বাঘের আক্রমণে আহত বনকৰ্মী এসএসকেএম’এ চিকিৎসাধীন
বিশ্বজিৎ পাল। সুন্দরবন
৩৬৫ দিন। বাঘ ধরতে গিয়ে এবার বাঘের মুখে পড়তে হল এক বনকর্মীকে। প্রকাণ্ড রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার মাথায় কামড়ে ধরেছিল ওই বনকর্মীর। তাঁর সহকর্মীরা কোনওভাবে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। বর্তমানে ওই বনকর্মীর শারীরিক পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে। সোমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৈপীঠের নাগেনাবাদ এলাকায় কিশোরী মোহনপুর গ্রামে মাঠের মধ্যে বনকর্মীর মাথা কামড়ে ধরল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। দক্ষিণরায়ের আঁচড়-কামড়ে অসুস্থ বনকর্মী। তাঁকে বর্তমানে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারটি এলাকারই জঙ্গলে পালিয়ে যায় । আহত বনকর্মীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় এস এস কে এম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় ।
বনদফতর সূত্রে জানা গেছে রবিবার সন্ধ্যায়ই মৈপীঠে ঢুকে পড়েছিল বাঘটি। পায়ের ছাপ দেখেই রাতে জাল পাতা হয়। আজ সকালে বাঘের সন্ধানে বেরন ৩২ জনের বনকর্মীদের কুইক রেসপন্স একটি দল। দুপুরের দিকে লাঠি হাতে ওই বনকর্মীরা যখন ব্যাগটির কাছাকাছি চলে আসে সেই সময়ে সর্ষের ক্ষেত থেকে বেরিয়ে আসে বাঘটি। বনকর্মীদের একদম সামনে চলে আসে বাঘটি। এরপরেই সে গণেশ শ্যামল নামক ৪০ বছর বয়েসী এক বনকর্মীর ঘাড়ে লাফিয়ে পড়ে বাঘটি। তাঁকে বাঁচানোর জন্য লাঠি দিয়ে আঘাত করা হলেও, ভয়ঙ্কর কামড়ে ধরে রেখেছিল বনকর্মীকে। শেষ পর্যন্ত বনকর্মীকে কোনওমতে উদ্ধার করা হয়। প্রথমে তাকে কুলতলির জামতলা ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ও সেখান থেকে বিকেলে এস এস কে এম এর ট্রমা সেন্টারে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিয়ে এলে সেখানে তার চিকিৎসা শুরু করে ডাক্তাররা ।
বাঘের মুখ থেকে ফিরে আসার পিছনে গণেশের সহকর্মীদের দুঃসাহসিক অবদান রেকেছেন তার সহকর্মীরা । বাঘের আক্রমণের সময় গনেশের আশপাশে থাকা বনকর্মীরা বাঘের দিকে লাঠি হাতে ধেয়ে যান। তাঁদের মারমুখী আচরণেই কোনওক্রমে ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দেয় বাঘ। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে কুলতলির জামতলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর বাঘটি পালিয়ে এলাকারই বাসিন্দা রূপচাঁদ মণ্ডলের উঠোনে চলে যায়। সেখান থেকে দৌড়ে ঘরের ভিতর ঢুকে পড়ে। তড়িঘড়ি বনদপ্তরের তরফে বাড়িটি ফাঁকা করে দেওয়া হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডিএফ ও নিশা গোস্বামী জানিয়েছেন জাল দিয়ে গোটা বাড়িটি ঘিরে ফেলা হয়েছে। বাড়তি পাহারার বন্দোবস্তও করা হয়েছে। ঘুমপাড়ানি গুলি দিয়ে বাঘটিকে কাবু করার ভাবনাচিন্তা চলছে। আলো থাকতে থাকতেই বাঘবন্দি খেলা শেষ করার চেষ্টায় বনকর্মীরা।রাতে এলাকায় লোহার জাল পাতা হয়েছে ও ছাগলের টোপ দেওয়া হয়েছে বলেও বনাধিকারিকদের সূত্রে জানা গেছে । এদিকে লোকালয়ের মধ্যেই এই বাঘে-মানুষে লড়াইতে আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা।