বীরভূম লোকসভার পরিবর্তিত বিজেপির প্রার্থী দেবতনু ভট্টাচার্য
ভাজপা শেষমুহূর্তে বিকল্প প্রার্থী সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ
৩৬৫দিন। আশঙ্কাই সত্যি হলো। বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দেবাশীষ দলের প্রার্থী পদ খারিজ হয়ে গেল নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্বাচনী হলফনামায় যে যে তথ্য দিয়েছেন সেখানে বেশ কিছু ত্রুটি ধরা পড়েছে, সেই ত্রুটির কারণেই তার প্রার্থী পথ বাতিল হয়ে গেল। এই দেবাশীষ ধরে বিরুদ্ধেই একাধিক অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। পদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূমে নির্বাচনের প্রচারে এসে বিজেপি প্রার্থী দেবাশীষ ধর কে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন। গত বিধানসভা নির্বাচনের কুচবিহার জেলার পুলিশ সুপারের দায়িত্বে থাকাকালীন শীতলকুচিতে চারজন সংখ্যালঘু মানুষ ও একজন রাজবংশী মানুষকে গুলি করে খুন করার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অভিযোগ তোলার পর এই কার্যত বেশ খানিকটা ব্যাক ফুটে চলে যায় বিজেপি। বিজেপি জেলা নেতৃত্ব বুঝতে পারে তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক অভিযোগ বিপাকে ফেলতে পারে দেবাশীষ ধর কে, সেই কারণেই তড়িঘড়ি বৃহস্পতিবার বীরভূম জেলার বাইরে থেকে আরএসএস ঘনিষ্ঠ দেবতনু ভট্টাচার্য কে মনোনয়নপত্র জমা দিতে বলা হয়। সিউড়িতে জেলাশাসকের দফতরে মনোনয়ন জমা দেন দেবতনু।পরে বাইরে বেরিয়ে এসে তিনি জানান, দলই তাঁকে মনোনয়ন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। বিজেপি সূত্রে দাবি করা হয়েছিল, দেবাশিসের প্রার্থিপদ নিয়ে কিছু সমস্যা রয়েছে। মূলত নথিপত্র সংক্রান্ত সমস্যা। সেই কারণেই বিকল্প হিসাবে দেবতনুর নাম ভাবা হয়েছে।
সূত্রের খবর, দেবাশিস ধরের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের বিভাগীয় তদন্ত চলছে। পাশাপাশি তিনি ইস্তফা দিলেও নবান্ন থেকে এখনও তাকে রিলিজ দেয়নি। গত বিধানসভা ভোটে কোচবিহারে শীতলখুচি এলাকায় গুলি চলার সময়ে সেখানে পুলিশ সুপার ছিলেন দেবাশিস। তারপর তাঁকে সরিয়ে দেয় নবান্ন। কম্পালসারি ওয়েটিংয়ে রাখা হয়েছিল তাঁকে। এবারের লোকসভা ভোটের দিন ঘোষণার পরেই বিজেপি তাঁকে প্রার্থী করতে পারে বলে জল্পনা শুরু হয়েছিল। সেই জল্পনার মধ্যে তিনি পুলিশের চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। তাঁর ইস্তফা গ্রহণ করেনি নবান্ন। যদিও এই পরিস্থিতিতেও বিজেপি তাঁকে প্রার্থী করে। বীরভূমের মাটিতে নিজেদের লড়াই শক্ত করতে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না পদ্মশিবির। বিকল্প হিসেবে তাই দেবতনু ভট্টাচার্যকেও প্রার্থী বলে ঘোষণা করল তারা। বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী শতাব্দি রায় এই প্রসঙ্গে বলেছেন, দেবাশীষ ধর বিজেপি টিকিটের প্রার্থী হওয়ার প্রথম দিন থেকেই জটিলতা তৈরি হয়েছিল। উনি আমার বিরোধী হলেও আমার খারাপ লাগছে, কারণ একটা মানুষ যখন কোন দলের প্রার্থী হয় নির্বাচনে লড়াই করার জন্য তখন সে মানসিকভাবে একটা প্রস্তুতি নেষ। তুমি প্রচারে বেরিয়ে শতাব্দীরাই কি করেছে শুধু এটুকু বলতেই ব্যস্ত ছিল, মানুষের জন্য কি করবেন সেটা একবারও বলেনি, তবে এটা সত্যি, উনি নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তৃণমূল কংগ্রেস জিততো, উনি নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করলেও তৃণমূল কংগ্রেস জিতবে।