মালদায় মমতার হঁশিয়ারি
সংখ্যালঘু ভোট কাটাকাটির অংকে নেমেছে সিপিএম
৩৬৫ দিন। সিপিএম সংখ্যালঘুদের দিয়ে ভোট কাটাকাটির অংকে নেমেছে। এই ভোট কাটাকাটির বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের মালদার জনসভা। থেকে সাবধান করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা। রবিবার মালদা দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী শাহনাজ আলী রায়হান এবং মালদা উত্তরে তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচার থেকে বাংলায় সংখ ্যালঘুদের সার্বিক উন্নয়নের কথাও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। ভোট কাটাকাটি নয়
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সংখ্যালঘুদের বলছি, এটা দিল্লিতে সরকার বদলানোর নির্বাচন। সব ভোট এক কাট্টা করে রাখবেন। কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে তার কারণ বিজেপির দুটো চোখ, একটা কংগ্রেস একটা সিপিএম। মুর্শিদাবাদের গিয়ে দাঁড়িয়েছে সেলিম, এখানে আরেকজন, রায়গঞ্জে আরেকজন। ভোট কাটাকাটির জন্য যদি বিজেপি বেরিয়ে যায় ক্ষতি কিন্তু আলটিমেটলি আপনাদেরই। ভোটটা কাটাকাটি করে যদি বিজেপি চলে আসে, তাহলে ডিটেনশন ক্যাম্পে সবাইকে পাঠিয়ে দেবে। আমরা থাকতে এটা করতে দেবো না। আমি তো আপনাদের উপর কোন অত্যাচার করতে দিইনি। আপনাদের জীবন নিরাপত্তা নিয়ে খে লতে দিইনি। আপনারা তো এ কথা, বলতে পারবেন না, সংখ ্যালঘুদের উন্নয়ন হয়নি। যেখানে সিপিএমের আমলের ৪০০ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ ছিল এখন সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা বাজেটে বরাদ্দ হয়েছে। যারা হজযাত্রীরা জান সবকিছুর ব্যবস্থা আমরা করে দিই। মুয়াজ্জিম ইমামদের সাম্মানিক আমরা দিই। যার জন্য আপনাদের ঘর থেকে আজকে ইঞ্জিনিয়ার ডাব্লুবিসিএস বেরোচ্ছে। সবাই পড়াশোনা করছে ভালো করে এটাই তো আপনারা চান আপনাদের ঘরের ছেলেমেয়েরা মানুষ হোক।’
বিজেপির রথ কে রুখে দিন
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘মালদা জেলায় আমরা কোনদিনও লোকসভা সিট পাইনি। আগেরবার প্রথম বিধানসভায় মালদা মুর্শিদাবাদের আপনারা ঢেলে দিয়েছিলেন তাই আমরা বিজেপিকে রুখে। দিয়েছিলাম। আপনারাই পারেন বিজেপির রথ কে রুখে দিতে। বাংলায় তৃণমূল একা লড়ছে বিজেপির বিরুদ্ধে। বাংলায় সিপিএমের জোট হচ্ছে কংগ্রেসের সঙ্গে। আপনারা কেউ চান মালদার মানুষ আমি সিপিএমের কাছে আবার আত্মসমর্পণ করি? আমি কংগ্রেসকে বলেছিলাম দুটো সিট তোমাদের দিয়ে দিচ্ছি তোমরা সিপিএমের সঙ্গে জোটটা করো না। কিন্তু ওরা কথা শুনে নি। ইন্ডিয়া অ্যালায়েন্স তৈরি করেছি আমি। নামটাও আমার দাওয়া, যা দেখে মোদি থরথর করে কাপে। দিল্লিতে বিজেপিকে হারাতে গেলে বাংলায় দয়া করে ভোট কাটাকাটির রাজনীতিতে যাবেন না। বরকত দার পরিবারের মৌসুম নূরকে আমি রাজ্যসভার সাংসদ করে দিয়েছি। দেখুন আজকে আমাদের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে পার্লামেন্ট থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে কেন? সে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করে বলে।’
