এনক্লোজারের কাজ শেষ জানুয়ারিতেই
৩৬৫দিন। শিলিগুড়ি। জানুয়ারিতেই সিংহ এনক্লোজারের কাজ সম্পন্নের লক্ষ্যমাত্রা। আর বিলম্ব নয়! মার্চের শুরুতেই দ্রুত শিলিগুড়ি বেঙ্গল সাফারি পার্কে লায়ন সাফারি চালুর করতে চায় রাজ্য বন দপ্তর। সাফারীর বন ভূমিতে নিরালায় ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে সিংহ জুটি তনয়া ও সুরজের। গত ডিসেম্বর মাস থেকে বেঙ্গল সাফারিতে উপচে পড়েছে পর্যটকদের ভিড়। প্রায় এক বছর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে সাফারিতে আগমন ঘটে ত্রিপুরা সিপাইজলা চিড়িয়াখান থেকে পুরুষ ও স্ত্রী সিংহ জুটি। এক বছর ধরে সাফারি খোলা বনভূমিতে খোশ মেজাজে রয়েছে সিংহ জুটি। এই এক বছর সময়তে সাফারীর পরিবেশের সঙ্গে বেশ মানিয়ে নিয়েছে সিংহ জুটিদ্বয়। বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে প্রথম থেকেই এই দুই সিংহ দ্বয় এক অপরের প্রতি আকৃষ্ট ছিল। সে কারনেই ত্রিপুরা থেকে নতুন ঠিকানায় একসঙ্গে এই জুটিকে আনা হয়। নিরালা সাফারির এনক্লোজারের বুকে সিংহ জুটির মাঝে বেড়েছে আরও সখ্যতা বলেই সাফারীর বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ সূত্রে জানা গিয়েছে। নির্জন সাফারির উন্মুক্ত বনভূমির বুকে একে অপরের সঙ্গে বন্যপ্রাণী স্বাভাবিক সহজাত ভঙ্গিতে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তও নজরে আসে। ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সিংহ প্রজনন ঘিরে আশার আলো দেখেছিলেন বন কর্তারা।তবে পরবর্তীতে প্রজননের সময় এগিয়ে এলে বন্যপ্রাণ চিকিৎসকেরা লক্ষ্য করেন প্রজননগত কোন লক্ষনই স্ত্রী সিংহের মধ্যে দেখা মিলছে না। পরবর্তীতে সম্প্রতি দেড় মাস আগে ফের এক অপরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠতে দেখা গিয়েছে তাদের মাঝে।যাতে প্রথম দফার পর কিছুটা সাফারী কর্তৃপক্ষ। সাফারীর বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ সূত্রে জানা গিয়েছে স্ত্রী ও পুরুষ সিংহের জুটির বদলের প্রয়োজন নেই। প্রথমবারের পর সাফারির বুকে দ্বিতীয় দফায় একে অপরের সঙ্গে তাদের সখ্যতা ও ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির মুহূর্ত নজরে এসেছে। স্ত্রী ও পুরুষ সিংহ জুটি এক অপর সঙ্গীর প্রতি আকৃষ্ট। ফলে সঙ্গী বদলের কোন প্রয়োজনীয়তা নেই। একসঙ্গে সিংহ জুটিকে ছাড়া হচ্ছে সাফারীর উন্মুক্ত বনাঞ্চলের এনক্লোজারে। সেখানে বহাল তবিয়তে ২০হেক্টর এনক্লোজারে বিরচন করছে সিংহ জুটি। উঁচুতে মাংস ঝুলিয়ে রেখে তাদের শারীরিক কসরৎ করানো হচ্ছে বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শে। আবার কখনও বল জাতীয় বিভিন্ন রকমের খেলনা সামগ্রী দিয়ে তাদের গতিবিধি সচল রাখার চেষ্টা করা হয়।
দ্বিতীয় দফায় ঘনিষ্ঠতার পর সিংহীর গতিবিধি পরিবর্তন সে অর্থে নজরে আসেনি। ফলে এখনও নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়। অন্যদিকে সিংহ এনক্লোজারে ভেতরে তিনটি উচ্চতা বিশিষ্ট গেট নির্মাণের কাজ চলছে। কাজ চলছে সীমানা প্রাচীলের কিছু অংশের। এনক্লোজারে ত্রিস্তর নিরাপত্তার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। দ্রুত লায়ন সাফারি চালুর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দিয়েছে রাজ্য বনদপ্তর। ফলে এনক্লোজার প্রস্তুতির কাজে সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করছে সাফারি কর্তৃপক্ষ। সাফারীর ডিরেক্টর ই বিজয় কুমার জানান এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে এনক্লোজারের কাজ সম্পন্ন করে লায়ন সাফারি চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। রাজ্য বন দপ্তরের তরফে জানা গিয়েছে এখনও লায়ন এনক্লোজারে ল্যান্ড স্কেপিং,সিংহ দ্বয়ের জন্য ছোট আকারে জলাশয় খনন বেশ কয়েকটি কাজ বাকি রয়েছে। ৭৫শতাংশ এনক্লোজারের পরিকাঠামোগত কাজ সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে।একই সঙ্গে সিংহ দ্বয়ের প্রজনন প্রক্রিয়া সফলতা ও শাবকের সম্ভাবনাকে ঘিরে উৎসুক সাফারী কর্তৃপক্ষ।অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের বুকে লায়ন সাফারী চাক্ষুষ করতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রয়েছেন পর্যটকেরা। এদিকে সাফারীর বুকে ১১টি রয়্যাল বেঙ্গল রয়েছে। তার মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই সাফারী থেকে এক রয়্যাল বেঙ্গলকে নতুন নিউটাউন হরিনালয় চিড়িয়াখানার ঠিকানায় নিয়ে যাওয়া হবে সে খবর ছড়িয়ে রয়েছে অরণ্য ভবনে। বড় দিনের সময় নিউটাউন জুয়ে এই নতুন অতিথিকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে রাজ্য বড় দপ্তর। তবে সেন্ট্রাল জু অথোরিটির তরফে সবুজ সংকেত না মেলায় রয়েল বেঙ্গল এর শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা মুখে যাত্রা পিছিয়ে যায়। জানা গিয়েছে,কেন্দ্রীয় জু অথোরিটির তরফে সম্প্রতি সবুজ সংকেত মিলেছে। চূড়ান্ত নির্দেশিকা রাজ্য বন দপ্তরের হাতে এলেই চালু হবে প্রক্রিয়া। ইতিমধ্যেই সিডব্লিউএলডব্লিউ থেকে ছাড়পত্র মিলেছে। জানা গিয়েছে, বন্যপ্রাণ বিনিময় প্রথার মাধ্যমে হরিণালয়ে যাবে বেঙ্গল সাফারি থেকে রয়্যাল বেঙ্গল তার পরিবর্তে সাফারিতে আনা হবে বিশেষ প্রজাতির হরিণ। এছাড়া নেকড়ে আনয়নের বিষয় প্রস্তাব জানানো হয়েছে রাজ্য বনদপ্তরকে।এ বিষয়ে রাজ্যটির মেম্বার সেক্রেটারি সৌরভ চৌধুরী জানান- শীতের মরশুমে বন্যপ্রাণ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে কিছুটা ঝুঁকি থাকে। শীতকালীন মরশুম পেরোনোর অপেক্ষা করছি।