প্রচেত গুপ্তর গল্প আকাশ ৮ ধারাবাহিকে
৩৬৫ দিন। চাঁদের বাড়ি থেকে কিরণ কানন, এক ছাদের নিচে একসঙ্গে বাঁচার গল্প। চাওয়া, পাওয়া, দুঃখ, যন্ত্রণা, মান অভিমানের টুকরো টুকরো বিষয়গুলোকে ভালোবাসা দিয়ে জুড়ে ফেলার গল্প। সাহিত্যিক প্রচেত গুপ্তর মধুর হওয়া গল্প নিয়ে এবার বাংলা ধারাবাহিক তৈরি হয়েছে। সোম থেকে শনি সন্ধ্যে সাতটায় আকাশ আট চ্যানেলে দেখানো হবে এই ধারাবাহিক। প্রচেত গুপ্তর সাহিত্য সম্পর্কে পাঠকরা বলেন, তিনি সাধারণের গল্প বলেন। তাঁর চরিত্ররা কেউই লার্জার দ্যান লাইফ নয়। বরং ধূলাবালির জীবনে মাটির দেওয়াল গড়ে। ঝিলডাঙ্গা থেকে ভূপতি সেন কলোনি, ব্যারাকপুরের রেলস্টেশনের সাইকেল স্ট্যান্ড থেকে উত্তর কলকাতার গলিতে ছড়িয়ে আছে তার চরিত্ররা। তারা অতি সাধারণ, কখনও বিবর্ণ, অসহায়, হতাশাগ্রস্থ। আবার কখনও মিছিলে প্রতিবাদী, রেবেল মুন বা চন্দ্রাহত কিংবা তীব্র প্রেমিক। স্বল্প পরিসরে জীবন যুদ্ধে রক্তাক্ত হয়েও একটু একটু করে কুড়িয়ে নৈয় কুচি কুচি ভালোবাসা, মমতা, স্নেহ, উল্লাস। অতি স্বল্প আয়োজনে জৌলুসহীন সেই চরিত্ররা জীবনের জলতরঙ্গ শুনিয়ে যায়। তীব্র সংকেত দেয় মধ্যবিত্ত জীবনের ছাপোষা বিবর্ণতার মধ্যে
জীবনের ক্যালাইডোস্কোপের। এই সময়ের অন্যতম বলিষ্ঠ সাহিত্যিক প্রচেত গুপ্তর এহেন চরিত্ররা চলচ্চিত্র, টেলিভিশনের পর্দায় আসবে না, তা কী করে সম্ভব। শুরু করেছিলেন তরুণ মজুমদার। প্রচেত গুপ্তর চাঁদের বাড়ি অবলম্বনে তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। এরপর বালুকাবেলা ডট কম, নেকলেস, চোরের বউ। সাহিত্যনির্ভর বাংলা চলচ্চিত্রের সেই বিপুল সম্ভাবনার কথা ভেবেই এবার টেলিভিশনের বাংলা ধারাবাহিকে এবার সাহিত্যিকের মধুর হওয়া আসছে। আকাশ আট চ্যানেলে এই ধারাবাহিক দেখানো হবে প্রতি সপ্তাহে সোম থেকে শনি পর্যন্ত। আকাশ আট দীর্ঘদিন ধরেই বাংলা সাহিত্যনির্ভর ধারাবাহিক প্রদর্শিত হয়। বর্তমানে ধারাবাহিক সোপ অপেরা মানেই যে ওয়ান লাইনার কোনও রকমে লিখে দেওয়া অতি সাধারণ এবং একঘেয়ে বিষয় নয় এটি। এই বিষয়ে প্রচেত গুপ্ত বললেন, এই চ্যানেল সাহিত্য ভিত্তিক অনেক ধারাবাহিক তৈরি করে। তাই এই গল্পটা নিয়ে তারা কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করলে রাজি হয়ে যাই। 'চাঁদের বাড়ি' একটা যৌথ পরিবারের গল্প বলেছিল। মধুর হাওয়া এখনকার যৌথ পরিবারের ছবি তুলে ধরবে। যেখানে বাবা ভাবতেই পারে
না ছেলে অ্যাপ বাইকে করে কোথাও যাবে আর সেই বাইকটা চালাবে একজন মহিলা। বাজার যাওয়ার পরিবর্তে বাড়িতেই সব কিছু আনিয়ে নেওয়া যাবে। এই যে টেকনোলজির পরিবর্তন, আর সেই পরিবর্তনের সঙ্গে পরিবারের বিভিন্ন প্রজন্মের মানিয়ে নেওয়া, বিরক্তি প্রকাশ করা; এই সব মিলিয়েই এই গল্প। এটা উপন্যাস নয়। তাই অবশ্যই ধারাবাহিকের জন্য গল্পটা বাড়াতে হবে। সেই বিন্যাসের কাজটা করছেন রাকেশ ঘোষ। অবশ্যই আমিও সঙ্গে আছি ওঁদের। কিরণ কানন গল্পের মধ্যে এমন কিছু এলিমেন্ট রয়েছে, যেটা উত্তরাধুনিক এবং একই সঙ্গে মধ্যবিত্ত বাঙালির একটু একটু করে ভেঙ্গে যাওয়া ট্যাবু চিহ্নিত করবে। একই সঙ্গে থাকছে প্রাচীনপন্থী ও আধুনিক মানসিকতার দ্বন্দ্ব ও বিবর্তন। একই বাড়িতে চার প্রজন্মের মধ্যে জেনারেশন গ্যাপের পাশাপাশি একাত্মতা এই গল্পের মূল ইউএসপি। এই প্রসঙ্গে পরিচালক অনিন্দ্য সরকার বলেন, এটি যৌথ পরিবারের গল্প। অনেক মতবিরোধের মধ্যেও তাদের যৌথ পরিবারের ভালোবাসার। গল্প বলবে। যেটা এই সময়ের জন্য অত্যন্ত ভালো বার্তা।