আগামী ৩ বছরের মধ্যে
বাংলায় নতুন ৩২ বিলাসবহুল হোটেল

মমতার আমলে বাণিজ্যে এগিয়ে বাংলা
৫০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ লক্ষাধিক কর্মসংস্থানের সুযোগ

৩৬৫ দিন বাংলায় হোটেল ইন্ডাস্ট্রিতে বিরাট সুখবর। আগামী দু-তিন বছরের মধ্যে রাজ্য জুড়ে গড়ে উঠতে চলেছে আরও ৩২ টি নতুন বিলাসবহুল হোটেল। আগামী ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে এই সংক্রান্ত মৌ চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে বলে জানা গিয়েছে। সার্বিকভাবে এই উদ্যোগের ফলে রাজ্যে প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। বিপুল সংখ্যক কর্মসংস্থান হবে এই হোটেল ইন্ডাস্ট্রিকে কেন্দ্র করে। বাংলায় বাম অপশাসন দূর করে উন্নয়নের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতার উদ্যোগেই গত ১২ বছরে বাংলায় বিপুল বিনিয়োগ এসেছে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের হাত ধরে। গত ১২ বছরে প্রস্তাবিত বিনিয়োগের প্রায় ৯০ শতাংশ অর্থ বাস্তবে রূপায়িত হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে আরো বিপুল বিনিয়োগ হবে বলে ইতিমধ্যেই বিশ্বের বৃহৎ শিল্প গুলি সুনিশ্চিত করেছে।
প্রস্তাবিত বিনিয়োগ
 এই ৩২ টি নতুন হোটেল নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যেই ৪৪০০ কোটি টাকা সুনিশ্চিত করা হয়েছে, যা বৃদ্ধি পেয়ে ৫০০০ কোটি টাকায় গিয়ে দাঁড়াবে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের শীর্ষ এক আধিকারিক। তার কথায়, চলতি আর্থিক বছরে বেশ কিছু হোটেলে উদ্বোধন হবে এবং আগামী ২০২৮ সালের মধ্যে বাকি হোটেল গুলির নির্মাণের কাজ শেষ হবে। এই ৩২ টি নতুন হোটেলের মধ্যে ১০টি শিলিগুড়ি ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে গড়ে উঠবে। প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে কলকাতায় প্রায় ৩৫০০ টির বেশি ফাইভ স্টার হোটেল রুম রয়েছে এবং রাজ্যজুড়ে প্রায় ৪৫০০ টি ফাইভ স্টার হোটেল রুম রয়েছে বড় হোটেল গুলিতে। নতুন ৩২ টি হোটেল নির্মাণের পর ফাইভ স্টার হোটেল রুমের সংখ্যা দ্বিগুনে পরিণত হবে বলে জানা গিয়েছে।বাংলার বৃহৎ কনক্লেভ
এই উদ্যোগের কারণেই আগামী বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে রাজ্য পর্যটন দপ্তর এক বিরাট কনক্লেভের আয়োজন করতে চলেছে। হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার সভাপতি সুদেশ পোদ্দার জানিয়েছেন, বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে হোটেল নির্মাণের ক্ষেত্রে যে কনফ্লেভ হবে সেটি এ যাবৎ কালের মধ্যে সবথেকে বৃহৎ কনফ্লেভ। সুদেশ পোদ্দারের কথায়, ‘বাংলার পর্যটন শিল্পে এটি একটি গেম চেঞ্জার উদ্যোগ বলে মনে করা হচ্ছে।’ উল্লেখ্য, এই ধরনের কনক্লেভের মধ্যে দিয়ে ৪৭০০ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই প্রত্যক্ষ ভাবে রাজ্যে বিনিয়োগ করা হয়েছে। পরোক্ষভাবে এই বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা।বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন
এবারের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে রাজ্যের ভাবনা, শিল্পে বিনিয়োগের পরিবেশ আরো কীভাবে তুলে ধরা যায় গোটা বিশ্বের কাছে সেটাই প্রধান লক্ষ্য। বাংলাকে বিভিন্ন শিল্পপতিদের সামনে আরও কীভাবে বিনিয়োগ যোগ্য করে তোলা যায় সেটাই মূল লক্ষ্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতার।বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজ্যে বাণিজ্য সম্মেলন হওয়ার পর থেকেই বিনিয়োগের পরিমাণ বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।ইতিমধ্যেই সরকারের একাধিক দফতর শিল্প সম্মেলনকে সামনে রেখে তাদের মতো করে প্রস্তুতি শুরু করেছে। সামগ্রিক ভাবে সেটা একটা বিশাল কর্মযজ্ঞ। এর জন্য আলাদা আলাদা কমিটিও রয়েছে। একাধিক কমিটিতে রয়েছেন রাজ্যের শিল্পপতিরা অথবা কোথাও আছেন বণিক মহলের সদস্যরা। তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর সরকারের গতিমুখ নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর লক্ষ্য শিল্প, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান। সেই লক্ষ্যেই এই বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। বিনিয়োগের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করতে এবং সম্মেলন সাফল্যমন্ডিত করতে ইতিমধ্যেই পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের শিল্প মহলের সকল শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে এই নিয়ে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
পর্যটন দপ্তরে জোর
পর্যটন দপ্তরের উন্নয়নে বিশেষ করে জোর দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। একদিকে যেমন পরিকল্পনা মাফিক বৃহৎ পর্যটন শিল্পকে বাংলায় নিয়ে আসার জন্য স্ট্র্যাটেজি নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে নতুন পর্যটন শিল্প গড়ে তোলার জন্য বিশেষভাবে নজর দেওয়া হয়েছে। নতুন পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে রাজ্য জুড়ে একাধিক জায়গায় হোমস্টে ট্যুরিজম বলে তোলার দিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া হয়েছে। হোমস্টে গড়ে তোলার জন্য বিশেষ ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। তাই ৩২ টি নতুন ফাইভ স্টার হোটেল নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে সমান্তরালভাবে রাজ্যে আরও একাধিক হোমস্টে গড়ে উঠবে বলে জানা গিয়েছে।

Scroll to Top