সাজনে ফুলের সঙ্গে আমরা সকলেই পরিচিত। তবে সাজনে পাতা যে একটি আদর্শ ঔষধিগুণ সম্পন্ন শাক তা হয়তো অমরা অনেকেই জানি না। সাজনে শাককে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে অলৌকিক শাক বলে। সত্যিই সাজনে অলৌকিক গুণ সম্পন্ন শাক। সাজনে পাতার মধ্যে রয়েছে বিপুল পরিমাণে খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন। পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এগুলো ছাড়াও প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেটও আছে এতে। অনেকগুলো পুষ্টি একসঙ্গে থাকার কারণে এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
পুষ্টি বিশেষজ্ঞারা বলছেন – প্রতি ১০০ গ্রাম সাজনে পাতা থেকে পাওয়া যায় – শর্করা ৮.২৮ গ্রাম, ফাইবার ২.০ গ্রাম, স্নেহ ১.৪০ গ্রাম, প্রোটিন ৯.৪০ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৮৫ মিলিগ্রাম, লৌহ ৪.০০ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেশিয়াম ১৪৭ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ১৯ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৫১.৭ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ প্রায় ৩৭৮ মাইক্রোগ্রাম। স্বাভাবিক কারণেই সাজনে শাকের পুষ্টিগুন অনেক। কিন্তু আমরা অনেকেই সাজনে কে শাক হিসাবে জানি না।
সাজনে শাকের পুষ্টিগুণ ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে – ১) এটি রোগ প্রতিরোধে সহযোগিতা করে। ২) প্রদাহনাশক হিসাবে কাজ করে অর্থাৎ শরীরের বিভিন্ন ব্যথা দূর করে। ৩) পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা যেমন খাবার সহজে হজম না হওয়া, পেটে অতিরিক্ত গ্যাস জমে থাকা, বুকজ্বালা ইত্যাদি সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। ৪) হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভূমিকা রাখে। ৫) কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য সাহায্য করে।
৬) সাজনে পাতাতে রয়েছে ভিটামিন সি, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। ৭) সাজনে পাতায় রয়েছে ভিটামিন এ, যা চোখ ভালো রাখতে সাহায্য করে। ৮) ত্বকের সংক্রমণ, মূত্রনালী সংক্রমণ এবং হজমের সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে এটি। সাজনে পাতা নানা উপায়ে খাওয়া যায়।
অনেকেই রান্না করে খান। তবে রান্না করলে ভিটামিন সি অনেকটা নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও – প্রাকৃতিকভাবে রোদে শুকিয়ে গুঁড়া করে খাওয়া যেতে পারে। ব্লেন্ড করে জুস হিসেবেও খাওয়া যেতে পারে। তবে এক নাগাড়ে ১২/১৩ দিন খাবার পড়ে অন্তত ৩/৪ দিন সাজনে শাক খাওয়া বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন আয়ুর্বেদ আচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য।