বোলপুরে মমতার গর্জন
৩৬৫ দিন। তৃণমূল প্রার্থী অসিত কুমার মালের সমর্থনে আউসগ্রাম এ জনসভা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। গত ৩১ শে মার্চ থেকে তিনি প্রচার করে চলেছেন। তীব্র তাপ প্রবাহের হাত থেকে কিভাবে রেহাই পাওয়া যায় তারই টিপস দিলেন বাংলার মুখ ্যমন্ত্রী।
১) আদালত বিজেপির মহা তীর্থক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তৃণমূল নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, বিজেপি আদালতে আপিল করলে যা চাইবে তাই হবে আর অন্য কেউ যদি বিচার চায় তাদের জন্য দরজা বন্ধ। ডাকাত মাফিয়াদের বেল দেওয়া হচ্ছে। নাম না করে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী কে নিশানা করে বলেন, তার বিরুদ্ধে মার্ডার কেস থাকলেও তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।
ন
২) আদালতের নির্দেশে ২৬ হাজার শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল নিয়ে এদিনও তিনি সরব হন। বাংলায় কি সব স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে, শিক্ষকের চাকরি কি আর হবে নাএ প্রশ্ন তোলেন তিনি। বিজেপির উদ্দেশ্যে বলেন, চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা নেই, চাকরি কেড়ে নিতে পারে। হাইকোর্ট টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছে বিজেপি। সুপ্রিম কোর্টের কথা আমি বলছি না। সেখানে এখনও আমরা বিচারপ্রার্থী। কিন্তু হাই কোর্টে বিজেপি চাইলেই শুধু বিচার হয়। ওরা যা চায়, হয়ে যায়। আর কেউ বিচার পায় না। নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকেও কটাক্ষ করেন মমতা। বলেন, সবচেয়ে বড় গদ্দার যে, তার বিরুদ্ধে খুনের মামলা থাকলেও কোনও বিচার হয় না। তার জেল হয় না।
৩) বিচারকদের উদ্দেশ্যে বলেন সারা জীবন চাকরি করার পর যে সরকারি টাকা পেয়েছেন তা যদি ফেরত দিতে হয় বলা হয় তাকি তারা দিতে পারবেন?
৪. বিজেপিকে সন্তুষ্ট করার জন্য তিন মাস ধরে ইলেকশন কমিশন নির্বাচন করছে। আজকে হেলিকপ্টারের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের চলাফেরা করতে হয়। ৩১ মার্চ থেকে বাইরে পড়ে আছি। ওটার মধ্যে একবার বসে দেখুন, আগুন। বিজেপি যাতে একটা সিট না পায় তাই এই এত ঝরে এত গরমের মধ্যে ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছি। এক একটা সিট আমাদের চোখের মণির মতো রক্ষা করতে হবে। এই গরমে হেলিকপ্টারে যে এয়ার পকেট তৈরি হয় সেটা কাপতে কাপতে আসি আমরা। অনেক কষ্ট হয়।
৫) অনুব্রত মণ্ডলের প্রশংসায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধারে তিনি অনুব্রত মন্ডলকে ‘মাটির ছেলে’ বলেন। অন্যদিকে তিনি বললেন, অনুব্রত ছিলেন বড় মনের মানুষ। তাঁর কাছে হাত পাতলে কোনও গরীব মানুষ খালি হাতে ফিরতেন না। মাটির ছেলে কেষ্ট। আপনারা ওকে কত ভালোবাসতেন। – ওর কী অগুণ আছে জানি না। কেসে কী আছে জানি না। সেটা আইন আইনের পথে চলবে। কিন্তু একটাও গরীব লোক ওর সামনে দাঁড়ালে ও ফিরিয়ে দিত না। আউশগ্রামে বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অসিত মালের হয়ে জনসভায় ফের একবার কেষ্টর নাম উঠে এল তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের মুখে। তিনি বললেন, জেলাটা ছিল ওঁর হাতের মুঠোয়। আমি প্রশাসনিক রিভিউ মিটিংয়ে দেখতে পেতাম, ও কীভাবে কাজ করত।
৬) মমতার দাবি, প্রতি ইলেকশনে ওকে নজরবন্দি করে রাখ ত। যাতে ইলেকশনের দিন বেরতে না পারেন। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার বাড়িতে ইডি তল্লাশির কথাও বলেন তিনি। মমতার কটাক্ষ, চাঁদুর বাড়িতেও রেড করল। রেড করেই বলছে, হয় বিজেপিকে ভোেট দাও নাহলে ইডির কাছে যাও।
৭) এদিনও প্রধানমন্ত্রীকে তিনি প্রচার বাবু বলে কটাক্ষ করে বলেন, মিথ্যে প্রচার করে চলেছেন। জনগণকে মিথ্যে কথা বলে ভাঁওতা দিয়ে গরিবের পকেটে কেটে সেই টাকা দিয়ে নিজেদের প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি।
৮) ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার আগে নরেন্দ্র মোদির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রত্যেকের একাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে তার একটি টাকাও কেউ পায়নি। তিনি দাবি করেন, ন’কোটি মানুষকে বিনা পয়সার রেশন দেয় রাজ্য সরকার। কোভিডের সময় কেন্দ্রীয় সরকার একবার বিনা পয়সার আসন দিয়েছিল তারপর তা বন্ধ করে দিয়েছে।
৯) গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি জয়লাভ করেছিল। এবারে এত আসোন আর পাবে না। বিহার উত্তর প্রদেশ তেলেঙ্গানা ইত্যাদি রাজ্যে গতবারে তুলনায় বিজেপির আসন সংখ্যা কমবে।
১০) তৃণমূল নেত্রী বলেন কোনভাবেই এনআরসি করতে দেওয়া হবে না। বিজেপিকে হটানোর ডাক দিয়ে তিনি বলেন, বিজেপি মোদি সরকার ক্ষমতায় এলে না থাকবে ধর্মের ব্যবহার, মানুষের অধিকার, কথা বলার অধিকার, জীবন জীবিকার অধিকার কেড়ে নেবে। ইউনিফর্ম সিভিল কোড চালু হলে মানুষের ধর্ম বিক্রি হয়ে যাবে।
১১) মুখ্যমন্ত্রী এদিন অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকারের কাজ গুলো কেন্দ্রীয় সরকার করেছে বলে বিজেপি প্রচার চালাচ্ছে।
১২) মমতা বলেন, কোন দফতর কী ভাবে চাকরি দেয়, সেটা সেই দফতরের ব্যাপার। আমি তার মধ্যে ঢুকি না। কিন্তু ২৬ হাজার শিক্ষককে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। আবার বলা হয়েছে, সুদ-সহ বেতনও ফেরত দিতে হবে। এতে আমার খারাপ লেগেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তার হাতে ১০ লক্ষ সরকারি চাকরি আছে কিন্তু কোর্টে গেলেই আটকে দেওয়া হচ্ছে।