মুর্শিদাবাদে মমতার গর্জন
৩৬৫ দিন। ‘বিজেপি গর্ভমেন্ট ফর দে এজেন্সি, বাই দ্যা এজেন্সি অফ দ্যা এজেন্সি। এজেন্সির কথা ছাড়া তারা এক পা চলে না। সবাইকে ফোন করে ভয় দেখায়। যে দুটো ফেজ হয়ে গেছে তাতে তোমরা এপাশ-ওপাশ ধপাশ হয়ে গেছো। আর বাদবাকি যে পাঁচটা ফেজ হবে তার জন্য বুক দুরু দুরু করছে। এ লড়াই টা আমাদের জিততে হবে। ২০০৪ এ মনে আছে? অটলজি ভদ্র মানুষ ছিলেন। অটল জির সময় বিজেপি একটা স্লোগান দিয়েছিল, ইন্ডিয়া ইজ স্মাইলিং। মানুষ কিন্তু উল্টো করে দিয়েছিল। এবারেও প্রচার বাবুরা প্রচার করে করে মিথ্যা কথা বলছে’ লোকসভায় ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় দফার নির্বাচন শেষ হওয়ায় পরেই এখন থেকেই পরবর্তী দফা গুলি নিয়ে বুক দুরু দুরু করতে শুরু করেছে ভারতীয় জনতা পার্টির, জঙ্গিপুরের জনসভা থেকে সরাসরি একথাই জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
বিজেপি হটাও দেশ বাঁচাও
এদিন মুখ্যমন্ত্রী ডাক দেন, ‘আমাদের নিজেদের হোটেল ভাড়া করতে হয়। উনাদের জন্য সবকিছু মাফ। আর্মির তিনটে হেলিকপ্টার। টেন স্টার হোটেল। এত পুলিশ, এত বাহিনী। হাওয়া কিন্তু রটে গেছে, বিজেপি হটাও দেশ বাঁচাও। বিজেপি হারলে খাওয়াবেন তো?’
হজ যাত্রীরা যেন ভোট না দিতে পারে
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যারা হজে যাবেন তাদের জন্য আমার শুভেচ্ছা। এরা পরিকল্পনা করে করেছে যেন যারা হজযাত্রী তারা যেন ভোটটা না দিতে পারে।’
মুর্শিদাবাদে নজর রাখুন
এদিন মুখ্যমন্ত্রী দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দেন, ‘পাশের কেন্দ্র মুর্শিদাবাদ। ওখানে উড়ে এসে একজন বাজপাখি দাঁড়িয়েছে। আমি সবাইকে বলে যাচ্ছি নজর দিতে হবে। সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভোট ভাগ করে এরা বিজেপিকে জেতাবে। এই ভুলটা যেন আমরা না করি।’
জিন্দা লাশ হয়ে লড়াই করছি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাকে তো সিপিএম মেরে মেরে ফাটিয়ে দিয়েছে। আমি জিন্দা লাশের মত বেঁচে আছি। তাই নিয়ে লড়াই করছি এবং লড়াই করে যাব। বিজেপিকে হারাতে চান, তাহলে কোন ভোট কাটাকাটি নয়। তৃণমূলই একমাত্র পার্টি যে আপনাদের আগলে রাখবে। কংগ্রেস সিপিএমকে তো বাংলায় দেখা যায় না। এরা চিরকাল আমাদেরকে গালাগালি দিয়েছে। ভোট কাটাকাটির রাজনীতি করবেন না। আমরা যেখানে কনটেস্ট করছি সেখ ানে এই রাজনীতিটা করবেন না। মুর্শিদাবাদের পাঠিয়েছে, সেলিম কে লড়তে। ওখানে রমজানকে লড়তে পাঠিয়েছে। আর মালদায় পাঠিয়েছে আরেকজনকে লড়তে। যে সিট গুলো তৃণমূলের পাক্কা সিট সেই সিট গুলোতে যেন তৃণমূলকে হারানো যায় সেই ব্যবস্থা করেছে।’
বোমা ফাটাবো যেন ভারতবর্ষ মগের মুলক
