রেললাইনে ঝাঁপ দেওয়ার মতোঘটনা আটকাতে কালীঘাট মেট্রো স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে গার্ডরেল বসাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। প্ল্যাটফর্মে স্ক্রিন ডোর বসানোর খরচ অনেক। তাই সেই ধাঁচে তুলনায় অনেক কম খরচে গার্ডরেল বসিয়ে সমস্যার সমাধান করারকথা ভেবেছিলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, সেই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করতে গিয়ে মেট্রোকর্তারা দেখছেন, বিষয়টি এতটা মসৃণ ও সহজ হবে না।
কলকাতা মেট্রোর উত্তর-দক্ষিণ শাখায় এখন তিন ধরনের এসি রেক চলে। সেগুলি হল: আই সি এফ ভেল, আই সি এফ মেধা এবংডালিয়ান। এই তিন ধরনের রেকের সিরিজের নম্বর পর্যায়ক্রমে ৩০০, ৪০০ এবং ৫০০ সংখ্যা দিয়ে শুরু হয়। কলকাতা মেট্রোর ভিড় এবং যাত্রী-পরিষেবা সংক্রান্ত চাহিদার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে এই তিন প্রজন্মের রেকে পর্যায়ক্রমে বেশ কিছু বদল আনা হয়েছে। যার মধ্যে আছে ভিড়ের সময়ে যাত্রীদেরওঠানামার সুবিধার্থে দরজার পরিসর বাড়ানো। উত্তর-দক্ষিণ শাখায় বর্তমানে চালু থাকা আই সি এফ ভেল রেকের দরজার পরিসর ১২৯৪ মিলিমিটার। আই সি এফ মেধা রেকের ক্ষেত্রে তা ১৩০০ মিলিমিটার এবং ডালিয়ান রেকের ক্ষেত্রে ১৪০০ মিলিমিটার।
তিন রকম রেকের দরজার পরিসর আলাদা হওয়ার পাশাপাশি, দু’টি দরজার মধ্যে দূরত্ব বজায় রেখে অন্যান্য ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখতে গিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কামরার দৈর্ঘ্যে বদল আনা হয়েছে। তাতে রেকের দৈর্ঘ্যও বেড়েছে। আই সি এফ ভেল এবং আই সি এফ মেধা রেক নিয়ে ততটা সমস্যা না হলেও দেখা গিয়েছে, ডালিয়ান রেকের দরজার পরিসর অনেকটা বেশি। তিন ধরনের রেকের দৈর্ঘ্য এবং দরজার মাপ হিসাব করে কালীঘাট স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে দু’টি গার্ড রেলের মধ্যে নির্দিষ্ট পরিসর ফাঁকা রাখতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, তা গিয়ে ঠেকছে প্রায় ২৪০০ মিলিমিটারে। যা প্রায় আড়াই মিটারের কাছাকাছি। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় রেকের দরজার তুলনায় প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর মাত্র ৬০ সেন্টিমিটার বেশি। এখানে সেই পরিসর এক লাফে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। তাতেই গার্ড রেল বসিয়ে প্ল্যাটফর্ম সুরক্ষিত করার চেষ্টায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। তা ছাড়া, ট্রেনের আসা-যাওয়া নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি না থাকায় ওই সব গার্ড রেলের মাঝে বৈদ্যুতিন বুম বার বসানোর ব্যবস্থাও করা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে গার্ড রেল অনেক ক্ষেত্রেই যাত্রীদের ওঠানামা করার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করছে।
কী ভাবে এই সমস্যা মেটানো যায়, আপাতত তা নিয়েই চিন্তাভাবনা করছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক ভাবে কাজ শুরু হওয়ার পরেও কালীঘাট স্টেশনে এখনওএই সমস্যার কারণে গার্ড রেল বসানোর কাজ সম্পূর্ণ করা যায়নি, জানাচ্ছেন মেট্রোর আধিকারিকদের একটি অংশ।