বসিরহাটের ভাজপা প্রার্থী রেখা পাত্র’র বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ উঠল
৩৬৫ দিন। মাত্র ২০০০ টাকা। এই ২ হাজার টাকার বিনিময়েই নিজের মান সম্ভ্রম বিলিয়ে দিয়ে নিজেকে একের পর এক সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরার সামনে এবং ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে পর্যন্ত নিজেকে ধর্ষিতা বলে বারে বারে দাবি করেছেন বসিরহাটের ভাজপা প্রার্থী রেখা পাত্র। এতদিন ধরে নিজেকে সন্দেশখালীর নির্যাতিতা বলে দাবি করে নির্বাচনী প্রচারের মঞ্চ থেকেও গালভারী বক্তব্য রেখে চলেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বেছে নেওয়া বসিরহাটের ভাজপা প্রার্থী রেখা পাত্র।
কিন্তু সন্দেশখালীর ভাজপা এক নম্বর মন্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়ালের যে স্টিং ভিডিও তৃণমূল ভবন থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে এনেছেন। সেখানে গঙ্গাধর ফাঁস করে দিয়েছেন রেখা পাত্রের ধর্ষিতা হওয়ার ব্যাকগ্রাউন্ড রয়েছে মাত্র ২ হাজার টাকা। অথচ সন্দেশখালিতে প্রায় সমস্ত মহিলাই তৃণমূল নেতাদের ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে গত কয়েক মাস ধরে লাগাতার অভিযোগ করে লোকসভা ভোটের টিকিট পেয়ে যাওয়া রেখা পাত্র যিনি নিজেকে বারে বারে সন্দেশখালীর মহিলাদের সামনে তুলে ধরেছেন আমি তোমাদেরই লোক বলে! তাদের কাছে রেখা পাত্রের এই ২০০০ টাকার বিনিময় ধর্ষিতা সাজার বাস্তব ছবিটা চলে আসার পর থেকে জনসভা তো দূরের কথা বক্তব্য মুখ লুকোচ্ছেন নরেন্দ্র মোদির বেছে নেওয়া রেখা জি!
খবর ৩৬৫ দিনের পক্ষ থেকে এই স্টিং অপারেশনের ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা না হলেও, সেই ভিডিওতে সন্দেশখালি একনম্বর মন্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়াল স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন রেখা পাত্রের ভাজপা প্রার্থী পদে বাকিদেরকে পিছনে ফেলে এগিয়ে আসার রহস্যটাও। দুই হাজার টাকা করে দিয়ে সন্দেশখালীর বেশ কিছু মহিলাকে নাকি রীতিমত নাটকের স্ক্রিপ্ট লেখার মত স্ক্রিপ্ট লিখে মুখস্ত করতে দেওয়া হয়েছিল নিজেদের ধর্ষিতা প্রমাণ করার জন্য। আর সন্দেশখালীর অন্য মহিলারা রেখা পাত্রের মতো নাকি এত সহজে নিজেদের ধর্ষিতা বলে দাবি করার জন্য স্ক্রিপ্ট খুব একটা ভালো করে মুখস্ত করে উঠতে পারেননি। যা নাকি রেখা পাত্র সবার আগে মুখস্থ করে ফেলায় বাজিমাত করে ফেলেছেন।
তবে নিজের পক্ষে জনসমর্থন কতখানি রয়েছে তার প্রমাণ দেওয়ার জন্য নাকি রেখাকে শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশে গঙ্গাধর শিখিয়ে দিয়েছিল আরো কিছু মহিলাকে ২০০০ টাকা করে দিয়ে নিজেদের ধর্ষিতা বলে দাবি করাতে হবে। সেই কাজেও নাকি ১০০ শতাংশ সফল রেখা জি! এতটাই সফল যে বাংলার ভাজপা নেতাদের কথায় তড়িঘড়ি বারাসাতে ছুটে এসে জনসভার পিছনের মঞ্চে রেখাজীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর রেখাজীর সঙ্গে কথা বলে মোদী নাকি এতটাই আপ্লুত হয়ে যান যে কয়েকদিনের মধ্যেই রেখা পাত্র কে ফোন করে তাকে প্রার্থী ঘোষণার পাশাপাশি সর্বতোভাবে সাহায্য করার। প্রতিশ্রুতিও দিয়ে ফেলেন।
আজ গঙ্গাধরের বক্তব্য তুলে ধরে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত কৃষ্ণনগরের জনসভা থেকে তীব্র ভর্ৎসনা করে বলেন, সন্দেশখালি নিয়ে অনেক গলা ফাটিয়েছিলেন। কাল দেখেছেন তো? প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, বাংলার মানুষকে ছোট করেছে। মহিলাদের ২০০০ টাকা করে দিয়ে মিথ্যে অভিযোগ করিয়েছে। মহিলাদের সম্ভ্রম, ইজ্জত ২০০০ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে দিল্লির কাছে। আমি বলছি না, বলছেন বিজেপি-র মণ্ডল সভাপতি। সন্দেশখালির মাধ্যমে যাঁরা বাংলাকে ছোট করেছেন দেশের সামনে, তাঁদের জবাব দেবেন।