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বলছে বোমা ফাটাবো। তোর বাড়ির লোকের এই অবস্থা হলে কি করতিস? তুই ভাজপা মেশিনে ঢুকে গেছিস নিজের টাকা বাঁচাতে। একটা দুটো কেসে ভুল থাকলে আমরা শুধরে নেব। তাই বলে তুমি চাকরি খেয়ে নেবে। যেন ভারত বর্ষ মগের মুলুক। বাংলায় ভোট চাইবার আগে আপনি নিজের আয়নায় নিজের মুখটা দেখুন আর একটা শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন।’
তৃণমূল কর্মী মারা গেছে বলে দুঃখিত
মুখ্যমন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘কালকেও আমি দুঃখিত বলরামপুরে একজন জেলা পরিষদ প্রার্থী মারা গেছেন। তাকে মারা হয়েছে। গত পরশুদিন বাগুইহাটিতে আমার একজন কর্মী মারা গেছে। কই তখন তো এনআইএ আসে না। সিবিআই ইনকাম ট্যাক্স আসে না। আর কথায় কথায় মানুষকে ধমকানো বিজেপি জেনে রেখো এ বারই তোমাদের শেষ বার আর কোন বার তোমরা ক্ষমতায় আসবে না।’
এক কোটি কন্যাশ্রী
বাংলার উন্নয়নের বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কন্যাশ্রী হয়ে গেছে এক কোটি। লক্ষীর ভান্ডার হয়ে গেছে এক কোটি ১২ লক্ষ। আমার স্বাস্থ্য সাথী ন’কোটি পরিবারের লোকেরা চিকিৎসা পান। ইন্ডিয়াতে সংখ্যালঘু ছেলেমেয়েদের স্কলারশিপে এক নম্বর আমরা। চার কোটি ছেলেমেয়েদের স্কলারশিপ দিয়েছি আমরা। আমরা একসাথে বাঁচবো একসাথে লড়াই করব এটা আমাদের রীতি। মুর্শিদাবাদের সিল্ক, রাজশাহী সিল্কের থেকেও ভালো কোয়ালিটি। আমি চাইবো আপনার পৃথিবীতে আগামী দিনে এক নম্বর স্থানে পৌঁছান। সাগরদিঘী তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প একটা বড় প্রকল্প। চতুর্থ পর্যায় ১৬০০ মেগাওয়াটের এর কাজ কমপ্লিট হয়ে গেছে। হাতে নেওয়া হয়েছে আরও ৬৬০ মেগা ওয়াটের কাজ।’
গঙ্গার ভাঙ্গন
গঙ্গার ভাঙ্গন রোধে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে সুতি ধুলিয়ানে গঙ্গার ভাঙ্গন এটা বড় সমস্যা। এটা দিল্লির কাজ কিন্তু দিল্লি সমস্ত কাজ বন্ধ করে দিয়েছে টাকা পয়সা দিচ্ছে না। তা সত্ত্বেও আমরা আড়াইশো কোটি টাকা বরাদ্দ করেছি এইসব এলাকায় কাজ করার জন্য। এছাড়াও কান্দি মাস্টারপ্ল্যান আমরা কম কমপ্লিট করে দিয়েছি। ৪৪০ কোটি টাকার কান্দি মাস্টার প্ল্যান। ১০ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবে।’
বাংলায় এন আর সি হবে না
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ট্যা ফু করতে দেবো না। আমরা বাংলায় ক্যা, ইউনিফর্ম সিভিল কোর্ট, এন আর সি করতে দেবো না। আজকে ক্যান্সারের ওষুধ, ব্লাড সুগারের ওষুধ, ব্লাড প্রেসারের ওষুধ যেগুলো লোকের রোজ খায়, তার দাম কত বাড়িয়ে দিয়েছে আপনারা জানেন? দেশ বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, জাতি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, সংবিধান বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, কি নিয়ে থাকবেন? আগামী দিনে বিজেপি এলে এনআরসি করে সবাইকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেবে। ক্যা করে সবাইকে তা দিয়ে দেবে।’