রাজনিতিক প্রতিবেদন। নয়াদিল্লি
৩৬৫ দিন। নয়াদিল্লি। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের স্ত্রী সুনিতা কেজরিওয়াল। ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের স্ত্রী কল্পনা সোরেন। জেলবন্দী আম আদমি পার্টি নেতা সঞ্জয় সিং এর স্ত্রী অনিতা সিং। লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে কাজে লাগিয়ে ভাজপা বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির যে সমস্ত মুখ্যমন্ত্রী এবং মন্ত্রীদের কেন্দ্রের ভাজপা সরকার গ্রেফতার করেছে দিল্লিতে রামলীলা ময়দানের মহাসমাবেশে তাদেরকে সামনের সারিতে তুলে আনল ইন্ডিয়া জোট। দেখা গেল সুনীতা কেজরিওয়াল ও কল্পনা সোরেনের পাশে বসে রয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধি ৷
ইন্ডিয়া জোটের ডাকে এই সভায় নাম দেওয়া হয়েছে, রিমুভ ডিক্টেটরশিপ, সেভ ডেমোক্র্যাসি অর্থাত্ তানাশাহি হটাও, গণতন্ত্র বাঁচাও। বিশেষত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম মুখ অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির পর আর চুপ করে বসে থাকা উচিত হবে না সিদ্ধান্ত নিয়েই এই মহাসমাবেশ।
কেজরিওয়ালের হয়ে ৬ গ্যারান্টি সুনীতার
দিল্লিতে এই রামলীলা ময়দানের সমাবেশ মঞ্চ থেকে দিল্লির মুখ ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের স্ত্রী সুনিতা কার্যত প্রতিনিধিত্ব করেন কেজরিওয়ালের। বক্তব্যের শুরুতেই তিনি বলেন, আপনাদের কেজরীওয়াল সিংহ। তাঁকে বেশি দিন জেলে বন্দি করে রাখা যাবে না। আমি আপনাদের কিছু জিজ্ঞাসা করতে চাই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমার স্বামীকে জেলে ঢুকিয়ে ঠিক কাজ করেছেন? ভাজপার লোকেরা বলছে যে কেজরিওয়ালজি জেলে আছেন, তাঁর পদত্যাগ করা উচিত। তার কি পদত্যাগ করা উচিত? এরপরেই জেলবন্দি অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দেওয়া চিঠি পড়ে শোনালেন স্ত্রী সুনীতা। আর সেই চিঠির প্রথমেই ছিল দেশবাসীকে ৬ গ্যারান্টির কথা। তিনি বলেন, আমি আপনাদের কাছে ভোট চাইতে আসিনি, এসেছি দেশকে বাঁচানোর আবেদন নিয়ে।
ভাজপার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি কল্পনা সোরেনের
রাজনীতির সঙ্গে কখনো প্রত্যক্ষভাবে জড়িত না থাকলেও ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনের স্ত্রী কল্পনা সোরেন আজ দিল্লির রামলীলা ময়দানে ইন্ডিয়া জোটের মহাসমাবেশের মঞ্চে ওঠে সরাসরি ভাজপা শাসিত কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে চালানোর অভিযোগ তুললেন। কল্পনা বলেন ভারতের মোট জনসংখ্যার ৫০ শতাংশ হলেন মহিলা । আমি সেই ৫০ শতাংশ মহিলা এবং দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯ শতাংশ আদিবাসী জনসমাজের প্রতিনিধি হিসেবে দিল্লির বুকে দাঁড়িয়ে এই হুঁশিয়ারি দিতে পারি আগামী লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রের স্বৈরাচারী ডিক্টেটর সরকারের পতন হবে। তানাশাহী নেহি চলেগা। দেশের মহিলারা আর মোদি সরকারকে চায় না।
তৃণমূল ইন্ডিয়া জোটে ছিল আছে থাকবে
কোরবো নির্ধারিত রাজনৈতিক কর্মসূচি এবং নির্বাচনী প্রচারের জন্য মমতা এবং অভিষেক দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোটের এই মহাসমাবেশে উপস্থিত থাকতে না পারলেও দলের প্রতিনিধি হিসেবে এদিন মঞ্চে বক্তব্য রাখেন তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনি বলেন প্রথমেই একটা বিষয় স্পষ্ট করে দেওয়া উচিত ভাজপা গোটা দেশ জুড়ে যে অপপ্রচার চালাচ্ছে যে তৃণমূল ইন্ডিয়া জোটে নেই তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এই জোট তৈরির প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে আগাগোড়া তৃণমূল ইন্ডিয়া জোটের গুরুত্বপূর্ণ শরিক ছিল আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। এবারের লোকসভার লড়াই বাজপার বিরুদ্ধে কোন একটি রাজনৈতিক দলের নয় ভাজপা বনাম ভারতের সমস্ত মানুষের লড়াই। ভাজপা বনাম গণতন্ত্র বাঁচানোর লড়াই।
মোদিবাবু ডর গ্যয়ে
মোদিজি ডর গ্যয়ে। দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোটের মহাসমাবেশ দেখে ভয় পেয়ে দিল্লি ছেড়ে ভোটের আগেই পালালেন মোদি জি। এমনিতেই কয়েকদিন পরে ভোটের ফলাফল বেরোলেই দিল্লি ছেড়ে পাকাপাকি গুজরাটে ফিরে যেতে হবে মোদীজি কে। সরকার গঠন করবে ইন্ডিয়া জোট। রাজধানী দিল্লির বুকে রামলীলা ময়দানে লোকসভা ভোটের প্রক্রিয়া চলার মধ্যেই ঐতিহাসিক সমাবেশে যোগ দিতে এসে এভাবেই বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তীব্র আক্রমণ করলেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব।
মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে ইন্ডিয়া জোটের সমাবেশ মঞ্চ থেকে স্লোগান তোলেন আপকি বার ভাজপা তাড়িপার। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এক দিকে যেমন শনিয়া গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী উপস্থিত ছিলেন মঞ্চে ছিলেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়ে এবং প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধীও। ইন্ডিয়া জোটের সমাবেশের মঞ্চ থেকে রাহুল গান্ধী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুষ্টিমেয় ধনকুবেরদের সহায়তায় লোকসভা নির্বাচনের ম্যাচ ফিক্সিং করছেন। এটা ভোটের নির্বাচন নয়, সংবিধান, গণতন্ত্র বাঁচানোর লড়াই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চান না বিরোধীরা নির্বাচনে লড়ুক। নির্বাচনের ঠিক আগে দুই মুখ্যমন্ত্রীকে জেলে পাঠান তিনি। শুধু তাই নয় আয়কর দফতরকে দিয়ে তিনি আমাদের সব হিসাব ফ্রিজ করে দিয়েছেন। নির্বাচনের আগে কেন এমন করলেন ? আপনি এটা ছয় মাস পর, ছয় মাস আগেও করতে পারতেন।