৩৬৫দিন। দুই শিশু সহ আহতদের দেখতে হাসপাতালে অভিষেক
ঝড়ে দুজন শিশু গুরুতর ভাবে চোট পেয়েছে মাথায়। রোহিত রায় এবং পিউ রায়, এই দুই শিশুকে প্রথমে জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর সেখান থেকে তাদের শিলিগুড়ির নিউরো সাইন্স হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী এই শিশু দুটির খবর নেন এবং অভিষেককে নির্দেশ দেন যাবতীয় চিকিৎসা যেন ঠিকঠাক হয় সে দিকটা দেখার। সেই অনুযায়ী সোমবার সকালে অভিষেক নিউরো সাইন্স হাসপাতালে যান। সেখানে গিয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। দুই শিশুর পরিবারের সঙ্গেও কথাবার্তা হয় অভিষেকের। এছাড়াও অন্যান্য আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করেন অভিষেক। অভিষেক বলেন, ‘এখানে এসে ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বললাম। যারা এখানে ভর্তি রয়েছেন তাদের ভাইটাল স্ট্যাটাস স্ট্যাবল রয়েছে। রোহিত এবং পিউ’র বাবা-মা সবাই দিন-আনি দিন খায়। তাদের নিউরো সাইন্সে শিফট করা হয়েছে। আমি বললাম ঈশ্বরের কৃপায় ওরা দ্রুত বাড়ি ফিরে যাবে। ওদের পরিবারের লোকেরা জানাল, প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাড়ি ও ভেঙে পড়েছে। কিন্তু ওরা যে সুস্থ আছে এটাই সবথেকে বড় কথা। বাকিটা সরকার দেখছে।’
কেন্দ্র আবাসের টাকা দিলে এরকম ঘটত না
এদিন আহত ব্যক্তিদের দেখার পর ভাজপার বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগ্রে দিয়েছেন। ‘প্রধানমন্ত্রী ভুটান যেতে পারেন, বিজেপির প্রাক্তণ সাংসদ নিশীথ,জন বারলা, রাজু বিস্ট, দেবশ্রী কোথায়! বিজেপির রাজ্য সভাপতি বালুরঘাটে ছিলেন জলপাইগুড়ি দুর্ঘটনার এলাকায় যাননি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাল রাতেই এসেছেন। আমরা রাজনীতি করতে আসিনি। আপনি যে দলকে ইচ্ছে ভোট দিতে পারেন কিন্তু আমার জনগণের পরিষেবা দিতে বদ্ধপরিকর। আবাসের টাকা পেলে এরকম ঘটনা ঘটত না’ জলপাইগুড়িতে গুরুতর জখম দুই শিশু ও নাবালককে হাসপাতালে দেখে জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। প্রসঙ্গত, রবিবারের ভয়ংকর দুর্যোগে সর্বহারা হয়ে পড়েছে জলপাইগুড়ি জেলা ময়নাগুড়ির অন্তর্গত বার্নিশ এলাকার বহু পরিবার। সোমবার শিলিগুড়িতে বার্নিশে গুরুতর যখন দুই শিশুকে হাসপাতালে দেখতে ছুটে আসেন অভিষেক। তিনি বলেন,’ আমি রাজনীতি করতে আসিনি। আপনি যে দলকে ইচ্ছে ভোট দিতে পারেন কিন্তু আমার জনগণের পরিষেবা দিতে বদ্ধপরিকর।
বাংলায় হারার পর ১০ পয়সার যদি শ্বেত পত্র প্রকাশ করতে পারেন আমি রাজনীতি ছেড়ে দেবো।আমি রাজনীতি করবো না। প্রশ্ন করুন বিরোধী দলনেতাকে প্রধানমন্ত্রীকে!বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার নিতে বলেছে টাকা বন্ধ করেছি।আমি ফোন করে দেব তাহলে টাকা আসবে। তিনি বলেন আজকে আবাস হলে এই বাচ্চাগুলোকে এভাবে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকতে হতো না। তাদের মাথার ওপর এই আঘাত আসতো না।এই চোট লাগতো না।’ সোমবার দুপুরে বাগডোগড়া বিমান বন্দরে নেমে বলেন যেভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দুবছর বয়স এক শিশু ও নাবালক ১৪বছর তারা মাথায় চোট পেয়েছে। রবিবার রাতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাতের বেলা বিমান নিয়ে চলে এসেছেন। যাদের বাড়িঘর ভেঙে গিয়েছে বা যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তারা কিছু সময় রিলিফ ক্যাম্পে থাকবে। সাড়ে বারোটা একটার মধ্যে যখন সবাই ঘুমিয়ে ছিল তখন অতন্দ্র প্রহরীর মতো মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। এই দৃষ্টান্ত ভারত বর্ষে আর কেউ স্থাপন করতে পারেনি। আমফান, কোভিড কালে মানুষের জন্য কাজ করার যে প্রতিজ্ঞা তিনি করেছেন তা সম্পন্ন করেছেন। রাজনীতি না করে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দুমুঠো খাবার তুলে দিতে পারাকে আমি কর্তব্য মনে করি। তার বক্তব্য রাজনীতি হবে পরে হবে। বিরোধী দলনেতার কটাক্ষের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমন শানিয়ে তিনি বলেন- ওনাদের কাছে কটাক্ষ ছাড়া আর কিছু করার নেই বোনেরা শুধু কটাক্ষই করেন। উনি রাতে আসতে পারলেন না কেন? প্রশ্ন তুলে অভিষেক বলেন,’বিরোধী দলনেতা রাজনীতি করছে। বিজেপির যে রাজ্য সভাপতি তিনি থাকেন বালুরঘাটে। বালুরঘাট থেকে জলপাইগুড়ি দূরত্ব ৩০০ কিলোমিটার। সাড়ে চার ঘন্টা থেকে ৫ ঘন্টা সময় লাগতো। ঘটনাটা ঘটেছে ৪.৩০-৫টা নাগাদ। চাইলে রাত আটটার মধ্যে পৌঁছে যাওয়া যেত। অথচ কালীঘাট থেকে জলপাইগুড়ি দূরত্ব ৬২০ কিলোমিটার মমতা ব্যানার্জী পৌঁছে যেতে পারলেন। দেশের প্রধানমন্ত্রী ভুটান যেতে পারেন। সেমিনারে গিয়ে ভাষণ দিতে পারেন। রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বাংলায় পাঁচ বার এসে রাজনৈতিক সবাই এসে উপস্থিত হয়ে ভাষণ দিতে পারেন বিজেপির কর্মক্ষেত্রে উপস্থিত হতে পারেন। বিভিন্ন মন্দির ঘুরতে পারেন বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে বড় বড় ভাষণ ইন্টারভিউ দিয়ে কেন বিজেপিকে ভোট দেবে তা বলতে পারেন আর মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে পারেন না। বিজেপির উত্তরের সাংসদের এক হাত করে বলেন আমি এটা নিয়ে রাজনীতি করতে চাইনা। শিলিগুড়িতে বিজেপি প্রাক্তন সাংসদ ছিল, কোচবিহারে বিজেপির প্রাক্তণ সাংসদ ছিল, রায়গঞ্জে ছিল।বালুরঘাটে বিজেপির রাজ্য সভাপতি ছিল। তারা মানুষের পাশে কোনোদিনও থাকেনি। মানুষ সেটা দেখছে। কোভিডের সময় আমফানের সময়, ইয়াসের সময় বিভিন্ন এলাকা জুড়ে কারা ছিল। অভিষেকের খোলা মন্তব্য মানুষকে আমি বলব যদি তৃণমূল কংগ্রেসকে আপনাদের পছন্দ না হয় তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট না দিলে তৃণমূল কংগ্রেস আপনাদের পাশে থাকতে পরিসেবা দিতে বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন যারা আমাদের ভোট দিয়েছে যারা রাত আমাদের ভোট দেননি রাজ্য সরকার তাদেরও পরিষেবা দিতে বদ্ধপরিকর। এটা বিজেপি সরকার নয় যে ভোট না পেলে টাকা বন্ধ করে দেব। আমাদের গ্যারান্টি মানুষের পাশে থেকে মানুষকে প্রাণের বাঁচিয়ে চিকিৎসা করিয়ে দ্রুত মুক্ত করে পরিবারের কাছে ফেরানো তৃণমূল কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে। মানুষকে বলবো ২০১৯-২০২১এ আলিপুরদুয়ার কোচবিহার জলপাইগুড়িতে আশানুরূপ ফল আমাদের হয়নি। তবু ছুটে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নিয়ে যে সমস্ত দুর্গত মানুষ রয়েছেন তাদের সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে কিনা দুর্গত মানুষেরা খাবার মিলছে কিনা সেসব খতিয়ে দেখতে ছুটে এসেছেন। নির্বাচন আচরণবিধি রয়েছে জন্য বিস্তারিত বলা যায় না। রাজ্য প্রশাসনের তরফে যা যা করণীয় সব করা হয়। তিনি শারীরিক অবস্থার কথা তুলে ধরে বলেন এদের মাথায় লেগেছে।