রাজভবনে শ্লীলতাহানি প্রসঙ্গে মোদিকে প্রশ্ন মমতার
৩৬৫ দিন। বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এর বিরুদ্ধে যে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলেছেন রাজভবনের এক কর্মচারী, এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা। এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুক্রবার বাংলায় প্রচার করতে এসে একটিবারও এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেন না সে বিষয়েও মোদির তীব্র সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে বাংলা থেকে যাওয়া পুলিশকর্মীদের ব্যালট ভোট দিতে দিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন, এই বিষয়টি নিয়েও আন্দোলনে নামার হুমকি দেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী কেন রায়বেরেলী থেকে দাঁড়াতে গেলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই জিজ্ঞাসার কড়া
সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন রায়নার জনসভার পর পূর্বস্থলী দক্ষিণেও তৃণমূল প্রার্থী ডক্টর শর্মিলা সরকার এর সমর্থনে জনসভা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গ রাজভবন
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল একটা ছোট্ট মেয়ে রাজভবনে চাকরি করতো। তার সঙ্গে কী ব্যবহার করেছেন মাননীয় রাজ্যপাল মহাশয়! আমার কাছে একটা নয় হাজারটা ঘটনা এসেছে কিন্তু আমি কোনদিন কোন কথা বলিনি। কিন্তু কালকে মেয়েটির কান্না দেখে আমার হৃদয়বিদারক হয়েছে। সন্দেশখালি বলবার আগে আগে রাজ্যপাল কে জিজ্ঞাসা করুন কেন তার ঘরে কাজ করে বলে, মেদিনীপুর পূর্বে একটি মেয়েকে একবার নয় পরপর দুবার মলেস্টেশন করেছেন। আমি মেয়েটির কান্না দেখেছি। সেখানেই তো আপনি কাল থেকে এলেন। কই একটা কথা মুখ দিয়ে তো বললেন না। মেয়েটা বলেছে আর আমি রাজভবনে চাকরি করতে যাব না। ভয় পাচ্ছে কখন ডেকে খারাপ ব্যবহার করবে, অসম্মান করবে। আর আপনি মা-বোনেদের নিয়ে কথা বলেন আপনার লজ্জা নেই। আপনার তো দাঁতের পাটি টাই খুলে যাওয়া উচিত মিথ্যে কথা বলার জন্য। সন্দেশখালিতে সন্দেশ নিয়ে বেড়াচ্ছেন। আমি সন্দেশখ ালিতে এমন কোন ঘটনা ঘটতে দিইনি, ওদের জমি জমা নিয়ে কিছু সমস্যা ছিল আমরা অফিসার পাঠিয়ে সেগুলো ঠিক করে দিয়েছি।’ বাংলার পুলিশ কর্মচারীদের ব্যালট ভোট দিতে দেওয়া হচ্ছে না
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘বাংলা থেকে নির্বাচন কমিশন ১৫০০ পুলিশ কে নিয়ে গেছে। আমাদের রাজ্যে অন্য রাজ্য থেকে আসেনি শুধু কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া। কিন্তু যে ১৫০০ পুলিশ গেছেন তাদের কাউকে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। রাজ্য সরকারের কর্মচারীরা কেন পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন না আমি জানতে চাই। হয় ওদের ভোট দেওয়ার অধিকার দিন, না হলে আমরা ওদের উইথড্র করে নিয়ে আসবো আপনি যা পারবেন করে নেবেন। বিজেপির কথায় আপনি বিএসএফকে অ্যালাও করছেন। তাহলে আমাদের পুলিশরা যারা অন্য রাজ্যে ভোট করতে গেছে তাদের কেন পোস্টাল ব্যালট দেবেন না। গণতন্ত্রকে শ্মশানের কারাগার বানিয়ে দিয়েছেন। কার হয়ে ভোট করছেন ইলেকশন কমিশন? প্রধানমন্ত্রী আপনি তো একটি কথাও বলছেন না। আমার সরকারি কর্মচারীরা যদি ভোটাধিকার না পায় যতদূর এটা নিয়ে লড়াই করার আছে আমরা লড়াই করব। আইনে কখনো ডিসক্রিমিনেশন হয় না। এবারের বিভিন্ন রাজনৈতিক বন্দী করবার জন্য আমি দুঃখিত নির্বাচন কমিশন কে হাতিয়ার করে, নির্বাচন কমিশন বিজেপিরই লোক, বিজেপি অফিস থেকে যা তৈরি করে দিচ্ছে, তাই তারা করছে। ইজ মাস্টার্স ভয়েস। হয় ওদের ভোট দেওয়ার অধিকার দিন, না হলে আমরা ওদের উইথড্র করে নিয়ে আসবো আপনি যা পারবেন করে নেবেন। বিজেপির কথায় আপনি বিএসএফকে অ্যালাও করছেন। তাহলে আমাদের পুলিশরা যারা অন্য রাজ্যে ভোট করতে
গেছে তাদের কেন পোস্টাল ব্যালট দেবেন না।’ রাহুল গান্ধী কেন রায়বেরেলি থেকে দাঁড়াতে গেল
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উনি আজকে বলছেন রাহুল গান্ধী কেন রায়বেরেলিতে দাঁড়াতে গেল। বেশ করেছে দাঁড়িয়েছে। তার অধিকার আছে সে দাঁড়িয়েছে তোমার কি? তুমিও এক সময় দুটো সিটে দাড়িয়েছো বা তোমার দলের অন্য কেউ দাঁড়িয়েছে। কাজ নেই কর্ম নেই কোনটা বলা উচিত কোনটা বলা উচিত না একটা প্রধানমন্ত্রী তার সামান্য জ্ঞান নেই।’
দেবের হেলিকপ্টারে আগুন
এদিন জনসভা থেকে ফেরার পথে তৃণমূল প্রার্থী দেবের হেলিকপ্টারে আগুন লেগে যায়। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমে যখন উঠেছিল তখন হেলিকপ্টার থেকে ধোয়া ধোয়া গন্ধ বেরোচ্ছিল। কিন্তু আকাশে উড়ে গিয়ে দেখে প্রায় আগুন লেগে যেতে গিয়ে বেঁচে যায়। ইমারজেন্সি ল্যান্ডিং করে দেবের হেলিকপ্টার। আমি তাই নিয়ে খুব চিন্তায় ছিলাম। ওর সঙ্গে আমি কথাও বলেছি ফোনে। বিজেপির আমলে কাউকে ভালো থাকতে দেবেনা, নিজেদের ভালো থাকতে হবে।’
বিজেপি ২৬০০০ শিক্ষকের চাকরি খেয়েছে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্য সরকার কোর্টে অলরেডি উকিল দিয়েছে। আমরা কোর্টে কেস লড়ছি। এডুকেশন ডিপার্টমেন্টও দিয়েছে। আমরা শিক্ষক শিক্ষিকাদের চাকরি খেতে দেব না। জীবন দিয়ে লড়াই করব। কোথায় ছিলেন মোদি বাবু ২৬ হাজার চাকরি তো আপনার দল খে য়েছে। আপনার দল পার্টি ছিল সিপিএমকে টাকা দিয়ে দাঁড় করিয়েছে। সিপিএম আর বিজেপি একসাথে শিক্ষকদের চাকরি খেয়েছে। ত্রিপুরায় দশ হাজার টিচার দের চাকরি বাতিল হয়ে গিয়েছিল সিপিএম আমলে আপনারা বলেছিলেন আমরা ফিরে এসে চাকরি দেবো। আজ পর্যন্ত করেননি। নির্বাচন আসলে মনে পড়ে।আমরা সুপ্রিম কোর্টে গেছি, আশা করি বিচার পাবো। আপনাকে আর ঢং করতে হবে না। আপনি চাকরি খেয়েছেন।’
আত্মপ্রচারের লোভে সিনেমা পর্যন্ত বানিয়েছে
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এত আত্মপ্রচারের লোভ একটা লোক নিজের প্রচারের জন্য সিনেমা পর্যন্ত বানিয়েছে। কি না করেছে?’ আইএএস, আইপিএসদের ফোন মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘বিজেপি শাসিত মুখ্যমন্ত্রীদের দিয়ে আইএ এস, আইপিএস দের ফোন করাচ্ছে। ফোন করে বলছেন তৃণমূলের থেকে দূরে থাকুন বিজেপির সঙ্গে থাকুন।’
মধু বিধু দুই ভাই
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গত দুটো নির্বাচন হয়ে গেছে পুরো বুজরুকীর খেলা হয়েছে। মধুবিধু দুই ভাই আপনারা তাহলে দাঙ্গা করছেন কেন ভয় দেখ াচ্ছেন কেন জেলে পুড়ছেন কেন। বিজেপি ফোন করে বলছে আপনি বিজেপির তরফে চলে আসুন। আমরা কেস তুলে নিচ্ছি। বিজেপি ফান্ডে মোদী ফান্ডে টাকা নিয়েছে আর সব ওষুধের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। শিল্পপতিদের হুমকি দিচ্ছে এবং তারপর তার থেকে বন্ডে টাকা নিয়ে নিচ্ছে। নিজের অধিকার চান তাহলে চোর ডাকাত মধুবিধু দের দূর করুন। ওদের ভোট না দিয়ে ওদের করে দিন স্তব্ধ। তবেই ওদের বিচার হবে।’
বোলপুরে রাঙা বিতান টু হচ্ছে
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বোলপুরে রাঙা বিতান টু হচ্ছে বাউল বিতান টু হচ্ছে।। সার্কিট হাউজ কেউ উন্নয়ন করা হচ্ছে।’