৩৬৫দিন। হাসিনা সরকারের পতনের পর ইসলামি ব্যাংকে দুই বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে সেলফ চেক দিয়ে ২ হাজার কোটি টাকা তোলার চেষ্টা করে আওয়ামী লীগের নেতারা। ব্যাংকের অফিসাররা বিষয়টি বুঝতে পেরে ট্রানজাকশন বন্ধ করে দেয়। আর সেই ঘটনার প্রতিক্রিয়াতেই এবার রবিবার ঢাকার ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গুলির চলল। ব্যাংকটির ৪ জন কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বিশৃঙ্খলা তৈরি করার চেষ্টা করতে জোর করে ব্যাংকের মধ্যে ঢুকতে গেলে বাধা দেওয়া হয়। তারপরই গুলি চলে। ঘটনায় আহত হন ইসলামী ব্যাংকের গোডাউন গার্ড (ডিজি) শফিউল্লাহ সরদার, অফিসার মামুন, আব্দুর রহমান ও বাকী বিল্লাহ। বাংলাদেশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর এই সংঘর্ষের নেপথ্যে রয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি কালো টাকা। হাসিনা জমানায় আওয়ামী লিগের প্রথম সারির নেতারা তাদের দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জন করা কয়েক হাজার কোটি টাকা দুই বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে এই ইসলামি ব্যাঙ্কেই গচ্ছিত রাখেন। লিগ ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের সংস্থার মাধ্যমেই চলত টাকার লেনদেন। হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর এই নেতারা পড়েন ফাঁপড়ে। সূত্রের খবর, গত বুধবার গোল্ডেন স্টার এবং টপ টেন ট্রেডিং কোম্পানী নামে দুটি সংস্থায় ২০০০ কোটি টাকা ট্রান্সফার করানোর চেষ্টা হয়। সেলফ চেক দিয়ে সম্পূর্ণ টাকা তুলে ফেলার চেষ্টা করা হয়। সন্দেহ হয়। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমর্থনকারী ব্যাংকের আধিকারিকরা বিষয়টা বুঝতে পেরেই ওই টাকা আটকে দেয়। খোঁজ নিয়ে দেখা যায় এই দুই সংস্থা হাসিনার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এস আলম গ্রুপের। আরো তদন্ত করতে বেরিয়ে আসে হাসিনা পালানোর পর ইতিমধ্যে ৯০০ কোটি টাকার সন্দেহজনকভাবে ট্রান্সফার হয়েছে, যার বেশীরভাগ ঢুকেছে এই এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন সংস্থায়। এই গ্রুপের সব সংস্থার টাকা আটকে দেওয়ার পরই প্রথমে বিক্ষোভ দেখানো হয় ব্যাংকের সামনে। এরপর এস আলম পন্থী বেসরকারি সংস্থা আওয়ামী লীগের দুষ্কৃতীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বহিরাগত এনে ইউনূস সেন্টারের দিক অস্ত্রসহ নিয়ে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে। ইসলামী ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, গত কয়েকদিনে এস আলম পন্থীরা ব্যাংকে ঢুকতে পারেনি। তবে রবিবার বহিরগত অস্ত্রধারী এনে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে। ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করলে বাধা দেওয়ায়। এর পরই ব্যাংক কর্মী ও নিরাপত্তা রক্ষীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় তারা।
ইন্টারনেট শাটডাউনের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা জানালেন নাহিদ ইসলামঅন্তর্বর্তী সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ইন্টারনেট শাটডাউনের কারণ বের করতে তদন্ত করা হবে। পাশাপাশি এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নাহিদ ইসলাম বলেন, ইন্টারনেট ব্যবহার ডিজিটাল অধিকারে পরিণত হয়েছে। এটি একটি মানবাধিকারের বিষয়। বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখেই ইন্টারনেট বন্ধ বা সীমিত করতে হবে। যাতে কারও মানবাধিকার লঙ্ঘিত না হয় এবং তথ্যের অবাধ প্রবাহ থাকে। কথায় কথায় ইন্টারনেট বন্ধ করা চলবে না। তারুণ্য নির্ভর আইসিটি খাত গঠনে কাজ করা হবে। কোনও প্রকার দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের সরকারের টেলিযোগাযোগ তথ্য প্রযুক্তি সাবেক মন্ত্রী জুনেদ আহমেদ পলক বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল বলেই জানা গিয়েছে। কয়দিন আগেই তাকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়। লুকিয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে আসার চেষ্টা করছিল হাসিনার মন্ত্রিসভার সাবেক মন্ত্রী। যেদিন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতা তথা টেলি যোগাযোগ মন্ত্রী নাহিদ আরও বলেন, এই আন্দোলনের মটো ছিল মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা। সেজন্য প্রশাসনে যারা কাজ করছে তারাও যেন মেধার ভিত্তিতে সুযোগ পায় সেই চেষ্টা করা হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবশ্যই জিরো টলারেন্স নীতি বজায় থাকবে।আইসিটি সেক্টরে তরুণদের কাজের একটি বড় সুযোগ আছে। দেশে এমন তরুণ সংখ্যায়ও ব্যাপক। এখন তাদের সঙ্গে সংযুক্তি প্রয়োজন। যারা অভিজ্ঞ তাদের সঙ্গে একটি সংযোগ ঘটানো হবে। কারণ তথ্য প্রযুক্তির বিপ্লবের নেতৃত্ব দিতে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম সক্ষম। শুধু প্রয়োজন তাদেরকে সেই সুযোগ করে দেওয়া।