উই ওয়ান্ট জাস্টিসই বটে
৩৬৫দিন। ছাত্র সমাজের নামে ভাজপার নবান্ন অভিযানের গুন্ডামিতে চিরতরে এক চোখের দৃষ্টি হারাতে হল কলকাতা পুলিশের অফিসার দেবাশীষ চক্রবর্তীকে। চার ঘন্টার অপারেশনেও বা চোখের দৃষ্টি ফেরানো গেল না। মঙ্গলবার কলকাতার হেস্টিংস মোড়ে তথাকথিত ছাত্র সমাজ নামে আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন কলকাতা পুলিসের ইস্ট ডিভিশনের সাইবার সেলের প্রধান দেবাশিস চক্রবর্তী। এদিন তার ডিউটি পড়েছিল স্ট্র্যান্ড রোডে। সেই নির্দেশমতো স্ট্র্যান্ড রোডে যাওয়ার পথেই ভিড়ের মধ্যে থেকে ছুটে আসা ইট লাগে তাঁর বাঁদিকের চোখে। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু তারপরেও জখম চোখে ঠিকঠাক দেখতে পারছিলেন না দেবাশিসবাবু। তারপর তাঁকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বেসরকারি চক্ষু হাসপাতাল শংকর নেত্রালয়ে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে রাতেই ৩-৪ ঘণ্টার অপারেশন হয় চোখে। জানা গিয়েছে, আধলা ইটের টুকরোর আঘাতে তাঁর চোখের মণি ফেটে গিয়েছে।দেবাশিসের চোখ এবং নাকেও চোট লাগে।দেবাশিসের সঙ্গে ছিলেন আরও দুই সার্জেন্ট অতনু রায়চৌধুরী এবং ডেভিড টপনোয়। ছিলেন হোমগার্ড দেবাশিস কুণ্ডু। ওই তিন জনও আহত হয়েছেন। বুধবার হাসপাতাল থেকে চোখ বাধা অবস্থায় ভিডিও বার্তায় দেবাশীষ চক্রবর্তী বলেন , আমি পূর্ব বিভাগের সাইবার সেলের ইনচার্জ। মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানে ডিউটি ছিল। নির্দেশ মতো স্ট্র্যান্ড রোডের দিকে যাচ্ছিলাম। আচমকা উলটোদিক থেকে আসা গাড়িতে থাকা আন্দোলনকারীরা ইট ছুড়তে শুরু করে।প্রথম ইট লাগে গাড়ির কাচে। এর পরই সোজা আমার বা চোখে এসে লাগে ইট। অঝোরে রক্ত পড়তে শুরু করে। আচমকা সবটা অন্ধকার হয়ে গেল। সঙ্গে সঙ্গে আমাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। বাঁ চোখে দেখতে পাচ্ছি না। পুলিশ অফিসার দেবাশীষ চক্রবর্তীর দৃষ্টি হারিয়ে যাওয়ার ঘটনার বিচার কে করবে? প্রশ্ন উঠছে, এক্ষেত্রে কেন উই ওয়ান্ট জাস্টিস বলে প্রতিবাদ জানানো হবে না? নবান্ন অভিযানের নামে ভাজপার এই গুন্ডামিতে কলকাতা পুলিশের বহু অফিসার ও কর্মী আহত হয়েছেন।হাওড়া ময়দানে পুলিসকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। অভিযানের শুরুর দিকেই সাঁতরাগাছিতে পুলিসকে লক্ষ্য করে আন্দোলনকারীদের ছোড়া ইঁটে মাথা ফাটে একজন র্যাফ কর্মীর। হাওড়ায় আক্রান্ত হন ২ জন পুলিশ। কলকাতায় বাবুঘাটে নিরস্ত্র ট্রাফিক পুলিসের উপরও আক্রমণ করা হয়। রীতিমতো লাঠি হাতে ধাওয়া করতে দেখা যায় ওই ট্রাফিক পুলিসের পিছনে। তারপর ওই ট্রাফিক পুলিসকে লক্ষ্য করে লাঠি ছুঁড়ে মারতেও দেখা যায়। বাবুঘাটে ৩ জন পুলিস আক্রান্ত বলে খবর। ওদিকে শিয়ালদহতেও আহত এক পুলিসকর্মী। তাঁর মাথা ফেটে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বহু পুলিশ হাসপাতালে এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নবান্ন অভিযানের নামে পুলিশ পেটাও অভিযানে যে একের পর এক পুলিশ কর্মী আহত হয়েছে।