৩৬৫ দিন। গরু পাচারের গুজবে স্কুল ছাত্রকে গুলি করে খুন! ফের গোরক্ষকদের তান্ডব হরিয়ানায়। ২৩ আগস্ট খুনের ঘটনা ঘটলেও সম্প্রতি তা সামনে আসে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, নিহত ছাত্র দ্বাদশ শ্রেণীতে পাঠরত ছিলেন। ২৩ আগস্ট দুই বন্ধু হর্ষিত এবং শ্যাঙ্কিকে নিয়ে গাড়িতে একটি রেস্তোঁরায় যাওয়ার কথা ছিল নিহত ছাত্র আরিয়ান মিশ্রার। আচমকা তাদের গাড়ি ধাওয়া করতে শুরু করে অন্য একটি গাড়ি। ছিনতাইয়ের আশঙ্কায় গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেন হর্ষিত। কিছু সময় পরে সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিকটবর্তী পালওয়াল টোল প্লাজায় গিয়ে ধাক্কা মারা। ওই সময়ই পিছনের গাড়িটি থেকে গুলি ছোড়া হয়। হর্ষিত গাড়ি থামালেও শেষরক্ষা হয়নি। আরিয়ানের বুক লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। সেখানেই লুটিয়ে পড়েন ওই ছাত্র। ঘটনার তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ গো রক্ষকদের হামলার বিষয়টি চেপে যায়। বার বার তাদের তরফে দাবি করা হতে থাকে পুরনো কোনও শক্রুতার জেরে এই হামলা। কিন্তু পরে সামনে আসা আসল ঘটনা। জানা গিয়েছে, হামলার পেছনে রয়েছে গোরক্ষকদের একটি দল। এই দলের ৫ জনকে গ্রেফতারের পর জানা যায় তাদের কাছে নাকি খবর ছিল একটি গাড়িতে করে গরুর মাংস পাচার হচ্ছে। তাদের সন্দেহ গিয়ে পড়ে আরিয়ানের গাড়ির ওপর। তারা ধাওয়া করে সেই গাড়ি। আরিয়ানরা গাড়ির গতি আরও বাড়িয়ে দিলে সেই সন্দেহ আরও জোরালো হয়। তারপরেই তারা গাড়িতে গুলি চালায়। গোটা ঘটনায় প্রবল ভাবে প্রশ্নের মুখে হরিয়ানা সরকার এবং প্রশাসনের ভুমিকা। ফরিদাবাদ পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত পাঁচ গোরক্ষক হলেন অনিল কৌশিক, বরুণ, কৃষ্ণ, আদেশ এবং সৌরভ। অভিযুক্তরা জানিয়েছেন, গাড়িতে গরু পাচারের আগে পাচারকারীরা গাড়ি নিয়ে গোপনে এলাকা পরিদর্শন করবেন বলে তাঁদের কাছে খবর ছিল। সেই কারণে তাঁরাও টহল দিচ্ছিলেন ফরিদাবাদের রাস্তায়। আরিয়ানদের ভুল করে পাচারকারী ভেবে ফেলাতেই এই ঘটনা। তবে অভিযুক্তদের যাবতীয় দাবি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। কয়েকদিন আগেই গোমাংস খাওয়ার অভিযোগে বাসন্তীর বাসিন্দা সাবির মল্লিককে পিটিয়ে মারা হয়। তারপর কার্যত হামলাকারীদের পাশে দাঁড়িয়ে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী নায়েব সিং সাইনি বলেন, গরুর প্রতি শ্রদ্ধা থেকে খুন করলে কে কি করবে! মুখ্যমন্ত্রীর এই সাফাইয়ের দু'দিন পর ফের সামনে এল গোরক্ষকদের তান্ডবের আরও এক ঘটনা। যেখানে এক স্কুল ছাত্রকে গুলি করে মারা হল। বিরোধীদের আশঙ্কা, পরিস্থিতি যে জায়গায় যাচ্ছে তাতে গোরক্ষার নামে দুষ্কৃতী রাজ চলবে। ভাজপা এবং আর এস এসের প্রত্যক্ষ মদতে এই সব হচ্ছে। আসলে ভোটের আগে মেরুকরণ আরও তীব্র করতে গোরক্ষার জিগির তোলা হচ্ছে নীরিহদের খুন করা হচ্ছে।
