বিস্ফোরক অভিষেক, এতদিন ম্যাচ ফিক্সিং শুনেছি এখন কোর্ট ফিক্সিং হচ্ছে
৩৬৫ দিন। এতদিন আমরা ম্যাচ ফিক্সিং, বেটিংয়ের কথা শুনেছি। এখন অর্ডার ফিক্সিং, কোর্ট ফিক্সিং হচ্ছে! বেটিংয়ে নয়া মাত্রা যোগ করছে কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারকের আসনে থাকা কিছু বিচারপতি বিজেপির যোগসাজশে তাঁদের কথা মতো রায় দিচ্ছে। এখন সেটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের প্রায় ২৬০০০ চাকুরিরতের চাকরি খ ারিজ করার নির্দেশের প্রেক্ষিতে এভাবেই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ পুরুলিয়ায় নির্বাচনী জনসভার পরে অভিষেক এসএসসি মামলায় কিভাবে ভাজপা নেতাদের কথা এর রায় দিয়েছেন বিচারপতিরা তার ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, এই রায়ের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিজেপির ছাপ রয়েছে। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, ভূ-ভারতের ইতিহাসে এমন রায় নেই। আদালতের যুক্তি ধরে নিলে তো কলকাতা হাইকোর্টও তুলে দিতে হবে! কিছু অযোগ্যর জন্য হাজার হাজার যোগ্যকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা যদি ঠিক কাজ হয়, তাহলে হাইকোর্টের যুক্তি ধরেই বলতে হয়, কলকাতা হাইকোর্টের সব বিচারপতি তাহলে বিজেপি! কলকাতা হাইকোর্টটাকেই তুলে দেওয়া উচিত। কলকাতা হাইকোর্টের সমস্ত বিচারপতিকে কেন ভাজপা নেতা বলে অভিষেক আক্রমণ করেছেন তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন নিজেই। এই প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, অভিষেক আরও বলেন, ১০০০-১৫০০ প্যানেলের বাইরে চাকরি পেলেও পুরো প্যানেল বাদ। তাহলে আদালতের যুক্তি মেনে যদি বলা হয়, ওই বিচারপতি বিজেপি-তে গিয়ে থাকলে বাকি বিচারপতিরাও বিজেপি! আমি তা বলছি না। কিন্তু আপনাদের যুক্তি ধরলে তো তাই হয়! বিচারপতি বলেছেন, সব চাকরি বাতিল। তার দু’দিন আগে বিজেপি-র নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন সপ্তাহের শুরুতে বিস্ফোরণ ঘটবে। সোমবার ওই রায় এল। এটা কি কাকতালীয়? সাধারণ মানুষের কাছে শুধু এই প্রশ্ন তুলছি। ২৫ হাজার যোগ্য লোকের চাকরি কেড়ে নিল আদালত। আদালতের তর্কই যদি ধরি, সেক্ষেত্রে একজন বিচারপতি, বিচারপতি থাকাকালীনই বলেছেন, তিনি বিজেপি-কে অ্যাপ্রোচ করেন, বিজেপি-ও তাঁকে অ্যাপ্রোচ করে। অর্থাৎ বিজেপি-র সঙ্গে যোগাযোগে ছিলেন উনি। সেই বিচারপতি যদি বিজেপি-তে যান, তাহলে ভারত থেকে কলকাতা হাইকোর্টটাকেই তুলে দেওয়া উচিত! তবে এর পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টের রায় প্রায় ২৬ হাজার চাকরিহারাদের উদ্দেশ্যে অভিষেক বলেন, ওরা প্রতিশোধ নিয়েছে। আপনারা ভেঙে পড়বেন না। যোগ্য চাকরিহারাদের পাশে সরকার ছিল, এখনও আছে। এর পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারী যেমন গত সপ্তাহে প্রকাশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন চলতি সপ্তাহের প্রথমেই বোমা ফাটবে এবং তারপরেই কলকাতা হাইকোর্ট ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীর চাকরি বাতিল করেছে সেই ঘটনার রেস টেনে বাঁকুড়ার ওন্দার ভাজপা বিধায়ক অমরনাথ শাখাও ফের চাকরি নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সামনের ৩০ এপ্রিল আরও ৫৯ হাজার চাকরি যাবে বলে ঘোষণা করেছেন তিনি। সেই নিয়ে অভিষেকের বক্তব্য, অমর শাখা বলেছেন, এই তো সবে শুরু। ৩০ তারিখের মধ্যে আরও ৫৯ হাজার চাকরি যাবে। যাঁদের চাকরি গিয়েছে, তাঁদের অনুরোধ করব, আপনারা বিব্রত, বিরত হবেন না। দলগত ভাবে তৃণমূল সর্বশক্তি দিয়ে আপনাদের পাশে আছে, থাকবে। কারও চাকরি যেতে দেব না আমরা। বিশেষ করে যাঁরা মেধাযুক্ত, যাঁদের চাকরির প্রয়োজন, কষ্ট করে মেধার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছেন, আজ প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য। এই যে কোর্টের রায়, তার রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিজেপি-র স্ট্যাম্প।