হিঙ্গলগঞ্জে ভাজপা নেতার বাড়িতে বিস্ফোরণ
৩৬৫ দিন। কাঁহি পে নিগাহে কাঁহি পে নিশানা। গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার লোকসভা ভোটের দ্বিতীয় দফার ভোট গ্রহণের দিনে যেখানে অধিকাংশ সর্বভারতীয় নিউজ চ্যানেলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে সিবিআই এবং এনএসজি কমান্ডোরা রীতিমতো সিনেমার শুটিংয়ের কায়দায় রোবটিক ভেহিকেল ব্যবহার করে একটা বাজার ব্যাগ আর গোটা কয়েক পেটো বোমা উদ্ধার করে দেশের কাছে বাংলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নগ্ন করতে ব্যস্ত ছিল তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হাসনাবাদে ভাজপা নেতার বাড়িতে জমিয়ে রাখা বোমা ফেটে আহত হল অসংখ্য মানুষ। ছোটমোটো নেতা বা ভাজপা সমর্থক নন, রীতিমতো নরেন্দ্র মোদির আশীর্বাদ ধন্য বলে নিজেকে দাবি করা বাংলায় একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ভাজপা প্রার্থী ছিলেন এই নিমাই দাস। যদিও আজ সকাল সকাল একুশের বিধানসভা নিয়ে প্রয়োজনে ভাজপা প্রার্থীর বাড়িতে জমিয়ে রাখা বোমা ফেটে এলাকার লোকজন আহত হওয়ার পরে সেটিকে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে বিস্ফোরণ বলে প্রমাণ করতে মাঠে নেমে পড়েছে বাংলার ভাজপা নেতৃত্ব। বিস্ফোরণের ঘটনার পর ওই ভাজপা নেতার বাড়ি থেকে অস্ত্র, বিস্ফোরক অন্যত্র সরানোর চেষ্টা হয়েছে বলেও অভিযোগ এনেছে তৃণমূল। আজ বেলা ১১টা নাগাদ বসিরহাটের হাসনাবাদের শিমুলিয়া কালীবাড়ি এলাকায় একটি বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ হয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই বিস্ফোরণটি হয়েছে ভাজপা নেতা নিমাই দাসের ভাইয়ের বাড়িতে। আচমকাই বিস্ফোরণের জেরে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। বিজেপি নেতৃত্বরা দাবি করেছেন, রান্নার গ্যাস থেকে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের হিঙ্গলগঞ্জের হাসনাবাদ পঞ্চায়েতে শিমুলিয়া কালীবাড়ি এলাকায় বিস্ফোরণে আহত হন কয়েকজন। এই ঘটনার কথা প্রকাশে আসার পরেই তৃণমূলের দলীয় মুখপাত্র কুণাল ঘোষ নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, বসিরহাটের অন্তর্ভুক্ত হিঙ্গলগঞ্জের হাসনাবাদ পঞ্চায়েতে বিজেপির নেতা নিমাই দাসের ভাইয়ের বাড়িতে মজুত রাখা বোমার বিস্ফোরণে গুরুতর আহত বাড়ির বাসিন্দারা। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ এই প্রবল গরমে মজুত করে রাখা অত বোমায় বিস্ফোরণের ফলেই এই মর্মান্তিক ঘটনা। পুলিস সত্যাসত্য দেখুক।
এনএসজি-র রোবটিক ডিভাইস কোথায় গেল?
গতকাল সন্দেশখালীর সরবেড়িয়াতে শেখ শাহজাহানের আত্মীয় বলে পরিচয় দিয়ে একজনের বাড়ি ঘিরে ফেলে সেখানে প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক আছে বলে দাবি করেছিল সিবিআই এবং এনএসজি। এলাকার ঘরবাড়ি ফাঁকা করে দিয়ে রোবটিকে ডিভাইস আনা হয়েছিল প্রচুর পরিমাণ বিস্ফোরক যেকোন মুহূর্তে ফেটে পড়তে পারে এমন গুজব বাজারে ছড়িয়ে। কিন্তু আজ যখন সত্যিই একই বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত হেঙ্গলগঞ্জে এক ভাজপা নেতার বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলো তখন ত্রিসীমানায় দেখা পাওয়া গেল না কোন কেন্দ্রীয় এজেন্সির গোয়েন্দা অথবা কমান্ডোদের। এরপরেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে গোটা ঘটনায়। কুণাল বলেন, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে বাংলার বিজেপি নেতারা নির্বাচনে হিংসাত্মক কার্যকলাপ ঘটানোর লক্ষ্যে প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র ও বোমা মজুত করছেন। নিমাই ঘোষ বিএল সন্তোষ, শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ। তাঁদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক।
তৃণমূলের দলীয় মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, এখানে এনআইএ বাহিনী কিংবা এনএসজির রোবোটিক ডিভাইস আসবে না বোমা উদ্ধার করস্রে? বিজেপির নেতা কর্মীরা বাড়ি ঘিরে রেখেছে প্রমাণ লোপাট করতে। অবিলম্বে প্রশাসন ঢুকে ব্যবস্থা নিক। অন্তত ধৃতরাষ্ট্রের ভূমিকায় নির্বাচন কমিশন
সরবেড়িয়াতে ভোট গ্রহণের দিনেই যেভাবে ভাজপা তাদের সমস্ত কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে মাঠে নামিয়ে তৃণমূল এবং তৃণমূল শাসিত বাংলার। সরকারকে কলঙ্কিত করতে মাঠে নেমেছিল তার প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই লিখিত অভিযোগ পত্র জমা পড়লেও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি জাতীয় নির্বাচন কমিশন। ঠিক একইভাবে নির্বাচনী আদর্শ আচরন বিধি চলাকালীন রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব যেহেতু জাতীয় নির্বাচন কমিশনের হাতে সেখানে এমন একটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলেও এনএসজি অথবা এনআইএ-র মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে তদন্তের জন্য কোন নির্দেশ দেয়নি নির্বাচন কমিশন।