জন্ম: ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৩২
মৃত্যু :২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
৩৬৫ দিন। প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী উদার অর্থনীতির পুরোধা মনমোহন সিং (Manmohan Singh)। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। ২০২১ এ কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে শারীরিক সমস্যা আরও বাড়ে। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার তাঁকে ভর্তি করানো হয় দিল্লি এমসে। রাত ৮টা নাগাদ তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। রাতে হাসপাতালেই প্রয়াত হন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। দিল্লি এমসের তরফে জানানো হয়েছে, বয়সজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার বাড়িতেই হঠাৎ সংজ্ঞা হারান তিনি।রাত ৮টা ৬ মিনিটে তাঁকে দিল্লি এমসের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসক দলের সবরকম চেষ্টার পরেও তাঁকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। রাত ৯টা ৫১ মিনিটে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছে দিল্লি এমস। মনমোহনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার খবর পেয়ে রাতেই হাসপাতালে পৌঁছে যান কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। দিল্লি এমসে পৌঁছে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডাও। মনমোহনের মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি, সনিয়া গান্ধি, রাহুল।কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোটের প্রধান মুখ হিসাবে ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন মনমোহন।তবে মনমোহন সিংয়ের সবচেয়ে বড় অবদান পিভি নরসীমা রাও সরকারের অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন উদার অর্থনীতির প্রবক্তা হিসাবে। ১৯৭০ এবং ১৯৮০ এর দশকে, মনমোহন ভারত সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন, যেমন প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা (১৯৭২-১৯৭৬), রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর (১৯৮২-১৯৮৫) এবং পরিকল্পনা কমিশনের প্রধান। তবে তিনি ব্যাপক ভাবে প্রচারে আসেন ১৯৯১ সালে। পিভি নরসীমা রাও সরকার তখন টলমল।দেশের আর্থিক হাল সঙ্গীন। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে কতদিন দেশ চলবে সঞ্চিত টাকায় তা নিয়েই অনিশ্চয়তা ঠিক সেই সময় হাল ধরেন মনমোহন। দেশ প্রথম পরিচিত হয় উদার অর্থনীতির সঙ্গে। বিনিয়োগের দরজা হাট করে খুলে দেন বর্হিবিশ্বের সামনে। যার ফল মেলে পরের কয়েক দশক ধরে। পরবর্তীকালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালিন তাঁর সরকার নানা ভাবে সমালোচিত হলেও ভাজপার ব্যক্তিগত আক্রমণ সত্বেও মনমোহন থাকতেন শান্ত। কখনও শালীনতা লঙ্ঘন করেননি। জবাব দিতেন হাসিমুখে। অনেকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মনমোহনের সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও অর্থমন্ত্রী হিসাবে তাঁর অবদান সর্বজন স্বীকৃত। আর রাজনৈতিক সৌজন্য ছিল প্রশ্নাতীত।