৩৬৫দিন। হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নাকি অত্যাচার চালানো হচ্ছে। কিন্তু আসলে তা ভারতীয় মিডিয়ার একাংশের মিথ্যা প্রচার বলে দাবি করে নিজের ভিডিও বার্তায় সত্য ঘটনা প্রকাশ্যে এনেছেন বাংলাদেশের হিন্দু জাতীয় জোট সংগঠনের সভাপতি রবীন্দ্র প্রামানিক। ওই ভিডিও বার্তা প্রকাশের পরই আমাদের তরফে ঢাকা থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ওই কট্টরপন্থী হিন্দু নেতা গোবিন্দবাবু বলেন, সোমবার হাসিনা সরকার ক্ষমতার থেকে চলে যাবার পর সকলেই ভেবেছিল বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর অত্যাচার হবে। কিন্তু সকলে মিলে হিন্দুদের রক্ষা করতে হাতে হাত মিলিয়ে একসঙ্গে এগিয়ে এসেছে। মন্দির হোক বা হিন্দু পাড়া, সেখানে যাতে কোনো সাম্প্রদায়িক হামলা না হয় তার জন্য পাহারা দিচ্ছে স্থানীয় মুসলিম ভাইরা। আক্রমণ হয়েছে কিছু আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়ির উপর। যারা হাসিনার হয়ে রাজনীতি করার সময় এলাকায় দাদাগিরি করত। বাংলাদেশের কোন মন্দিরে আক্রমণ করা হয়নি। কিন্তু দেখলাম ভারতের একাংশের মিডিয়া মিথ্যা প্রচার করছে। এটা খুবই নিন্দনীয়।
রাতে আসছেন ইউনুস, ১০ বাদ দিয়ে কোন নাম চূড়ান্ত হয়নিবুধবার রাতেই প্যারিস থেকে বাংলাদেশে ফিরছেন নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ডক্টর মহম্মদ ইউনুস। তাকে বাংলাদেশের স্বাগত জানাতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হাজির থাকবেন কয়েক হাজার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা। ইতিমধ্যেই পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গড়ার নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। আন্দোলনকারী সমন্বয়ক ও জনতার প্রস্তাব মত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে থাকবেন মহম্মদ ইউনুস। ঢাকা সূত্রে জানা গিয়েছে,শেখ হাসিনা, নো খালেদা ফর্মুলায় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হতে চলেছে তার নেতৃত্বে থাকবেন ১০ জন (যাদের নাম মঙ্গলবার খবর ৩৬৫ দিনের বুলেটিনে ও বুধবার সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে)।এই ১০ জনের বাইরে আপাতত আর কোন নাম চূড়ান্ত করা হয়নি বলে জানা গিয়েছে। এর মধ্যে সেনার প্রাক্তন কর্তারা ছাড়াও রয়েছেন বাংলাদেশের সুশীল সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।প্রস্তাবিত সরকারের প্রতিটি ব্যক্তি উচ্চশিক্ষিত, সংবেদনশীল, দুর্নীতি বিরোধী ও প্রগতিশীল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে থাকবেন - ডক্টর সালিমুল্লাহ খান, ডক্টর আসিফ নজরুল, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মহম্মদ আব্দুল ওয়াহাব মিয়া, অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৈয়দ ইফতেকার উদ্দিন, ডক্টর দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, মতিউর রহমান চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম শেখাওয়াত হোসেন, ডক্টর হোসেন জিলুর রহমান ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এমএ মতিন। এদের মধ্যে ড. সালিমুল্লাহ খান এই ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ছিলেন। ডক্টর দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য হলেন বাংলাদেশের অর্থনীতি ভিত্তিক সুশীল সমাজ সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের প্রতিষ্ঠাতা। এই সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগই সর্বপ্রথম বাংলাদেশে সরকারি নথিভুক্ত ভোটার তালিকার কথা বলেছেন।
হাসিনা পাপ করেছেন, অন্যায় করেছেন, ওকে শাস্তি পেতে হবে কিন্তু তার পাপের দায় কেন বঙ্গবন্ধু মুজিবরকে নিতে হবে - দুষ্কৃতী হামলায় ভষ্মীভূত বঙ্গবন্ধুর ৩২ ধানমণ্ডির বাড়ি তথা মিউজিয়াম পরিদর্শন করে মন্তব্য বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকীর। সোমবার হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশ ছেড়ে পালানোর পর হামলা হয় বঙ্গবন্ধু মিউজিয়ামে। বুধবার ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া মিউজিয়াম ঘুরে দেখেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রথম সারির যোদ্ধা বাঘা সিদ্দিকী। তিনি বলেন, যারা বঙ্গবন্ধু মুজিবের বাড়িতে হামলা চালালো তারা ছাত্র হতে পারে না। এরা বাংলাদেশের ইতিহাস জানেনা। মুজিবকে চেনেনা। এরা দুষ্কৃতী। হাসিনাকে উৎখাত করে বিপ্লবের জয় হয়েছে এর সুযোগ নিতে চাইছে এই দুষ্কৃতীরা। বিপ্লবকে ছাত্র আন্দোলনকে বদনাম করতে চাইছে। ছাত্রদের প্রতি আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, তোমরা দায়িত্ব নাও। লাঠি হাতে পাহাড়া দাও। বঙ্গবন্ধুর ওপর যেন আর একটাও হামলা না হয়। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট দেশের জন্য যে সপরিবার প্রাণ দিল তার ঘাড়ে তার মেয়ে হাসিনার দুঃশাসনের দায় চাপিয়ে অপমান করো না। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানিয়ে তাঁর পরামর্শ, এখন আর আলাপ আলোচনায় সময় নষ্ট করলে চলবে না। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অবিলম্বে সরকারের প্রধান হিসাবে মহম্মদ ইউনূসকে দায়িত্ব নিতে হবে। কড়া হাতে সরকার এবং প্রশাসনের রাশ ধরতে হবে না হলে আন্দোলনের সুযোগ নেবে দুষ্কৃতীরা। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য তারা বাংলাদেশের বদনাম করবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এক সফল এবং অভূতপূর্ব বিপ্লব হয়েছে, এর রাশ যাতে দুষ্কৃতীদের হাতে না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে।