ডবল প্যারাসুট স্প্ল্যাশডাউন

মহাকাশে ৯ মাস কাটিয়ে ঘরে ফিরলেন সুনীতা, বুচ

৩৬৫ দিন। দীর্ঘ ৯ মাস মাধ্যাকর্ষণ শূন্য অবস্থায় থাকার জন্য নানা রকম সমস্যা তাদের দেখা দিতে পারে। ফ্লোরিডায় ল্যান্ডিংয়ের পরেই তাদের নিয়ে যাওয়া হবে নাসার নিজস্ব স্পেস ল্যাবরেটরিতে। যেখানে আলফা রেড রশ্মি দিয়ে পুরো স্ক্যানিং হবে দুই মহাকাশচারীর দেহ। মহাজাগতিক কোনও জীবাণু বা ভাইরাস তারা পৃথিবীতে বয়ে এনেছেন কিনা সেটার পরীক্ষা হবে। এই ৯ মাসে প্রায় ৯০ ঘণ্টা দুজনে স্পেস ওয়াক করেছেন। ফলে মহাকাশে অসংখ্য ধূলিকণা ও মহাজাগতিক রশ্মির সম্মুখীন হয়েছেন তাঁরা। ফলে অসংখ্য অজানা জীবাণু তাদের শরীরের সংস্পর্শে আসতে পারে। তাই এই পরীক্ষা। এই পরীক্ষার পর তাদের নিয়ে যাওয়া হবে নাসার স্পেশাল কোয়ারেন্টিন সেন্টারে। যেখানে সব ধরনের স্বাস্থ্য পরীক্ষার শেষে ৭ থেকে ২১ দিন পর্যন্ত কয়ারেন্টিনে তাদের থাকতে হতে পারে।আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন থেকে ফিরলে সাধারণত সাত দিন কোয়ারান্টিনে রাখা হয় মহাকাশচারীদের। কিছু ক্ষেত্রে আবার নিভৃতবাস দীর্ঘমেয়াদি হয়। অ্যাপোলো ১১  মহাকাশচারীদের ২১ দিন কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছিল। সুনীতাদের কতদিন কোয়ারান্টিনে রাখা হবে এখনও তা জন্য যায়নি।   তবে মহাকাশে থাকাকালীনই সুনীতা এবং ব্যারির স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়। দেখা গিয়েছে তাদের হাড়ের ক্ষয় হয়েছে।রক্তের ঘনত্ব কমেছে। ওজন কমেছে। হাঁটতেও ভুলে গিয়েছেন সুনীতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর। তাদের বেবি ফুট হয়েছে। অর্থাৎ দীর্ঘ ৯ মাস তারা পা ফেলে না হাঁটার কারণে, পায়ের তলা ছোট্ট শিশুদের মত তুলতুলে নরম হয়ে গিয়েছে। পৃথিবীতে ফিরে মাটিতে পা রাখলেই দেহের ভারে পায়ের তলা ফেটে যাবে।ফলে কটন কুশন প্যাডে কিছুদিন তাদের হাঁটার ব্যবস্থা থাকছে। এ ছাড়াও দীর্ঘদিন মহাকাশে থাকার কারণে শারীরিক নানা জটিলতার সৃষ্টি হয় মহাকাশচারীদের। সুনীতারাও ব্যতিক্রম নন। তাই এতদিন মহাকাশে থাকার কারণে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে পারবেন না তাঁরা।সমুদ্রতল থেকে হাজার ফিট ওপরেই ড্রাগন শাটলের ডায়গোনাল প্যারাসুট উইন্ডো খুলে যায়। তখন শাটলের গতিবেগ কমে ঘণ্টায় ৪ হাজার কিলোমিটার। কোনাকুনি দুদিকে দুটি করে চারটি ল্যান্ডিং প্যারাসুট খুলে গিয়ে সমুদ্রতলে আছড়ে পড়ার মুহূর্তের গতি প্রায় শূন্যতে নামিয়ে আনে। ৩.২৭ মিনিটে স্প্ল্যাশল্যান্ডিং সফল হয়। মার্কিন নৌসেনা বাহিনীর বোট মডিউলের ৩০০ মিটারের মধ্যে অবস্থান করছিল।মডিউল-সহ সুনীতাদের জাহাজের কাছে নিয়ে আসে নৌবাহিনী। মহাকাশচারীদের হাইড্রোলিক পদ্ধতিতে তোলা হয় জাহাজে। সেখানে ড্রাগন ক্যাপসুলের দরজা খোলার পরে প্রথমে বেরিয়ে আসেন নিক হগ। তার প্রায় ৫ মিনিট পরে ভারতীয় সময় ভোর ৪টে ২২ নাগাদ হাসিমুখে বেরিয়ে আসেন সুনীতা উইলিয়ামস। এর পরে জাহাজ পাড়ি দেবে স্থলভাগের উদ্দেশে। সেখান থেকে গন্তব্য হিউস্টন জনসন স্পেস সেন্টার।

 

 

 

Scroll to Top