রাজভবনে শ্লীলতাহানি, তদন্তে নিষেধাজ্ঞা পদ্মপালের
৩৬৫ দিন। সিবিআই বা অন্য কোনো তদন্তকারীসংখ্যা ডাকলে না গেলে তাকে অপরাধী বলে দাগাতে চেষ্টা চেষ্টা করে ভাজপা। কিন্তু পদ্মপাল শ্লীলতাহানির মতো গুরুতর অভিযোগকে কেন তদন্তের আওতায় আনতে চাইছেন না তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন।
গ্যাগ অর্ডার কেন
রাজ্যপালের এহেন আচরণের নিন্দায় সরব হয়েছেন নির্যাতিতা বলে দাবি করা কর্মী থেকে সবাইই। তৃণমূলের মহিলা শাখার জসদস্য ও মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যর প্রশ্ন তদন্তে গ্যাগ অর্ডার কেন রাজ্যপালের।
তিনি যদি পরিষ্কার থাকেন তাহলে তো তদন্তের মুখোমুখি হয়ে নিজেকে পরিষ্কার প্রমান করুন।
নির্যাতিতদের নিয়ে কাজ করা কমিশনের পদাধিকারীদের মতামত
শিশু সুরক্ষা, নারী সুরক্ষা কমিশনের পদাধিকারীরা এই ধরণের অভিযোগ প্রায়ই পেয়ে থাকেন। শিশু সুরক্ষা কমিশনের সদস্য সুদেষ্ণা রায় ও অনন্য চ্যাটার্জির প্রশ্ন যদি রাজ্যপাল সত্যি কিছু না করে থাকেন তাহলে তো তদন্তে তা প্রমান হয়ে যাবে। তার তো নিজের উচিত এগিয়ে এসে তদন্ত করানোর। তা না করে তিনি তদন্ত ছেড়ে পালাচ্ছেন, সংবিধান দেখিয়ে বন্ধ করতে চাইছেন।
এতেই তো সন্দেহ বাড়ছে।
রাজ্যপাল রাজভবনে নেই কেন?
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে রাজভবনের এক মহিলা কর্মীর শ্লীলতাহানির মতো গুরুতর অভিযোগ তোলার পরেই রাজভবন ছেড়ে দক্ষিণ ভারতে নিজের বাসভবনে চলে গেছেন রাজ্যপাল। রবিবার তিনি সেখান থেকেই রাজভবনের এক্স হ্যান্ডেলে এই মামলায় পুলিশি তদন্তের বিরোধিতা করে পোস্ট করেন তিনি। সেখানে সাংবিধানিক রক্ষাকবচের কথা সহ বিভিন্ন আদালতের রায়ের কথা তুলে ধরে কেন রাজ্যপালকে তদন্তের আওতায় জানান যায় না বা তার বিরুদ্ধে পুলিশি পদক্ষেপ করা যায় না তারই ব্যাখ্যা দিয়ে ২ পাতা পোস্ট করেছেন তিনি।
কর্মীদের তদন্তে যোগদানে বাধা কেন?
পাশাপাশি রাজভবনের সমস্ত কর্মী তথা স্থায়ী, অস্থায়ী সকলকে পুলিশের সঙ্গে কোনও ধরনের বার্তালাপ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল। মুখোমুখি, ফোনে কিংবা কোনও ভাবেই কেউ যেন পুলিশের সঙ্গে কোনও কথা না বলেন বলে তাঁর নির্দেশ। এ বিষয়ে রাজভবনে সিনিয়র আধিকারিক এস কো পট্টনায়েককে সকলের কাছে রাজ্যপালের এই বার্তা পাঠানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
রবিবার রাজভবনের তরফে থেকে যে বিবৃতি জারি করা হয়, তাতে বলা হয়, ‘সংবিধানের ৩৬১ (২) ও ৩৬১ (৩) ধারায় রক্ষাকবচ পান রাজ্যপাল। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তদন্তের এক্তিয়ার নেই পুলিশের। পুলিশের তদন্ত রিপোর্টের প্রেক্ষিতে আদালতও কোনও ব্যবস্থা নিতে পারে না।দ রাজভবনের আরও বক্তব্য, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর করতে পারে না পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাজভবনের এক মহিলা অস্থায়ী
কর্মী হেয়ার স্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
তাঁর বয়ান অনুযায়ী, তিনি রাজভবনের অস্থায়ী কর্মী। তাঁর
চাকরি যাতে স্থায়ী হয়, তার আবেদন করেন। রাজ্যপাল তাঁর
সঙ্গে দু’বার অশালীন আচরণ করেছেন। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে
এই অভিযোগ নিয়ে সরব হয় তৃণমূল। রাজ্যপাল রাজ্যের
সাংবিধানিক প্রধান। তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে সংবিধান
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শও নেন কলকাতা পুলিশের কর্তারা।
তারপর মহিলার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে প্রাথমিক
অনুসন্ধান শুরু করে কলকাতা পুলিশ। রাজভবনের সিসিটিভি
ফুটেজ খতিয়ে দেখতে চান তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর,
রাজভবনের ওসি-র কাছে এই মর্মে একটি চিঠিও করা হয়
লালবাজারের তরফ থেকে। তারপরই আজ রাজভবনের
তরফ থেকে এই বিবৃতি জারি করা হয়। তবে লালবাজারের
তরফে জানানো হয়েছে ওই মহিলার অভিযোগের প্রপ্রেক্কিতে রাজ্যপালের রক্ষাকবচ ও গরিমাকে যথাযথ সম্মান দিয়েই ও তদন্তের আওতার বাইরে রেখেই মহিলার অভিযোগ এর
তদন্ত করা হচ্ছে। কারণ হিসেবে লালবাজার জানিয়েছেন ওই মহিলা যদি আদালতে গিয়ে তার অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের মামলা করেন তাহলে যাতে তাদের তরফে কোনো গাফিলতি আদালত না ধরতে পারে তার জন্যেও এই তদন্ত জরুরি।