আলিপুরে তিন ঘন্টার জটিল অস্ত্রোপচারের পর পুরুষ জলহস্তীর মৃত্যু

৩৬৫ দিন। আলিপুর চিড়িয়াখানায় সঙ্গীহীন জলহস্তি। দাঁতের জটিল অপারেশনের পর অসুস্থতার জেরে ৪২ বছর বয়সে আলিপুর চিড়িয়াখানায় মৃত্যু হল এক পুরুষ জলহস্তির। এতদিন যাবৎ আলিপুর চিড়িয়াখানায় ২ টি জলহস্তি ছিল। এই দুই জলহস্তিরই বেশ বয়স হয়েছিল। তবে অসুস্থতার জেরে একটি জলহস্তি মারা যাওয়ায় মনমরা অন্য জলহস্তিটি। অন্যদিকে আলিপুর চিড়িয়াখানা হারাল তাঁদের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১৬ অগস্ট জলহস্তীর এনক্লোজ়ারেই ৩ ঘণ্টার অপারেশন চলেছিল। অস্ত্রোপচারের পর জ্ঞানও ফিরেছিল ওই পুরুষ জলহস্তীর।তবে তার কিছু সময় পরে এনক্লোজারেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে বছর ৪২-এর ওই জলহস্তী। তবে অস্ত্রোপচারের পরে কেন মারা গেল ওই জলহস্তি। চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১০ বছর ধরে পুরুষ জলহস্তিটি দাঁতের সমস্যায় কষ্ট পাচ্ছিল। জলহস্তির নীচের চোয়ালের দুই দিকে থাকা ক্যানাইন বাড়ছিল। দিনে দিনে সেটা নাকের পাশের চামড়া ফুটো করে ঢুকে প্রায় মস্তিষ্ক পর্যন্ত গভীর ক্ষত তৈরি করে। দাঁত নাড়ালেই সেই ক্ষতে আঘাত লাগছিল। মুখ খুলতে গেলেই গলগল করে বেরোচ্ছিল রক্ত। ঠিক করে খাওয়া দাওয়া করতে পারছিল না। এই সমস্যা নিয়ে দেশের বিভিন্ন এক্সপার্টের সঙ্গে কথা বলা হয়। একটা মেডিক্যাল বোর্ডও গঠন করা হয়। যেখানে চিড়িয়াখানার চিকিৎসক, রাজ্যের অ্যানিম্যাল রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের চিকিৎসক, আরও বিশেষজ্ঞ-উপদেষ্টারা ছিলেন। জুলাই মাসেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ১৬ অগস্ট ওই পুরুষ জলহস্তির অপারেশন করা হবে। যেহেতু শুক্রবার চিড়িয়াখানা বন্ধ থাকে। সেক্ষেত্রে শুক্রবার দিনটিকেই বেছে নেওয়া হয়। এনক্লোজারের ভিতরে আলাদা কোয়ারান্টিন সেট-আপ করে জলহস্তির অস্ত্রোপচার সময়ে সবাই ছিলেন। সব রকমের পদ্ধতি নিয়ম অনুসরণ করেই জলহস্তীটির চিকিৎসা চলছিল। তাতে সে সাড়াও দিয়েছিল। তবে শেষ রক্ষা হল না । তবে অস্ত্রোপচার শেষে শনিবার ভোর নাগাদ ওই জলহস্ত্রী মারা যায়। আপাতত জলহস্তীটির দেহের ময়নাতদন্ত, বায়োপসি এবং প্যাথোলজিক্যাল রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছেন আলিপুর কর্তৃপক্ষ। প্রসঙ্গত, দুটি জলহস্তির মধ্যে একটি মারা গেলেও অন্য জলহস্তিটি রয়েছে তারও বেশ বয়স হয়েছে। অন্য জলহস্তিটির বয়স প্রায় ৩২ এর আসেপাশে। আলিপুর চিড়িয়াখানার অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু জলহস্তি তা একেবারেই সত্যি। সাধারণ মানুষ জলহস্তীদের দেখতে ভীষণ পছন্দ করেন। পুরুষ জলহস্তির মৃত্যুর খবর মন খারাপ পশুপ্রেমী থেকে সাধারণ মানুষের।