অসমের গণধর্ষণে গ্রেফতার মাত্র ১, সেও পালাতে গিয়ে মৃত
৩৬৫দিন। এক নারকীয় গণধর্ষণ। তিন অভিযুক্তের মধ্যে মোটে একজনকে গ্রেফতার করতে পেরেছিল অসমে হিমন্ত বিশ্বশর্মার পুলিশ। সেও পুলিশের হাত ছাড়িয়ে সটান ঝাঁপ দিল পুকুরে! শনিবার পুকুর থেকে উদ্ধার হল অভিযুক্তের দেহ। নগাঁও-য়ে প্রথমে নাবালিকাকে গণধর্ষণ এবং তারপর অন্যতম অভিযুক্তের রহস্যমৃত্যু ঘিরে প্রশ্নে হিমন্ত বিশ্বশর্মা এবং তাঁর পুলিশ প্রশাসনের ভুমিকা। কিভাবে গণধর্ষণের মত গুরুতর এবং জঘন্য অপরাধে অভিযুক্ত পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালালো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। আদৌও যা বলা হচ্ছে তা ঘটেছে নাকি সবটাই সাজানো তা নিয়েও দানা বাঁধছে রহস্য। তবে কি কোনও বড় মাথাকে আড়াল করার জন্য পুলিশ হেফাজতে খুন করা হল অভিযুক্তকে। পরে দেহ পুকুরে ফেলে জলে ঢুবে মৃত্যুর তত্ত্ব খাড়া করা হচ্ছে! ঘটনায় তিন জন অভিযুক্ত। যাকে ধরা হয়েছিল তাকে জেরা করেই বাকিদের সন্ধান মিলতো। এখন তার-ই মৃত্যু হওয়ায় তদন্ত ধামাচাপা পড়ার আশঙ্কাও করছেন অনেকে। বিরোধীদের প্রশ্ন, অবিজেপি রাজ্যে কোনও ঘটনা ঘটলেই হই হই করে ময়দানে প্রথমে নেমে পড়েন হিমন্ত। এখন তিনি কি বলবেন। পদত্যাগ করবেন? ভাজপা কোন মুখে আরজি কর নিয়ে বাংলায় মুখ নাড়ে? তারা কি এবার অসমে পথে নামবে? প্রশাসনের সদর দফতর ঘেরাও করে জাস্টিস চাইবে ? বৃহস্পতিবার অসমের নগাঁও জেলায় ১৪ বছরের একটি মেয়েকে গণধর্ষণ করা হয়।ধর্ষণের পর রাস্তার ধারে অর্ধনগ্ন অবস্থায় ফেলে দিয়ে গিয়েছিল অভিযুক্তরা। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ অসম সরকারের পুলিশ ৩ জনের মধ্যে মাত্র একজন অভিযুক্ত তফজুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। আরো দুই অভিযুক্তের এখনো খোঁজ পায়নি হিমন্ত বিশ্ব শর্মার পুলিশ। জানা গিয়েছে, শনিবার ভোর ৪টে নাগাদ অভিযুক্তকে নগাঁওয়ের ধিং নামক এক জায়গায় নিয়ে যায় পুলিশ। ওই জায়গাতেই কিশোরীকে গণধর্ষণ করেছিল অভিযুক্তরা। ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতেই পুলিশ অভিযুক্তকে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে অভিযুক্ত সুযোগ বুঝে পুলিশকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। দৌঁড়ে পুকুরে ঝাঁপ দেয় অভিযুক্ত। কিন্তু আর পুকুর থেকে উঠতে পারেনি। শুরু হয় তল্লাশি। কয়েক ঘন্টা ঘণ্টা পরে পুলিশ রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এসে দেহ উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের হাতে হাতকড়া পরানো ছিল। এক কন্সটেবলের হাত ছাড়িয়ে অভিযুক্ত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আহত হয়েছেন ওই পুলিশকর্মী। ভোর ৪টের সময় ঘটনাস্থলে ধৃতকে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। সাধারণত এই ধরণের মামলায় অভিযুক্তকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায় পুলিশ। তারপর তাকে নিজেকে ঘটনা পুনর্নির্মাণ করে দেখাতে বলা হয়। সাধারণত অভিযুক্তের হাত ধরে রাখেন পুলিশকর্মীরা। ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে ময়দানে নামতে হয়েছে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে। তিনি বলেন, এটা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের কাউকে ছাড়া হবে না। অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া হবে। আমি অসম পুলিশ প্রধানকে ঘটনাস্থলে যেতে বলেছি এবং অপরাধীদের যাতে কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়, তা নিশ্চিত করতে বলেছি।