কলকাতায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর স্বামী, অর্থনীতিবিদ প্রভাকর
৩৬৫ দিন। দেশে ভাজপার নেতৃত্বে যে সরকার চলছে তাতে যে কোনো সময়ে যা কিছু হতে পারে। বস্তুত নতুন ভারত তৈরীর লক্ষ্যে মোদী সরকার অর্থনৈতিক লুঠপাট ও মিথ্যার বেসাতি খুলে বসেছে। এর ফলে দেশের যে ছবি দেখানো হচ্ছে তা মোটেও আসল ছবি নয়। এই কথা যিনি বলছেন তিনি আর কেউ নন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ পরকলা প্রভাকর।তার আরেকটি পরিচয় আছে তা হলো তিনি দেশের ভাজপা সরকারের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামানের স্বামী ।মঙ্গলবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে তার বই, দি ভ্রুকেড টিম্বার অফ নিউ ইন্ডিয়া এসেস এর উদ্বোধনে এসেই তিনি মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার এর অভিযোগ তোলেন। বইপ্রকাশের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে প্রাক্তন উপাচার্যদের সংগঠন সেভ এডুকেশন ফোরাম ও ওয়েবকুপা।
মিথ্যে অর্থনৈতিক ন্যারেটিভ
মোদী আমলে ১৪০ কোটি জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশ ব্যক্তির হাতে অর্থনীতির ২২ শতাংশ রয়েছে ও তাদের হাতেই দেশের ৪০ শতাংশ অর্থ রয়েছে। শুধু তাই নয় দেশের বেকারত্ব প্রায় ২৪ শতাংশ যা বাংলাদেশের ও দ্বিগুন। পারকোলা বলেন এই বেকারত্বর হার ইরান , লেবানন সিরিয়ার মতো দেশের সঙ্গে তুলনীয়। শুধু তাই নয় জিডিপির বৃদ্ধির হার আসন হার ৪শতাংশের নিচে যদিও মোদী সরকার তা ডু এর কাছাকাছি বলে প্রচার করে। তিনি বলেন এদিন ৮১ কোটি মানুষের জন্য রেশন দেওয়া হয়েছে আগামী ৫ বছরের জন্য। তাহলে মোদী সরকার কি করে বলে গরিবি কমছে ১.১ শতাংশ হারে। ফলে এই রকম নানা মিথ্যা তথ্য দিয়ে কেল্লা ফতেকরার চেষ্টা করছে মোদী সরকার।
ধর্মের রাজনীতি
এদেশের রাজনীতির মধ্যে ধর্ম প্রথম থেকেই ছিল। কিন্তু রাজনীতিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে মোদী সরকার। ধর্ম ব্যক্তিগত বিষয়। সেটিকে সফলভাবে পাবলিক বিষয় করে তুলে অস্ত্রের মতো ব্যবহার করা হচ্ছে বিরোধীদের বিরুদ্ধে। নিজেদের তারা রাজনৈতিক ভগবান করে তুলেছে তারা। এর জন্য তারা সংবিধানের পক্ষে বিপজনক হয়ে উঠেছে।
ভোটে বিজেপি আতঙ্কগ্রস্থ
গোটা দেশ থেকে যে রিপোর্ট পাচ্ছি তাতে লোকসভার দুই দফার ভোটে পর বিজেপির অবস্থা ভালো নয়। আমি হয়তো ভুল হতে পারি, কিন্তু বিজেপিকে দেখে মনে হচ্ছে, ওরা ভোটে পরাজয়ের আশঙ্কায় আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে গেছে।দেশের গণতন্ত্র, সংবিধান, অর্থনীতি এখন মহাসংকটে। তাই এই ভোটে আপনারা যদি সঠিক সিদ্ধান্ত না নেন, মনে রাখবেন ভবিষ্যতে হয়তো দেশে আর ভোেট নাও হতে পারে। মনিপুরের মতো ঘটনা ভবিষ্যতে দেশের যেকোনো রাজ্যে হতে পারে।
নির্বাচন কমিশন
নির্বাচন কমিশন এর আইনে পরিবর্তন ঘটিয়ে কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের মুখ্য বিচারপতিকে সরিয়ে দিয়েছে। ফলে এখ ন সেটি সরকারি সংস্থায় রূপান্তরিত হয়ে গেছে। যার ফল স্বরূপ এতদিন নির্বাচন কমিশন কত ভোট পড়েছে তার হিসেবে দিতো। কিন্তু এবার থেকেই তা শুধু শতাংশের হিসেবে দেওয়া শুরু করলো তারা। তার ফলে ঠিক কত ভোট পড়ছে তার সংখ্যায় একটি কারচুপি করার জায়গা থেকে যায়।
ধর্ম ও নাগরিকত্ব
ক্যা ও এন আর সি তে নাগরিকত্ব ও ধর্মকে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে সংবিধানকে সুচতুরভাবে বাইপাস করে তারা এই কাজ করেছে। আমার মনে হয় তারা যেভাবে এগোচ্ছে তাতে এটাতে সফল হলেই তারা দেশেও এই ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্বর দিয়ে এগোবে। প্রয়োজনে হয়তো তারা সংবিধান সংশোধনও করে নেবে। নির্বাচনে জিতলে হয়তো সেই দিকেই এগোবে এরা।
এছাড়াও সভায় উচ্চশিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন মোদী আসলে একজন পানিকেড ব্যক্তি। এই নিয়ে তিনি একটি গল্পও বলেন। ফলে এখন আমরা ঠিক করবো আমাদের কোনপথে চলতে হবে। ব্রাত্য ছাড়াও জহর সরকারও এদিন নানান পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানান কিভাবে দেশ ও জনগণকে ভুলপথে চালিত করার জন্য ভাজপা ও তাদের। রাজনৈতিক সঙ্গীরা কাজ করছেন। এদিন তিনি ভাজপার সঙ্গে আম্বানি , আদানি যোগের প্রসঙ্গও তুলে ধরেন তারা।