ্য এমন একজন সাংসদ পেয়েছেন। আমি বলি ভুল, আমার ভাগ্য ভাল। আমি আগের জন্মে নিশ্চয়ই আগের জন্মে কোনও ভাল কাজ করেছিলাম, তাই এখানকার মানুষকে পেয়েছি। আমি ভোট চাইতে আসিনি। আগামী ৭-১০ দিনের মধ্যে মনোনয়ন জমা দেব। আমি খালি আপনাদের অনুমতি নিতে এসেছি। এই বাংলার ৪২ আসনের মধ্যে তৃণমূলের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘাঁটি ডায়মন্ড হারবার। আপনারা ডায়মন্ড হারবারের দায়িত্ব নিন। বাকি ৪১ কেন্দ্রের দায়িত্ব আমার। আমি যাতে বাকি ৪১ টাতে সময় দিয়ে, বাংলার বিরোধীদের বাংলা ছাড়া করার লড়াইয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্তিশালী করে, আগামীদিন বিরোধীদের বিতাড়িত করতে পারি, সেই অনুমতিটা আপনাদের কাছে নিতে এসেছি। ডায়মন্ড হারবার নিয়ে ৫ বছর ধরে কটাক্ষ করেছিল, আর প্রার্থী খুঁজতে দেড় মাস লেগেছে। সিপিএম-বিজেপির উচিত ছিল, প্রার্থী হওয়ার জন্য খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়া। এখনও সময় আছে, মনোনয়ন শুরু হয়নি। যদি কোনও কেন্দ্রীয় নেতা দাঁড়াতে চান, তাহলে স্বাগত। যারা ভোট চাইতে এসেছে, তাদের ভাষা শুনেছেন? বলছে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে খেদাও। কী করে খেদাবে? আমি মানুষের মনে বসে আছি। আমি বলেছিলাম ৪ লক্ষ ভোটে জিতব। যা ভালোবাসা দেখছি, ৪ লক্ষ যদি ৫ লক্ষ হয়, অবাক হব না।
বিজেপি প্রার্থী, সিপিএম প্রার্থী যাঁরা লড়ছেন, সকলের গণতন্ত্রে লড়ার অধিকার আছে। আপনাদের একটা কথাই বলতে চাই, যখন আপনারা ঘুমিয়েছেন, ডায়মন্ড হারবারে কাজ হয়েছে।
বিজেপি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ করতে চায়। কোচবিহারে বিজেপির নেত্রী বলেছেন, অথচ তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তার মানে ধরে নিতে হবে যেভাবে ১০০ দিনের টাকা, আবাসের টাকা বন্ধ করেছেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারও বন্ধ করতে চান? আমরাও বলে রাখি, যতদিন আমরা ক্ষমতায় আছি, সরকার আছে, বাংলায় তৃণমূল আছে, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের আশেপাশে আসতে দেবো না। এটা তৃণমূলের গ্যারান্টি।
চার বছর ধরে কেন্দ্র আবাসের টাকা দেয়নি। তবে এখানকার সবাইকে আশ্বস্ত করছি, ফল ঘোষণার পর ৬ তারিখ আদর্শ আচরণ বিধি উঠে যাওয়ার ৬ মাসের মধ্যে যারা বাড়ির জন্য আবেদন করেছেন, সবার বাড়ির প্রথম কিস্তির টাকা পাঠিয়ে দেব। এ বছর শেষ হওয়ার আগে টাকা পাঠিয়ে দেব। এটা আমার গ্যারান্টি।
আমার কাজকে কটাক্ষ করে ডায়মন্ড মডেল বলে বাকিদের থেকে দূরত্ব তৈরির চেষ্টা করে তাদের বলব ডায়মন্ড মডেল পথ দেখিয়েছে, আগামী দিনে ৪১ লোকসভাতেই এই ডায়মন্ডের উন্নয়ন মডেল বায় স্তবায়িত করে দেখাব।