বামকে নওশাদের বিধ্বংসী আক্রমণ, আমায় ডায়মন্ড হারবারে ঠেলতে ওদের এতো আগ্রহ কেন?
ডায়মন্ড হারবারে নওশাদ নয়, আইএসএফ প্রার্থী মজনু
বাংলায় সিপিএম এবং কংগ্রেসের জন্যই জোট ভেসতে গেল, একাই লড়াই করবে আইএসএফ, সবাই শুধু আমাকেই ডায়মন্ড হারবারে ঠেলতে চাইছে – অভিযোগ নওশাদ সিদ্দিকীর
৩৬৫ দিন। বৃথা তর্জন গর্জনই সার। ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অহংকার দিয়েও লেজ গুটিয়ে পালালেন ভাইজান নওশাদ সিদ্দিকী। পাশাপাশি ডায়মন্ড হারবারে অভিষেকের বিরুদ্ধে কে প্রার্থী হবে সেই বিষয়ে কেউ এগিয়ে না আসায় লোকসভা নির্বাচনের আগেই ভেঙে গেল কংগ্রেস সিপিএম এবং আইএসএফের জোট। আজ আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী স্পষ্ট ঘোষণা করে দিলেন বামেদের সঙ্গে কোন জোট নেই। আমরা একাই লড়াই করব লোকসভা নির্বাচনে। সেইসঙ্গে ডায়মন্ড হারবার শহর রাজ্যের মোট পাঁচ লোকসভা কেন্দ্রে দ্বিতীয় দফায় প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দিল ভাইজানের দল আইএসএফ।
ভেস্তে গেল জোট
আজ একতরফাভাবে আইএসএফের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে নওশাদ সিদ্দিকী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন বাংলায় এবারের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস এবং সিপিএম তথা বামেদের সঙ্গে কোন জোটে নেই তাঁরা। নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, আসন সমঝোতা করতে করতে এখন শ্রীরামপুরে এসে দাঁড়িয়েছে। বামেরা যদি বলে সবটাই তুলে নিতে হবে, তাহলে আমাদের ৮ টাই তুলে নেওয়া দরকার। যোগ্যতা কি শুধু পড়াশোনা দিয়ে মূল্যায়ন হয়? যারা শ্রমজীবী, শ্রেণি সংগ্রামের কথা বলে, তাদের তো উচিত পিছনের সারি থেকে যারা উঠে আসছে তাদের জায়গা করে দেওয়া। জোট ভেঙে যাওয়ার জন্য সবথেকে বেশি দায় বামেরাই। কংগ্রেস প্রথম থেকে ভিলেন। জোট ভাঙার দায় নিতে হবে বামেদেরই।
প্রসঙ্গত গতকালও নওশাদ সিদ্দিকী সিপিএম এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণাত্মক সুরে জানিয়ে দিয়েছিলেন, সিপিএমের সঙ্গে জোট করে দাঁড়াব, বা সিপিএমের সমর্থন নিয়ে দাঁড়াব বা কংগ্রেসর সমর্থন নিয়ে দাঁড়াব, এটা বলিনি তো? কিন্তু ওনারা ডায়মন্ড হারবারকে নিয়ে সহমর্মিতা দেখাচ্ছেন, যে উদ্দীপনা দেখাচ্ছেন, বাকি ৪১ সিট নিয়ে দেখাচ্ছেন না কেন? শুধুমাত্র ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রে কী রসায়ন কাজ করছে? এটাও তো আমাদেরকে ভাবাচ্ছে। সিপিএম এবং কংগ্রস চায়নি। যদি ওরা চাইত, কংগ্রেস তো শুরু থেকেই চাইছে না।
ডায়মন্ড হারবারে প্রার্থী হলেন না নওশাদ
আজ রাজ্যের পাঁচ লোকসভা কেন্দ্র এবং ভগবানগোলা বিধানসভা উপনির্বাচনের জন্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট। তালিকায় আছে ডায়মন্ড হারবার। কিন্তু হুঙ্কারই সার। ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে শেষমেশ প্রার্থী হলেন না নওসাদ সিদ্দিকী। আইএসএফের পক্ষ থেকে আজ যে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে সেখানে জানানো হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ডায়মন্ড হারবারে আইএসএফ প্রার্থী হচ্ছেন মজনু লস্কর। পাশাপাশি বসিরহাটে আইএসএফ প্রার্থী হয়েছেন আখতার আলি বিশ্বাস। ব্যারাকপুরে প্রার্থী হয়েছেন জামির হোসেন। উলুবেড়িয়াতে আইএসএফ প্রার্থী মফিকুল ইসলাম। যাদবপুর প্রার্থী হয়েছেন নুর আলম খান আর ভগবানগোলার উপনির্বাচনে আইএসএফ প্রার্থী হয়েছেন মুর্শিদল আলম।
তবে যেভাবে গত কয়েক মাস ধরে অভিষেকের বিরুদ্ধে প্রার্থী হতে চাই বলে নওশাদ সিদ্দিকী বাজার গরম করার চেষ্টা করছিলেন এভাবে হঠাৎ করে পিছিয়ে এসে সম্পূর্ণ অপরিচিত মজনু লস্কর কে প্রার্থী করার পরে তীব্র ব্যঙ্গ করেছে তৃণমূল। তমলুক লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চেয়ে, নিজেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তারপর নিজেই সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়াকে নৌশাদ সিদ্দিকী বলে। এই জন্যই আমরা বলি, পান্তা ভাত খেয়ে বিরিয়ানির ঢেঁকুর তোলা উচিত না।