মহিলা সাংসদদের চুলের মুঠি ধরে নিগ্রহ, ডেরেক সাকেতসহ অন্যানদের টেনে হিঁচড়ে আটক করা হল
৩৬৫দিন। তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের উপর আবারও নির্লজ্জভাবে পুলিশের অত্যাচারের সাক্ষী থাকল দিল্লি। লোকসভার মুখে সমস্ত নির্বাচনী আচরন বিধি লাটে তুলে দিয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সির অপব্যবহার করা হচ্ছে। এই অভিযোগ নিয়েই সোমবারই দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের সঙ্গে দেখা করে তৃণমূলের ১০ জনের প্রতিনিধি দল। নির্বাচন কমিশনের কাছে নিজেদের দাবি জানিয়ে বেরিয়ে আসার পর সাংবাদিক বৈঠক করে ৪ কেন্দ্রীয় এজেন্সির কর্তাকে সরানোর দাবিতে তৃণমূলের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল কমিশনের দপ্তরের বাইরে ২৪ ঘন্টার ধর্নায় বসে। ধরনায় বসা মাত্রই তৃণমূলের উপর নেমে আসে পুলিশের অত্যাচার।২৪ ঘন্টার আগে ধরনা না তোলায় রাজ্যসভার সাংসদ সাগরিকা ঘোষকে চুলের মুঠি ধরে টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয়। দোলা সেন, ডেরেক ও’ব্রায়েন, সাকেত গোখলেদের কার্যত চ্যাংদোলা করে বাসে তোলা হয়। বাকি তৃণমূল নেতাদেরও টেনে হিচড়ে বাসে তুলে দেওয়া হয়। এরপর দিল্লির নির্বাচন কমিশনের দপ্তর থেকে তাদের থানায় নিয়ে গিয়ে আটক করা হয়। বাসে চাপিয়ে তাদের মন্দিরমার্গ থানায় নিয়ে যায় দিল্লি পুলিশ। এদিকে, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে পুলিশি জুলুমের বিরোধিতায় সোমবার রাতেই রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়ে সময় চান অভিষেক। রাত ৯ টায় তৃণমূলকে সময় দেয় রাজভবন। এদিন বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ তৃণমূল প্রতিনিধি দলকে সাক্ষাতের জন্য সময় দিয়েছিল। কমিশনের সঙ্গে ১৫ থেকে ২০ মিনিট কথা হয় তাদের। এনআইএ, সিবিআই, ইডি এবং আয়কর দপ্তরের ডিরেক্টদের বদলের দাবি তোলে তৃণমূল।
এর পর বাইরে বেরিয়ে ২৪ ঘণ্টার ধরনা কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন দোলা সেন। ধরনায় বসার আগে দোলা সেন বলেন, মোদীবাবু, অমিত শাহ যদি মনে করে থাকেন সবই তাঁদের জমিদারি। যদি মনে করেন কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি বিজেপিরই একটি প্রতিষ্ঠান।তাহলে তাঁরা ভুল করছেন। আমরা সেটাই নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি। আমরা চাই নির্বাচন কমিশন সমান মাঠে খেলার ব্যবস্থা করুক।গ্রেপ্তারির পরে মন্দিরমার্গ থানার থেকে ডেরেকও ব্রায়েন বলেন, সাড়ে চারটের সময় আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করার পর আমরা কমিশনের অফিসের বাইরে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের তুলে নিয়ে আসে। প্রথমে বলে মন্দির মার্গ থানায় নিয়ে আসবে। তারপর এমন একটা জায়গায় নিয়ে আসে যেটা আমরা চিনি না। তারপর আমরা দশ জন মিলে প্রতিবাদ করায় আমাদের ৩০ মিনিট বাদে মন্দির মার্গ থানায় নিয়ে আসে। কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে দিয়ে গণতন্ত্রের খুন করা হচ্ছে। এনআইএ, ইডি , সিবিআই, এবং আয়কর ডিরেক্টরদের বদল করতে হবে এটাই আমাদের দাবি। ইতিমধ্যেই আমাদের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই রাজভবনে যাচ্ছেন, নেতা মন্ত্রীরা ও সঙ্গে আছেন। আমরা আমাদের ধরনা চালিয়ে যাব। সে থানার ভেতরেই হোক কিংবা বাইরে আমাদের বিক্ষোভ প্রতিবাদ চলবে। তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সদস্য শান্তনু সেন জানান, কৃষিভবনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল আজ। আমরা তো বলেছি, দেশজুড়ে জমিদারি রাজ চলছে। এদিন সেটাই আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল। রাত সাড়ে নটা বেজে গেলেও তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের ১০ জন সদস্যকে থানাতেই গ্রেফতার করে রেখে দেওয়া হয়েছে। এদিন প্রতিনিধি দলে ছিলেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন, সাংসদ মহম্মদ নাদিমুল হক, দোলা সেন, সাকেত গোখেল, সাগরিকা ঘোষ, বিধায়ক বিবেক গুপ্ত, প্রাক্তন সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেন, অর্পিতা ঘোষ, আবিররঞ্জন বিশ্বাস এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি সুদীপ রাহা।