জাস্টিস চাওয়ার নামে দুর্বৃত্তদের বনধ তান্ডব
৩৬৫দিন। নবান্ন অভিযানের পর এবার ১২ ঘণ্টার ভাজপার ডাকা ধর্মঘটও সুপার ফ্লপ হল। স্কুল, কলেজ থেকে শুরু করে সরকারি, বেসরকারি অফিসে আর পাঁচটা দিনের মতোই চলল কাজ। আবারো প্রমাণিত হল সিপিএমের আমলের বনধের সংস্কৃতি বাংলার মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। সর্বত্র লোক রাস্তায় নেমে ধর্মঘটের প্রতিবাদ করায় বেশ কয়েকটি জায়গায় জোর করে বনধ পালনের চেষ্টা করতে পথে নামে ভাজপা। জোর করে দোকান, স্কুল ও মেট্রোর গেট বন্ধ করার চেষ্টা করে ভাজপা আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। মানুষের প্রতিরোধের মুখে পরে ভাজপাকে পিছু হটতে হয়। এদিন সকালে নির্দিষ্ট কিছু এলাকা চিহ্নিত করে ধর্মঘট সফল করতে সন্ত্রাস চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছিল কেন্দ্রীয় শাসক দলের একাংশ। কিন্তু বেলা বাড়তেই আর পাঁচটা দিনের মত যেভাবে সাধারণ জনগণ রাস্তায় নামতে থাকে তা দেখা মাত্রই কোনো এলাকায় গুন্ডামি করার আর সাহস দেখাতে পারেনি শুভেন্দু -সুকান্তারা।
জোর করে ধর্মঘট করতে সন্ত্রাস ভাজপারভাজপার বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই দুর্গাপুর বেনাচিতি বাজারের দোকানপাট বন্ধ করার চেষ্টা করলে তৃণমূল নেতাকর্মীদের বাধা দিলে পিছু হটে যায় সে। হাওড়ার পঞ্চানন তলায় বিজেপি কর্মীরা জোর করে দোকান বন্ধের চেষ্টা করলে তৃণমূল কর্মীরা বাধা দেন। এদিকে উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়ায় ভাজপার ডাকা বনধকে তোয়াক্কা না করেই বহু মানুষ রাস্তায় নামে। অর্জুন সিং এর ঘনিষ্ঠরা এলাকায় ধর্মঘটের সন্ত্রাস বজায় রাখতে গুলি চালায়। ঘটনায় দুজন আহত হয়েছেন। যদিও সাধারণ মানুষ পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলায় শেষ পর্যন্ত এলাকা থেকে সরে যেতে হয় অর্জুন সিং এর ঘনিষ্ঠদের। ধর্মঘটকে উপেক্ষা করে সকাল থেকেই যখন স্কুল,কলেজের জন্য রাস্তায় বেরোতে থাকে ছাত্র-ছাত্রীরা, তখন স্কুল পড়ুয়াদের ভয় দেখাতে শুরু করে ভাজপা। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে। জানা গিয়েছে, মহেশ্বরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় সামনে দিয়ে মিছিল বার করেছিল ভাজপা। সেই সময় স্কুল যাচ্ছিল কয়েকজন ছাত্রী। তাদের স্কুলে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। স্কুলের গেটে দলীয় পতাকা বেঁধে তালা মেরে দেওয়া হয়। ছাত্রীদের স্কুলে ঢুকলে আদর করা হয় বলেও হুমকি দেন এক ভাজপা নেত্রী। অন্যদিকে বুধবার বনধের সমর্থনে হুগলি জেলার মানকুন্ডু স্টেশনে রেল অবরোধ করে ভাজপা আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বলে অভিযোগ। নিত্যযাত্রীদের চরম অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়। খবর পাওয়া মাত্র ঘটনাস্থলে হাজির হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার অভিযোগ ওঠে ভাজপা আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে ছত্রভঙ্গ হয়ে পরে আন্দোলনকারীরা। মুহূর্তের মধ্যেই ট্রেন চলাচল শুরু হয় এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে ফুল বাসে আগুন লাগানোর চেষ্টা করে ভাজপা আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। এই অবস্থায় স্থানীয় সাধারণ মানুষ এবং এলাকার পুলিশ সকলে মিলে আন্দোলনকারীদের থামিয়ে দেয়। ফলে প্রাণে বাঁচে অসংখ্য ফুল পড়ুয়ারা। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে।
মানুষের প্রতিবাদে ভাজপার ট্রেন অবরোধ ফেলসকালে কৃষ্ণনগর-লালগোলা সেকশনের জিয়াগঞ্জে, রানাঘাট-আড়ংঘাটা সেকশনের পাঁচবেড়িয়ায়, ডায়মন্ডহারবারের সংগ্রামপুর ডাউন লাইনে কলাপাতা ফেলে অবরোধ করলেও নিমিষেই সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ করায় অবরোধ হযটাতে বাধ্য হয় ভাজপা। কৃষ্ণনগরের কালীনারায়ণপুর, কল্যাণী সীমান্ততে কলাপাতা ফেলে অবরোধ করা হয় কিছুক্ষনের জন্য। শিয়ালদা মেইন লাইনের রানাঘাট নৈহাটি সেকশনে মদনপুর, শান্তিপুর, বারাকপুর, বেলঘড়িয়া, সোদপুরে কলাপাতা ফেলে অবরোধ করার চেষ্টা করলেও কয়েক মিনিটের মধ্যেই ভাজপাকে লাইন থেকে সরে যেতে হয়। কল্যাণীতে জোর করে দোকান বন্ধ রাখতে চেষ্টা করে ভাজপা নেতৃত্ব। একটি অটোমোবাইলসের দোকানে গিয়ে হেলমেট লুট করে ভাজপা আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। দোকানদার বাধা দেওয়া সত্বেও কোন বাধা শোনেনি ভাজপা নেতৃত্বরা। বনধের নামে দোকানে লুট চালায় তারা। পরে দোকানদার থানায় গিয়ে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে।