সন্দেশখালি স্টিং অপারেশন মমতার তীব্র ধিক্কার
৩৬৫ দিন। সন্দেশখালিতে বিজেপি পরিকল্পিতভাবে যে সন্ত্রাস তৈরি। করেছিল তা একটি স্টিং অপারেশনের মাধ্যমে প্রকাশ্যে এসেছে। শনিবার সন্দেশখালির পরিকল্পিত নাটকের তীব্র সমালোচনা করেন। মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে বাংলায় এনআরসি, ক্যা, ইউনিফর্ম সিভিল কোর্ট হবে না বলেও ঘোষণা করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন নদীয়ার চাকদা এবং রানাঘাট উত্তর-পশ্চিমে দলীয় প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারীর হয়ে সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
সন্দেশখালির নাটক
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সন্দেশখালি নিয়ে ভালো নাটক তৈরি করেছিলেন। আসল তথ্য ফাঁস হয়ে গেছে। আমি অনেকদিন ধরেই আপনাদের বলছিলাম এটা পরিকল্পনা করে করা হয়েছে। বিজেপির তৈরি করা নাটক। ক’দিন ধরে খুব সন্দেশখালির সন্দেশ দেখাচ্ছিল। আজ বেরিয়ে গেছে কলসি ফুটো হয়ে গেছে। পরিকল্পনা করে দাঙ্গা করার ওদের জুড়ি কেউ নেই।’
যা সিপিএম তাহাই বিজেপি
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘খুন করে ওরা নদীতে ভাসিয়ে দেবে। যা সিপিএম তাহাই বিজেপি।সিপিএমের হার্মাদ গুলো বিজেপিতে এসে ঢুকেছে।’
ওয়াশিং মেশিন ভাজপা
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘ওয়াশিং মেশিন ভাজপা। সিবিআই থেকে বাঁচতে চাও বাজ পায়ে চলে যাও। ইনকাম ট্যাক্স থেকে বাঁচতে চাও বাজ পায় মাথা গলাও। মুকুটমণিদের সাহস আছে এরা এইসব কাজ করেনি বলেই বাজপা ছেড়ে তৃণমূলে এসেছে।’
বাংলায় বিজেপি মতুয়াদের ঠকিয়ে যাচ্ছে
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিজেপি মতুয়াদের ঠকিয়ে যাচ্ছে। ২০১৪ এ বলল মতুয়া ভোট দাও তোমাদের নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দেবো। ২০১৯ বলল মতুয়া ভোট দাও তোমাদের নাগরিকত্ব দেবো। ২০২১ বলল মতুয়া। ভোট দাও আমরা তোমাদেরকে ক্যা করে দেবো। ২০২৪ একটা ক্যা নোটিফিকেশন করেছে কেউ যায়নি যে যাবে সঙ্গে সঙ্গে বিদেশি হয়ে যাবে। আপনাদের বিদেশি করার পরিকল্পনা। লজ্জা থাকলে বলতাম। যাও দড়ি আর কলসি দিলাম গিয়ে জল তুলে নিয়ে এসো। বড় মার চিকিৎসা আমি করিয়েছি বরাবর। কেউ খোঁজ রাখত না কেউ জানতো না। বড় মাকে আমরা বঙ্গ বিভূষণ দিয়েছিলাম বাংলার সব থেকে বড় সম্মান। আপনাদের কোন অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। তাই আমাদের গালাগালি দেয় আমাদের টাকা বন্ধ করে দেয় আমাদের কিছু যায় আসে না। আমি যখন বলছি এন আর সি করতে দেবো না তো দেব না। ক্যা হবে না। নিঃশর্ত নাগরিকত্ব সবার চাই কারণ আমরা সবাই নাগরিকা’
নরেন্দ্র মোদি ফুটো ভরা গ্যাস বেলুন
মুখ্যমন্ত্রী বলেন,’ নরেন্দ্র মোদি ফুটো ভরা গ্যাশ বেলুন। মিথ্যে কথা। বলে রোজ প্রচার করছে। বিনা পয়সায় গ্যাস দিচ্ছি বিনা পয়সায় বিদ্যুৎ দিচ্ছি। বিনা পয়সায় রেশন দিচ্ছি। গ্যাস বেলুন। আপনি নির্বাচনের। ি সময় হরিচাঁদ ঠাকুর করেন আর নির্বাচন হয়ে গেলে পাত্তাও দেন না। কিন্তু আমরা ৩৬৫ দিন ওদের সাথে আছি।’
ধর্ম নিয়ে চ্যালেঞ্জ
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘একদিন দাঁড়াবি মানুষের সামনে। দুদিকে দুটো স্টেজ থাকবে। তুমি না দেখে বলবে আমিও না দেখে বলব। রামকৃষ্ণ কি তোমাকে ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দেব। হিন্দু ধর্মের তুমি কিছু জানোনা। চ্যালেঞ্জ রইল।চ্যালেঞ্জ করছি, আমি যা মন্ত্র জানি তুমি তার এক কণাও জানোনা। ওনারা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কে অসম্মান করেন। মা দুর্গা কে চেনেন না। মাড়িটা চলে যাওয়া উচিত দাঁতের এত মিথ্যে কথা বলে। মধু বিধু দুই ভাই ওদের আপনারা বিদায় দিন। আমরা এইসব আইন তুলে ফেলে দেবো।’
বিজেপি দশ বছরের কৈফিয়ৎ দাও কি করেছ?
