মিথ্যা বলছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথ্য দিয়ে প্রমাণ তৃণমূলের
৩৬৫ দিন। আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার পরেই মমতা দাবি তুলেছিলেন কঠোর আইন প্রণয়ন করে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে 15 দিনের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করার। তার উত্তরে কেন্দ্রের মোদি সরকারের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে বাংলায় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের সংখ্যা পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ করেছিলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এই দাবি যে সম্পূর্ণ অসত্য এবং বিভ্রান্তিমূলক তা আজ সকালেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়ে পরিসংখ্যান সহ জানিয়ে দিয়েছেন মমতা নিজেই। এবারে সংসদে পেশ করা কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান তুলে ধরে দেশের প্রত্যেকটি রাজ্যে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের সংখ্যা তুলে ধরলেন তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন। যেখানে দেখা যাচ্ছে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের সংখ্যার নিরিখে দেশের মধ্যে প্রথম তিনি রয়েছে বাংলা। শুধুমাত্র বাংলাতেই এমন আদালত রয়েছে ৮৮। যা দেশের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ।
ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের জাতীয় পরিসংখ্যানতৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন আজ সংসদে পেশ হওয়া যে পরিসংখ্যান প্রকাশ্যে এনেছেন সেখানে দেখা যাচ্ছে গোটা দেশের মধ্যে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের সংখ্যার নিরিখে প্রথম তিনে রয়েছে মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ এবং বাংলা। বাংলায় যেখানে এমন আদালতের সংখ্যা ৮৮, সেখানে ভাজপা শাসিত অসমে মাত্র ১৬, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে থাকা রাজধানী দিল্লিতে মাত্র ৬, ২০২১ সাল পর্যন্ত গুজরাটে একটিও না থাকলেও একুশের পরে চালু হয়ে বর্তমানে রয়েছে ৫৪। তবে বাংলায় ৮৮ এর বেশি এমন আদালত বানানো হয়নি বলে যেখানে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে ফেলেছেন সেখানে তারা ভুলে গিয়েছেন এখনো পর্যন্ত দেশের বেশ কয়েকটি ভাজপাশাসিত রাজ্যে একটিও ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের কোন অস্তিত্ব নেই। যে তালিকায় রয়েছে - ওড়িশা, রাজস্থান, মেঘালয়, বিহার ও মধ্যপ্রদেশ। এমনকি বাংলায় যেখানে সিপিএম এবং কংগ্রেস ওই ওয়ান্ট জাস্টিস বলে ভারতীয় জনতা পার্টির পেছনে পেছন দৌড়াতে শুরু করেছে। তাদের শাসনে থাকা কেরালাতে বা কর্নাটকে অস্তিত্ব নেই একটিও ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের।
মমতার দেওয়া পরিসংখ্যানবাংলায় দ্রুত বিচারের জন্য তৈরি হওয়া ফাস্ট ট্র্যাক স্পেশাল কোর্ট সম্পর্কে আজ প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতেও মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ১০ বিশেষ পকসঝ আদালত রাজ্য সরকার অনুমোদিত হয়েছে। এর পাশাপাশি, ৮৮ ফাস্ট ট্র্যাক এবং ৬২ পকসো মনোনীত আদালত রাজ্য সরকারের তহবিলে রাজ্য জুড়ে সম্পূর্ণ ভাবে কাজ করছে, মামলার পর্যবেক্ষণ এবং নিষ্পত্তি সম্পূর্ণভাবে আদালতের হাতে রয়েছে। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা থাকলেও বাড়তি আদালত তৈরি করতে না পারার সীমাবদ্ধতা যে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের উপরে নির্ভরশীল সেই বিষয়টিও স্পষ্ট করে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আজ জানিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা অনুসারে, শুধুমাত্র অবসরপ্রাপ্ত বিচার বিভাগীয় অফিসারদের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে প্রিসাইডিং অফিসার হিসাবে নিয়োগ করা যেতে পারে তবে মাননীয় হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণ করেছেন যে মামলাগুলির তীব্রতার পরিপ্রেক্ষিতে, স্থায়ী বিচার বিভাগীয় অফিসারদের নিয়োগ করা প্রয়োজন। এর জন্য ভারত সরকারের স্তরে পরীক্ষা এবং তারপরে উপযুক্ত পদক্ষেপের প্রয়োজন, যার জন্য আপনার হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।