সিপিএমের উকিল দিয়ে বিজেপি চাকরির কেস খাচ্ছে
এদিন জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যত চাকরির কেস খাচ্ছে বিজেপি, সিপিএমের উকিল দিয়ে। আর কংগ্রেস সেই উকিলের দালালি করে। মানুষ খেকো বাঘ একটা চলতি কথায় আছে।’
চাকরি খেকো বাঘ
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এরা হচ্ছে চাকরি খেকো বাঘ। যখন দেখ ছে আর কিছু করার নেই তখন সব চাকরি খেয়ে নাও। আবার প্রধানমন্ত্রী এসে নাটক করে বলে গেলেন এ তো তৃণমূলের জন্য হয়েছে। আপনাদের আগে থেকে জানা ছিল। আমি পরিষ্কার করে বলছি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে আমরা আছি ছিলাম থাকবো। চাকরিপ্রার্থীদের যদি কোন সমস্যা থাকে নিশ্চয়ই তদন্ত হবে, কিন্তু তা বলে ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চাকরি চলে যাবে এটা মন থেকে মানতে পারি না। আজকে কোর্ট কেউ কন্ট্রোল করছেন। মানুষের শেষ যাবার জায়গা কোথায়? বিচারের যখন মানুষ পায় না তখন চলে যায় বিচারের দরজায়। আমরা আইনে যাচ্ছি। সুপ্রিম কোর্টেও যারা যারা যাওয়ার তারা যাচ্ছে।’
আমাদের প্রার্থীর কোন ত্রুটি নেই
এদিন মুখ্যমন্ত্রী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে বলেন, ‘একজন আইপিএস দেখলেন রেজিগনেশন একসেপ্ট হল জয়েন করতে পারল না। ত্রুটি ছিল বলে কিন্তু প্রসুন চিরকাল পুলিশ প্রথম লেভেল থেকে সর্বোচ্চ লেভেল পর্যন্ত কাজ করেছে। কিন্তু ওর নামে কোন দিন কোন বদনাম ছিল না। ওর নামে গুলি চালানোর কোন দিন কোন অভিযোগ ছিল না। প্রকাশ চিক বড়াইক উনি আলিপুরদুয়ার থেকে হয়তো জিতে যাবেন।’
এবার গ্রাম সভা বদলান
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘গ্রাম সভা, বিধায়ক সব বিজেপির। এবার পাল্টান। তাহলে কাজটা করবো কি করে?’
অনুপ্রবেশকারী প্রধানমন্ত্রী
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘৪৩ লক্ষ লক্ষ বাড়ি বাংলার আমরা আগে করে দিয়েছিলাম। বলছি তৃণমূল নাকি চুরি করেছে। বুকের পাটা যদি ৫৬ ইঞ্চি হয় তাহলে প্রমাণ করো নিয়ে এসে শ্বেতপত্র। প্রধানমন্ত্রী ক্রমাগত মিথ্যে কথা বলে যাচ্ছেন। এটা তোমায় মানায় না। সবাই যদি অনুপ্রবেশকারী হয় তাহলে আপনিও অনুপ্রবেশকারী প্রধানমন্ত্রী। আমিও অনুপ্রবেশকারী মুখ্যমন্ত্রী। সব পঞ্চায়েত, জেলা পরিষদ সবকিছু তাই। ভোটে জিতে গিয়ে আপনাদের ভুলে যায়, সাধারণ মানুষের কথা মনে থাকেনা। আমি কতদিন আগে থেকে বলছিলাম, না এখন কেউ কেউ বলছে না বিজেপি এবার আর আসবেনা। তা এতদিন কি বলছিলে? এসবার ৪০০ পার, আমি বললাম ইজ বার পগার পার। বিজেপি হচ্ছে পয়জেনাস পার্টি। প্রয়োজন থেকে দূরে থাকতে গেলে আর নেই দরকার বিজেপি সরকার। দুটো ফেজে ওদের ফেস শুকিয়ে গেছে। অন্তত একবার তৃণমূলকে ভোট দিয়ে দেখুন তৃণমূল আপনাদের পাশে থাকে কি থাকে না।’