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কৈফিয়ৎ দাও গত ১০ বছরে বিজেপি কি করেছো। কিচ্ছু করেনি। একটা বাচ্চা ছেলে মিথ্যা কথা বললে মা তাকে টেনে দিল থাপ্পড় মারে। একজন প্রধানমন্ত্রী টানা মিথ্যা কথা বলে গেলে কি বলতে হয়? নরেন্দ্র মোদি সরকারকে আর আনবেন না দয়া করে। কোন কথা রাখেনি।’
প্রসঙ্গ রাজ্যপাল
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কেন্দ্রের প্রতিনিধি মাননীয় রাজ্যপাল দেখছেন তার কীর্তি কারখানা। রাজভবনের কর্মচারীদের সঙ্গে কি কাণ্ড করছে। মেয়েদের ডেকে নিয়ে গিয়ে মলেস্টেশন করছে। আর প্রধানমন্ত্রী তার বাড়িতে রাত্রি যাপন করে চলে গেলেন। যিনি সন্দেশখালি নিয়ে বড় বড় সন্দেশ দেন কই রাজ্যপালের ব্যাপারে তো একটা সন্দেশ দিলেন না।’
রানাঘাটের বিজেপি প্রার্থী
রানাঘাটের বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকারের নাম না করে এদিন মুখ ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখানকার বিজেপির প্রার্থী কে নিয়ে অনেক আগেই অনেক ছবি পেয়েছিলাম। কিন্তু আমি বিজেপির মত নোংরা রাজনীতি করি না। তাই সেই ছবিগুলো বাইরে আমি কখনো নিয়ে আসিনি। ছবি বেরিয়ে গেলেই বুঝবেন সব উধাও হয়ে গেছে। আপনার জগন্নাথ আপনাদের এখানকার প্রার্থী। একটু সন্দেশ দিতে পারলেন না খোঁজ নেননি কি করে। সবাই জানে লোকাল লোক জানে আর আমরা জানি না। কেন মুকুটমনি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে চলে এলো ওরা সবাই জানে এই ঘটনা। এদের ভোটে দাঁড়ানোর মতো অধিকার আছে, না ক্ষমতা আছে।’
বিজেপির গ্যারান্টি শূন্য
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘তৃণমূল যে প্রতিশ্রুতি দেয় ১০০ শতাংশ করে। বিজেপির গ্যারান্টি শুন্য। মানুষের কাছে ওদের কথার কোন মূল্য নেই। নরেন্দ্র মোদি সরকারকে আর আনবেন না।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইতিমধ্যেই ৪২ হাজার উদ্বাস্তু পরিবারকে আমরা জমির দলিল দিয়েছি। আগামী দিনে কেউ উদ্বাস্তু থাকবেন না। নরেন্দ্র মোদি সরকারকে আর আনবেন না দয়া করে। কোন কথা রাখেনি। একটা বাচ্চা ছেলে মিথ্যা কথা বললে মা তাকে টেনে দিল থাপ্পড় মারে। একজন প্রধানমন্ত্রী টানা মিথ্যা কথা বলে গেলে কি বলতে হয়? এরা বাঙালি বিদ্বেষী। বাংলাকে পছন্দ করে না।’
রাজ্যের উন্নয়ন
রাজ্যের উন্নয়ন সম্পর্কে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই এইমস দেখছেন এর জন্য ১৮০ একর জমি বিনা পয়সায় আমরা দিয়েছি। ৩০০ কোটি টাকা বাংলার সরকার খরচ করেছে। পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য। বাংলার সব ব্লক এ ব্লকে একটা করে বাংলার শাড়ির দোকান খুলবো। তাঁত শিল্প হয়েছে। তাঁতিদের হাতে বোনাস শাড়ি সেখানে বিক্রি হবে। যদি কেউ ফ্রাঞ্চাইজি নিতে চান আমার কোন আপত্তি নেই। মায়াপুরে ইসকন কে ৭০০ একর জমি দিয়েছি। বিরাট তীর্থ শহর তৈরি হচ্ছে সেখানে। যেখানে অনেক চাকরি-বাকরি হবে। হরিণঘাটায় ফ্লিপকার্ট হাব তৈরি করা হয়েছে। ১১০০ কোটি টাকা দিয়ে আমরা একটা ব্রিজ তৈরি করছি কালনা থেকে শান্তিপুর পর্যন্ত।’
প্রসঙ্গ চূর্ণী নদী
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মুকুটমণির সঙ্গে সহমত, আজকে চূর্ণী নদীতে যে নোংরাটা আসে কেন ভারত সরকার সেটা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলবে না। আমিতো নিজে অনেকবার বলেছি। আত্রায়ী নদীর ওখানে পানীয় জল পায় না. কেন বিচার হবে না।’ প্রার্থীদের নজর রাখতে হবে
মুখ্যমন্ত্রী সতর্কবার্তা, ‘তামিলনাড়ুতে আধঘণ্টার জন্য সিসিটিভি মেশিন বন্ধ হয়ে গেছে। এগুলো প্রার্থীদের মনে করে রাখা উচিত। ১৯ লক্ষ ইভিএম মেশিনের কোন হিসেব নেই। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। সব বিচারের জায়গায় এ দেশে বন্ধ। সব এজেন্সিকে কিনে নিয়েছে। তাই লক্ষ্য নিজেদেরই রাখতে হবে।’