কৃষ্ণনগরে তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রর হয়ে অভিষেকের জনসভা।
কৃষ্ণনগরে মহুয়ার সমর্থনে জনসভায় অভিষেকের গর্জন
৩৬৫ দিন। মহিলাদের ২০০০ টাকা করে দিয়ে মিথ্যে অভিযোগ করিয়েছে। মহিলাদের সম্ভ্রম, ইজ্জত ২০০০ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে দিল্লির কাছে। এভাবেই আজ কৃষ্ণনগরের মহুয়া মৈত্রের সমর্থনে নির্বাচনী জনসভা থেকে ভারতটাকে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, রবিবাসরীয় রোড শোতে মালদহ দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের তিনপাকুরিয়া থেকে বোগদাদনগর পর্যন্ত তৃণমূল প্রার্থী শাহনওয়াজ আলি রায়হানের সমর্থনে হুড খোলা ট্যাবলোতে অভিষেকের রবিবাসরীয় রোড শোতে মানুষের ঢল নামে।
আজ অভিষেক বলেন, সন্দেশখালি নিয়ে অনেক গলা ফাটিয়েছিলেন। কাল দেখেছেন তো? প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, বাংলার মানুষকে ছোট করেছে। মহিলাদের ২০০০ টাকা করে দিয়ে মিথ্যে অভিযোগ করিয়েছে। মহিলাদের সম্ভ্রম, ইজ্জত ২০০০ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে দিল্লির কাছে। আমি বলছি না, বলছেন বিজেপি-র মণ্ডল সভাপতি। সন্দেশখালির মাধ্যমে যাঁরা বাংলাকে ছোট করেছেন দেশের সামনে, তাঁদের জবাব দেবেন। বিজেপি এখানে যাঁকে প্রার্থী করেছে, কেউ তাঁকে চেনেন না। নিজের পরিচয় দেন রাজমাতা হিসেবে। প্রধানমন্ত্রী ইডি রাজ, সিবিআই রাজে বিশ্বাসী। তাঁরা জিতলে গরিবের উপর অত্যাচার বাড়বে। আমাদের প্রার্থী জিতলে আমরা দিল্লির বুকে আন্দোলন করে গরিবের অধিকার আনার জন্য সরব হই। আমাদের মহিলা সাংসদ দোলা সেন, মহুয়ার চুলের মুঠি ধরা হয়েছিল, রাজ্যের জন্য টাকা চাইতে গিয়েছিলেন বলে। যত রাজনৈতিক দল আছে, সকলকে ইডি, সিবিআই লাগিয়ে চমকে ধমকে বাড়িতে ঢুকিয়ে দিয়েছে। পাঁচ বছরে আমাকে কত বার ডেকেছে। আমার বয়স্ক মা, বাবাকে ছাড়েনি। মহুয়া মৈত্রের বাড়িতে ইডি, সিবিআই পাঠিয়েছে। যাঁদের ক্যামেরায় টাকা নিতে দেখা গিয়েছে, তাঁরা এখন বিজেপির নেতা।
অমৃতা রায় ভোট চাইতে এলে তাঁকে তিনটি প্রশ্ন করবেন। বিজেপি নেতারা বলছেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ করে দেবে। সেই ভিডিয়ো দেখাবেন। তাঁরা যাঁকে রাজ্যপাল করে পাঠিয়েছেন, সেই পদ কলঙ্কিত করেছেন বর্তমান রাজ্যপাল। মেয়ের বয়সী মেয়েকে শ্লীলতাহানি করেছেন। রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। এই নিয়ে অবস্থান কী? তৃতীয় প্রশ্ন, সন্দেশখালি নিয়ে অনেক বলেছিল, গলা ফাটিয়েছিল, কাল সন্দেশখালি দেখেছেন তো? প্রমাণিত হয়েছে, বাংলার মানুষকে কলঙ্কিত করতে গিয়ে, কলুষিত করতে গিয়ে বাংলার মানুষকে ছোট করেছে। যখন ভোটবাক্স খুলবে, সর্ষেফুল দেখবেন বিজেপির নেতারা। জোর দিয়ে বললেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা ভোেট দীর্ঘায়িত করা প্রসঙ্গে অভিষেক বলেছেন, এত দিন ধরে ভোট করাচ্ছে। মানুষের কষ্ট বোঝেন না। এই গরমে কষ্ট দিচ্ছে। এদের জবাব দেব, কথা দিয়ে গেলাম। মাছ মাংস কতজন খান? সেই প্রশ্ন মঞ্চ থেকে করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। উপস্থিত জনতার অধিকাংশই হাত তোলার পরে নিজেই বলেন, আমি রুই খাবোনা কাতলা খাব শুটকি খাব নাকি ভেটকি ঠিক করে দেবে নরেন্দ্র মোদি সরকার। মহুয়া প্রতিবাদ করেছিলেন, সংসদে কৃষ্ণনগরের মানুষদের – অভিযোগ তুলে ধরেছিলেন বলেই তাঁর সাংসদ পদ খারিজ – করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। গত বছরের থেকে দ্বিগুণ ভোটে জয়ী করুন মহুয়াকে। মহুয়ার বিরুদ্ধে কোনও তদন্তও করা হয়নি। অথচ যাঁরা দেশের নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে ফেলে দেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করে না মোদি সরকার। গত তিন বছরে প্রধানমন্ত্রী কখনও কৃষ্ণনগরে আসেননি। কিন্তু মহুয়া মৈত্র সারা বছর মানুষের কাছে থেকেছেন। তদন্ত ছাড়া যাঁরা মহুয়ার পদ খারিজ করেছেন, তাঁদের বিতাড়িত করতে হবে। কৃষ্ণনগরে মোদীজি আবার সভা করেছেন। তিনি কোনও ভাবে চান না যাতে মহুয়া জেতেন। আমি বলি, আপনারা পাঁচ বছর সংসদে মহুয়ার পারফরম্যান্স দেখেছেন। মমতার প্রকৃত সৈনিক। দিল্লির তাঁবেদারের কাছে আমাদের সৈনিকেরা মাথা নত করেননি। গত ৫ বছর যে ভাবে আপনাদের দাবিদাওয়া সামনে রেখেছে, মুখোশ খুলে দিয়েছেন, এঁদের গায়ে জ্বালা ধরেছে। তাই তৃণমূলের প্রার্থীকে জিততে দেওয়া যাবে না। বিজেপি ভোেট কিনতে আপনাকে টাকা দিলে নিয়ে নেবেন। এটা আপনাদের টাকা। ৫০০ দিলে ২০০০ টাকা চাইবেন। এটা বাংলার মানুষের টাকা। নিয়ে নেবেন। ১০০ দিনের টাকা চেয়েছিলেন, সাড়া দেননি প্রধানমন্ত্রী। রাস্তা, আবাস, বিদ্যুৎ, বার্ধক্য ভাতার টাকা দেয়নি। যে লক্ষ্মীর ভান্ডার পান। তাতে বিজেপির অবদান নেই। যে ভাষা ওরা বোঝে, তাতেই জবাব দিন।