ওস্তাদের মার শেষ রাতে, প্রচার শেষের আগে নির্বাচনী বিধি মেনে দেব এর বিস্ফোরক সাংবাদিক সম্মেলন
৩৬৫দিন। লাগাতার কুৎসা, ব্যক্তি আক্রমন, কদর্য ভাষায় গালমন্দ হব সয়ে চুপ ছিলেন মুখ খুললেন ভোেট প্রচারের শেষে। সাংবাদিক বৈঠকে দেব ফাঁস করলেন প্রতিপক্ষ ভাজপা প্রার্থী হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায় ওরফে হিরনের খড়গপুর আইআইটির ভুয়ো ডক্টরেটের কাহিনী। কত নম্বর নিয়ে কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাস করে, কবে খড়গপুর আইআইটিতে পিএইচডি করলেন হিরন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এদিকে, আম আদমি পার্টির অভিযোগ, তারা আরটিআই করে জানতে পেরেছে খড়গপুর আইআইটি থেকে পিএইচডি করা তো দূর, বিশ্ববিখ্যাত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ভাজপা প্রার্থী হিরনের কোন যোগই নেই। হিরনের প্রার্থী পদ প্রত্যাহার করার জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন জানাতে চলেছে আপ।
১. প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই দেব এর বিরুদ্ধে লাগাতার কুৎসা করে গেছেন ঘাটালের ভাজপা প্রার্থী। কখনো দেবকে আতঙ্কবাদী কিংবা খুনি বলা কখনো জনসমক্ষে অশিক্ষিত বলে অসম্মান করা আবার কখনো বান্ধবী রুক্মিণীকে নিয়ে দেবের বিদেশ যাত্রা নিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে গেছেন। ঘাটালে হিরনের ভোট প্রচারে উন্নয়নের কথা না থাকলেও ছিল শুধুমাত্র শালীনতার মাত্রা ছাড়িয়ে প্রবলভাবে ব্যক্তিগত আক্রমন করে দেবের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো। যদিও শান্ত,ভদ্র দেব হিরনকে পাত্তা না দিয়েই দলীয় প্রচার চালিয়ে গেছেন। হিরনের পাল্টা জবাব না দিয়ে সাধারণ মানুষের উন্নয়নের কথা বলেছেন তিনি।কিন্তু বৃহস্পতিবার যষ্ঠ দফার শেষ ভোট প্রচারের পর আইআইটির নামে হিরনের জাল ডক্টরেট ডিগ্রি ফাঁস করলেন ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী। বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার পর ভোট প্রচার শেষ করে চায়ের দোকানে বসে সাংবাদিক বৈঠক করে দেব বলেন, আজ হিরনের সব কীর্তি ফাঁস হয়ে গেছে। সবাইকে বলে বেরিয়েছে ও ডক্টরেট। মিথ্যাচার করে নামের আগে ডক্টরেট ব্যবহার করেছে। হিরন। ভোটের আগেই যে মানুষ প্রতিশ্রুতিতে ও এফিডেভিটে মিথ্যে ডক্টরেট বলে লিখেছে সেটা মানুষের জানা উচিত। দেশের এত বড় একটা প্রতিষ্ঠান খড়গপুর আইআইটিকে ছোট করা হয়েছে। সারা দিনরাত পরিশ্রম করে যারা ডক্টরেট পিএইচডিটা পায় কোথাও যেন তাদেরও ছোট করা হয়েছে। এটা খুব লজ্জাজনক ঘটনা। ভোটের প্রচার শেষ হয়ে গেছে। আমাদের হাতে আর কিছুই নেই শুধু একটাই কথা সাধারণ মানুষদের বলব, অসাধারণ মানুষের সামনে সত্য ও মিথ্যা রয়েছে। আপনারা জানেন কে মিথ্যে প্রচার করে মানুষের মন জয় করতে চায় আর কে সত্যি কথা বলে মানুষের কাজ করতে চায়। দুজন প্রার্থীর বায়োডাটা আপনাদের কাছে পরিষ্কার। এবার আপনারা যেটা ভালো বুঝবেন সেটা করবেন।
২. ঘাটালের ভাজপা প্রার্থীর কাছে প্রশ্ন, হিরন প্রকাশ্যে বলুক কত সালে স্নাতক পাস করেছে? কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কত শতাংশ নম্বর নিয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছে? তারপর তো পিএইচডির বিষয় আসছে। আইআইটি খড়গপুর ভারতের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ একাডেমিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম। খড়গপুর আইআইটির মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরেট করার ক্ষেত্রে প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে হয়। যা অন্যতম কঠিন প্রবেশিকা পরীক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রবেশিকা পরীক্ষার পাশাপাশি ইন্টারভিউ নেওয়া হয়। দুটিতেই পাশ করলে পিএইচডি করার সুযোগ মেলে। ১০ হাজারে মাত্র ১ জন আইআইটিতে সুযোগ পায়। শুধু তাই নয়, পিএইচডি এর প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসার ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট মাপকাঠি রয়েছে।
৩. হিরনের ডিগ্রি ভুয়ো, এই দাবি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে আম আদমি পার্টি (আপ)। শুধু তাই নয়, হিরণের প্রার্থীপদ খ ারিজের আবেদনও জানানো হয়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দলের তরফে। নির্বাচন কমিশনের কাছে হিরনের জমা দেওয়া হলফনামাতে অসংগতি রয়েছে, দাবি করেছে আপ। হলফনামায় নিয়ম মোতাবেক হিরণও নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন। সেখানে তিনি খড়গপুর আইআইটি থেকে গবেষণা করার তথ্য উল্লেখ করেছেন। আপের তরফে দাবি করা হয়েছে, সেই তথ্য ভুয়ো। তিনি আইআইটি থেকে গবেষণা করছেন না। তাঁরা তথ্যের আরটিআই করে খড়গপুর আইআইটি থেকে জানতে পেরেছেন যে হিরন কোন ডক্টরেট করেননি। এমনকি আইআইটির সঙ্গে হিরনের কোন যোগই নেই।
8. দেব সম্পর্কে হিরনের কুৎসার আরও একটি উদাহরণ তুলে ধরেছেন দেব নিজেই। তিনি বলেন, খড়গপুর ২ তে একজন আমাদের লোক মারা গেছিল, সেটা খুব দুঃখ জনক ব্যাপার। সেই মৃত্যুকে নিয়ে আমাদের বিরোধীদলের প্রার্থী হিরন বলেছিল, দেব খুনি, দেব আতঙ্কবাদী, দেবের দুহাতে রক্ত, দেব ইচ্ছা করে নিজেদের কর্মীকে খুন করিয়েছে। ইচ্ছা করে আমাদের ফাঁসানোর জন্য বলেছিল হাত বাধা ছিল, গায়ে মার ধরে দাগ ছিল। কিন্তু গতকাল মাননীয় কলকাতা হাইকোর্ট এই মামলা ডিসমিস করে দিয়েছে। বলেছে এটা কোন খুন নয়। দুর্ঘটনা বসত মারা গেছে এর সাথে কোন খুনের যোগ নেই। যদিও হিরণের পালটা যুক্তি, পিএইচডি-র ডিগ্রি না থাকলে তো আর পোস্ট পিএইচডি করা যায় না।