কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর
৩৬৫ দিন। সাধারণ মানুষের জীবন বীমা ও স্বাস্থ্য বীমার উপরে যেভাবে জনবিরোধী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কেন্দ্রীয় সরকার ১৮ শতাংশ জিএসটি চাপিয়েছে, তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করুন। নতুন কর কাঠামোয় ৮০সি ও ৮০ডি ধারায় ছাড়ের নিয়ম ফিরিয়ে আনুন। এমন দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে চিঠি দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এর আগেই তৃতীয় মোদি সরকারের পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ হওয়ার পর থেকে লোকসভা এবং রাজ্যসভায় বাজেট আলোচনার সময় তৃণমূল সাংসদদের পক্ষ থেকেও বারে বারে একই দাবি তোলা হয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে। গতকাল মমতা এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অবিলম্বে জীবন বীমায় এবং স্বাস্থ্য বীমার উপর থেকে ১৮ শতাংশ জিএসটি প্রত্যাহারের দাবী তোলার পাশাপাশি কেন্দ্র দাবি না মানলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন। এবারে সরাসরি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিলেন নতুন কর কাঠামোয় স্বাস্থ্য বীমা এবং জীবন বীমার উপর থেকে এই বর্ধিত জিএসটি প্রত্যাহারের জন্য।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে পাঠানো চিঠিতে মমতা লিখেছেন, জীবন বীমা এবং স্বাস্থ্য বীমার উপরে যেভাবে ১৮ শতাংশ জিএসটি চাপানো হয়েছে তা অত্যন্ত জন বিরোধী সিদ্ধান্ত। সেই সঙ্গে নতুন কর কাঠামোয় ৮০সি ও ৮০ডি ধারায় যেভাবে ছাড় তুলে দেওয়া হয়েছে তা সাধারণ মানুষকে বিপদে ফেলবে। কারণ অত্যন্ত জরুরি পরিস্থিতির জন্যই সাধারণ মানুষ জীবন বীমা বা স্বাস্থ্য বীমা করায়। কোন ব্যক্তি অসুস্থ হলে অথবা পরিবারে কারুর মৃত্যু হলে এই বীমার টাকায় সেই পরিবারের সহায়তা করতে পারে। কিন্তু জীবন বীমা এবং স্বাস্থ্য বীমার মত দৈনন্দিন জীবনে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় জিনিসের উপরে বিপুল হারে জিএসটি সাধারণ মানুষের উপরে বাড়তি আর্থিক বোঝা চাপাবে। এই অতিরিক্ত বোঝা অনেক ব্যক্তির কাছে নতুন পলিসি গ্রহণ বা পুরনো বিমা কভারেজ পুনর্নবীকরণ করে চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে। তবে শুধু জীবনবিমা নয়, স্বাস্থ্যবিমার উপর থেকে জিএসটি সরানো নিয়েও সরব হয়েছেন মমতা।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, কৃষক ও শ্রমিক থেকে শুরু করে সমাজের সর্বস্তরের নাগরিকের জন্যই জীবন ও স্বাস্থ্য বিমা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তা থেকেই স্পষ্ট যে, স্বাস্থ্য ও জীবনবিমার উপরে বর্ধিত হারে জিএসটি-র বোঝা চাপানো সাধারণ মানুষকে আরও বেশি মানসিক চাপ ও উদ্বেগের মধ্যে ফেলবে। আমার অনুরোধ, বেশি সংখ্যক মানুষকে স্বাস্থ্য বীমা এবং জীবন বীমার আওতায় আনার জন্য এই বিপুল হারে জিএসটি অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হোক এবং সাধারণ মানুষের মানসিক শান্তি ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য নতুন কর কাঠামোয় ৮০সি ও ৮০ডি ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হোক।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে মমতার চিঠি পাঠানোর পাশাপাশি আজ জীবন ও স্বাস্থ্য বিমা থেকে জিএসটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে সংসদে সরব হন তৃণমূল সাংসদরা। লোকসভা থেকে ওয়াক আউটও করেন তাঁরা। লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, জীবন বীমা ও ওষুধের উপরে ১৮ শতাংশ জিএসটি প্রত্যাহার করতে হবে। আমরা দাবি জানিয়েছি, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে সংসদে আসতে হবে। আমাদের কন্ঠ রোধ করার জন্য আজ দু'বার মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের ওয়েলে নামতে হয়েছে।