৩৬৫দিন। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হবে। সমস্ত হত্যা ও অন্যায়ের বিচার হবে। বাংলাদেশের শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর উত্তাল পরিস্থিতিতে সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই জানালেন বাংলাদেশের সেনা প্রধান ওয়াকার উজ জামান। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের জন্য আজকেই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করবেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান। রাতের মধ্যেই বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হতে পারে। সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে, আন্দোলনরত ছাত্র ছাত্রীদের সংঘর্ষ থেকে বিরত থাকার কথা বলে তাদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার আবেদন জানান ওয়াকার উজ জামান। তিনি জানান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে দেশের সমস্ত প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে জামাত, বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির নেতৃত্বরা উপস্থিত ছিলেন। হাজির ছিলেন বাংলাদেশের সুশীল সমাজের সদস্যরাও। যদিও বৈঠকে আওয়ামী লীগের কোন নেতা উপস্থিত ছিলেন না।
সেনাবাহিনীর উপর আস্থা রাখুন সমস্ত অন্যায়ের বিচার হবেসেনাপ্রধান সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, দেশে একটা ক্রান্তিকাল চলছে। আমি সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দকে এখানে আমন্ত্রণ করেছিলাম। একটা সুন্দর আলোচনা করেছি। আলোচনায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমরা গঠন করব। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাধ্যমে এ দেশের সমস্ত কার্যকলাপ চলবে। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি সমস্ত হত্যা ও অন্যায়ের বিচার করব। আপনারা সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনীর উপর আস্থা রাখুন। আমি সব দায়িত্ব নিচ্ছি। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, আপনারা আশাহত হবেন না। আপনাদের যত দাবি আছে তা পূরণ করব এবং দেশে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবো। আপনারা আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করুন। দয়া করে আর হত্যা, মারামারি, ভাঙচুর, সংঘর্ষ এগুলোর থেকে বিরত থাকুন। আপনারা যদি আমাদের সাহায্য করেন, আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই আমরা একটা সুন্দর পরিণতির দিকে অগ্রসর হতে পারব। সংঘর্ষ করে আমরা আর কিছু পাব না। দয়া করে আপনারা সমস্ত ধ্বংসযজ্ঞ এবং অরাজকতার থেকে বিরত থাকলে আমরা একটা সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে এগোতে পারবো। প্রতিটা হত্যা ও অন্যায়ের বিচার হবে।আমাদের একটু সময় দিন আমরা সবাই মিলে সমস্ত সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হব। আমাদের দেশের অনেক ক্ষতি হচ্ছে, অর্থ সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে, লোকজন মারা যাচ্ছেন।
সমস্ত রাজনৈতিক দলকে নিয়ে বৈঠক, ছিল না আওয়ামী লীগরাজনৈতিক দল এর বৈঠক প্রসঙ্গে সেনা প্রধান বলেন, সমস্ত প্রধান প্রধান দলের নেতারা এখানে এসেছিলেন। আমি ওনাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। আমাদের আলোচনা ফলপ্রসু হবে বলেই আমি আশাবাদী। আমাদের প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। আজকের আলোচনায় জামাতের আমিন, বিএনপি, জাতীয় পার্টির শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্ব ছিলেন।সুশীলসমাজের সদস্যরা ছিলেন। ডক্টর আসিফ নজরুল নিজে উপস্থিত হয়ে ছাত্রদের সুন্দর একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। ওনাকে ছাত্ররা খুব শ্রদ্ধা করে। আশা করছি ওনার এই বার্তা শুনে ছাত্ররা এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে চলে আসবে। আলোচনায় আওয়ামী লীগের কেউ ছিল না। আমি সবাইকেই আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম সময় খুব কম ছিল। সবাই এই প্রস্তাবে রাজি হয়েছে। মনিরুল হক সাহেব ছিলেন, জামায়াতের হাবিব, জুনায়েত সাকিব ছিলেন। ডক্টর আসিফ নজরুল ছিলেন। ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে আমি কাউকে পাইনি।
আজই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ, রাতেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারসাংবাদিক বৈঠক শেষ করেই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন সেনাপ্রধান আকার উজ জামান।তার দাবি, আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করে সবটা ঠিক করব। আজকেই আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে যাব।এখন আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে যাব। এ বিষয়ে আমরা ওনার সঙ্গে আলোচনা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করব।আজ রাতের মধ্যেই আমরা একটা সমস্যার সমাধানের পথে হাঁটতে পারো। কিন্তু আমাদের দু একদিন সময় দিতে হবে।
সেনাবাহিনী,পুলিসকে গুলি না চালোনোর নির্দেশসেনাবাহিনীকে গুলি চালানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী শান্তির শৃঙ্খলা বজায় রাখার কাজ চালিয়ে যাবে। আপনাদের, রাজনৈতিক নেতৃত্ববৃন্দ কর্মীদের দায়িত্ব এখন সেনাবাহিনীকে সাহায্য করা।দেশ শান্ত হয়ে গেলে কারফিউ, জরুরি অবস্থার প্রয়োজন নেই। কোন গোলাগুলির প্রয়োজন নেই আমি আদেশ দিয়ে দিয়েছি সেনাবাহিনী কোন গুলি চালাবে না। পুলিশ কোন গোলাগুলি করবে না। আমি আশা করছি আমার এই বক্তব্যের পর পরিচিতির উন্নতি হবে এবং আমরা একটা সুন্দর পরিস্থিতির দিকে যাব।