নির্যাতিতার বাবাকে শুভেন্দুর নির্লজ্জ প্রস্তাব
৩৬৫ দিন। আমি অনুরোধ করব ওনার বাবাকে, জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে নবান্ন যাওয়ার ডাক দিন ওনার বাবা। ওনার বাবাকে আসতে হবে না। বয়স্ক মানুষ, শোকাতুর হৃদয় নিয়ে আছেন। আমরা বাকিটা যা করার করে দেব জাতীয় পতাকা নিয়ে। আরজিকর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নির্যাতিতার বাবার উদ্দেশ্যে এভাবেই খোলা প্রস্তাব দিলেন ভাজপা নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার সঙ্গেই প্রমাণিত হয়ে গেল ভারতীয় জনতা পার্টির মূল উদ্দেশ্য আরজিকরের নির্যাতিতার বিচার নয়, মমতার হাত থেকে ক্ষমতা দখল। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে অথবা ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাংলার মানুষ ভাজপা কে প্রত্যাখ্যান করে মমতার সরকারের উপরেই আস্থা রেখে বিপুল সংখ্যক ম্যান্ডেট দেওয়া সত্ত্বেও ভোট বাক্সে শূন্য হয়ে যাওয়া সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এভাবেই বাংলার ক্ষমতা দখলের অপচেষ্টায় মেতে উঠেছে ভাজপা। জাতীয় পতাকার আড়ালে ভাজপার গুন্ডামি শুভেন্দু অধিকারী যেমন আরজিকরের আন্দোলনের মুখ ঘুরিয়ে নবান্ন গুন্ডামি করার পরিকল্পনা ফাঁস করেছেন সেখানে ভাজপা কর্মী সমর্থক বা নেতাদের হাতে ভাজপার পতাকা না রেখে বিষয়টিকে গণআন্দোলন বোঝানোর জন্য জাতীয় পতাকা হাতে ছদ্মবেশ নেওয়ার পরিকল্পনাও ফাঁস হয়ে গিয়েছে। ঠিক এই মোডাস অপারেন্ডি মেনেই স্বাধীনতা দিবসের আগের রাতে ১৪ই অগাস্ট মধ্যরাতে মহিলাদের আন্দোলনকে সামনে রেখে জাতীয় পতাকা হাতে নিয়েই সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওআইএফআইয়ের বেশ কিছু গুন্ডাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে আরজিকর হাসপাতাল ভাঙচুর করেছিল ভাজপা কর্মী সমর্থক এবং ভাজপা আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। এই একই ছক মেনে গতকাল যুবভারতী স্টেডিয়াম এর সামনেও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুলিশকে আক্রমণের জন্যে বাসে করে ভাজপা ও সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতিদের বিভিন্ন জায়গা থেকে নিয়ে এসে তাদের পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগানের জার্সি। কি বলেছেন শুভেন্দু এবং কলকাতা পুলিশের হাত থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এর হাতে আরজিকরের ঘটনার তদন্তভার চলে যাওয়ার পরে ছদিন কেটে যাওয়া সত্বেও তদন্তে কোন অগ্রগতি না হওয়ায় এবারে সাধারণ মানুষের নজর ঘোরানোর জন্য মৃতার বাবাকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের পরিকল্পনা ফেঁদেছেন শুভেন্দু। শুভেন্দুর দাবি, আরজি কর কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে জাতীয় পতাকা হাতে নবান্ন অভিযানের ডাক দিন নির্যাতিতা চিকিৎকসের বাবা। বাকিটা আমরা বুঝে নেব। আজ বিমানবন্দরে নির্যাতিতা মহিলা চিকিৎকের বাবার কাছে এই আহ্বান জানিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, রাজনৈতিক দলের অনেক বাধ্যবাধকতা থাকে। তাই তারা চাইলেও সব সময় নবান্ন অভিযানের ডাক দিতে পারে না। আমি অনুরোধ করব ওনার বাবাকে, জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে নবান্ন যাওয়ার ডাক দিন ওনার বাবা। ওনার বাবাকে আসতে হবে না। বয়স্ক মানুষ, শোকাতুর হৃদয় নিয়ে আছেন। আমরা বাকিটা যা করার করে দেব জাতীয় পতাকা নিয়ে। আমাদের একটা বাধ্যবাধকতা রয়েছে, সমস্ত রাজনৈতিক দলেরই রয়েছে, তাই আমরা এই ডাক দিতে পারছি না। উনি একটা ডাক দিন, যে মুখ্যমন্ত্রী যদি ২৫ তারিখের মধ্যে পদত্যাগ না করেন তাহলে আপনারা নবান্ন চলুন, জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে। প্রসঙ্গত এর আগেও নবান্ন অভিযানের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন শুভেন্দু। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শুভেন্দুর সেই পরিকল্পনা মাঠে মারা যাবে বলে তাতে সায় দেয়নি রাজ্য ভাজপা। তাই এবারে কৌশল বদল করে মৃতার বাবাকে ব্যবহার করতে নেমে পড়লেন শুভেন্দু অধিকারী।