৩৬৫ দিন। নবান্ন অভিযানের দিনই ইউজিসি নেট পরীক্ষা। সেক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই যাঁরা পরীক্ষা দেবেন তাঁরা কিছুটা হলেও দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়ে গিয়েছেন।কারণ পরীক্ষার দিন যদি রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে যায়, অশান্তি হয় তাহলে সমস্যা হতে পারে।তবে এবার তা নিয়ে নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছে কলকাতা পুলিশ।এনিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বার্তা দিয়েছে কলকাতা পুলিশ।শুধু কলকাতা পুলিশই নয় রাস্তায় নামছে রাজ্যপুলিশও।রবিবার সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টে কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়,পরশু, অর্থাৎ ২৭ অগাস্ট, ইউজিসির নেট পরীক্ষার পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯.৩০ থেকে ১২.৩০, এবং বিকেল ৩.০০ থেকে ৬.০০ পর্যন্ত। সেদিনই নবান্ন অভিযান-এর আহ্বান জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ নামক গোষ্ঠী।এই অভিযানের কারণে যাতে কোনও নেট পরীক্ষার্থী তাঁদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে অসুবিধেয় না পড়েন,সেই উদ্দেশ্যে রাস্তায় থাকবে পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থা।কোনওরকম অসুবিধেয় পড়লে অনুরোধ, নিকটবর্তী পুলিশকর্মীর সাহায্য নিন অথবা নিকটবর্তী থানায় যোগাযোগ করুন।এদিকে,সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে,পাশে আছি। আগামী ২৭ অগস্ট ইউজিসি নেট পরীক্ষা রয়েছে,যাতে বহু সংখ্যক ছাত্রছাত্রী অংশ নেবেন।পরীক্ষা চলবে সকাল ৯.৩০ থেকে ১২.৩০ ও বিকেল ৩টে থেকে ৬টা পর্যন্ত। ঘটনাচক্রে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ নামে একটা গোষ্ঠী এই ২৭ তারিখেই নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে।আমাদের আশঙ্কা এই কর্মসূচির কারণে অসংখ্যক নেট পরীক্ষার্থী তাঁদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে অসুবিধায় পড়বেন।পরীক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য রাস্তায় পর্যাপ্ত পুলিশ থাকবে। কোনওরকম অসুবিধায় পড়লে পুলিশের সাহায্য নিন।আমরা নিশ্চিত করব যাতে পরীক্ষার্থীরা নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে নিজের নিজের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারেন।রাজ্য পুলিশের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকেই।অনেকেই লিখেছেন ভালো কাজ করছেন।সূত্রের খবর,মঙ্গলবার নবান্ন ও লাগোয়া এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকবেন ২১ জন আইজি এবং ডিআইজি পদমর্যাদার অফিসার, ১৩ জন এসপি বা ডিসি পদমর্যাদার অফিসার, ১৫ জন এডিসিপি বা এসিপি পদমর্যাদার অফিসার, ২২ জন এসি বা ডেপুটি এসপি পদমর্যাদার আধিকারিক, এমনকী, ২৬ ইনস্পেক্টরও।প্রসঙ্গত,মঙ্গলবার কলকাতার কলেজ স্ট্রিট ও হাওড়ার সাঁতরাগাছিতে দুপুর ১টায় জমায়েত হবে। সেখান থেকেই শুরু হবে তাদের নবান্ন অভিযা ন।
হাওড়ায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তাআগামী মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের আগে নিরাপত্তা বিষয়ক সবরকম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে প্রশাসনের তরফ থেকেও। মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযান শান্তিপূর্ণ রাখতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ওইদিন শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে মিছিল আসবে। তার তিনদিন আগে থেকেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শনিবারই শহরের একাধিক এলাকা পরিদর্শন করেন পুলিশ কর্তারা। রবিবার দুপুরে সাঁতরাগাছিতে ব্যারিকেড প্রস্তুতির কাজের ছবি ধরা পড়ে। উল্লেখ্য, আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে আগামী ২৭ তারিখ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের ডাকে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। আর তার আগেই হাওড়া সিটি পুলিশের চূড়ান্ত প্রস্তুতির ছবি এদিন ধরা পড়েছে হাওড়ার কোনা এক্সপ্রেসওয়ের বেলেপোল মোড়ে। এদিন দুপুরে হাওড়া সিটি পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের তত্ত্বাবধানে বেলেপোল মোড়ে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপর শক্তপোক্ত লোহার ব্যারিকেড বসানোর কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। লোহার ব্যারিকেডের অংশ কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপর ড্রিলিং করে ওয়েল্ডিং এর কাজ চলে এদিন।
শহরের গণপরিবহণ সচল রাখতে নির্দেশ পরিবহণ দফতরেরআরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার পর আগামী মঙ্গলবার ভাজপার ছাত্র সংগঠন নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে। নবান্ন অভিযানের দিন সাধারণ মানুষের যাতায়াতে যেন কোন সমস্যা না হয়, শহরের গণপরিবহণ সচল রাখতে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছে পরিবহণ দপ্তর। পরিবহন দপ্তর সূত্রে খবর, সেই নির্দেশে বলা হয়েছে, ওই দিন পরিবহণ দফতরের সর্ব স্তরকে শহর কলকাতার গণপরিবহণ সচল রাখতে বাড়তি উদ্যোগী হতে হবে। যাতে নিত্যযাত্রীদের কোনও অসুবিধা না হয়, সে ভাবেই সব বন্দোবস্ত করতে হবে। পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, সরকারি বাস, ট্রাম তথা ফেরি সার্ভিসের অতিরিক্ত শিফটে যাত্রী পরিষেবা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এই প্রসঙ্গে রবিবার রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, 'বাস পরিষেবা স্বাভাবিক থাকবে। নিত্য যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে কোনও অসুবিধা হবে না। এর জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।' উল্লেখ্য, আগামী মঙ্গলবার কলকাতা এবং হাওড়া শহর জুড়ে ব্যাপক যানজট দেখা দিতে পারে নবান্ন অভিযানের ফলে। কলকাতার পাশাপাশি হাওড়া শহরকেও যাতে সচল রাখা যায়, সেই কারণে হাওড়া পুলিশ কমিশনারদের সঙ্গেও আলোচনা করেছে পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা। বহু নিত্যযাত্রী হাওড়া দিয়ে কলকাতায় প্রবেশ করেন। সে ক্ষেত্রেও যাতে হাওড়া দিয়ে কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে যেতে যাত্রী সাধারণের কোনও অসুবিধা না হয়, সেই বিষয়টিও মাথায় রাখা হয়েছে। এ ছাড়া, কলকাতা থেকেও বহু যাত্রী ট্রেন ধরতে হাওড়ার উদ্দেশে যান। সে ক্ষেত্রে যাতে তাঁদের কোনও অসুবিধা না হয়, সে জন্য পর্যাপ্ত বাসের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি মঙ্গলবার যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে বেসরকারি বাস রাস্তায় নামে, সে বিষয়ে পরিবহণ দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে বেসরকারি সংগঠনগুলির। অন্যদিকে বাস ছাড়াও ট্যাক্সি, অটো, অ্যাপ ক্যাব যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে চলাচল করে, সে বিষয়েও অ্যাপ ক্যাপ পরিষেবা প্রদানকারী সংগঠনের নেতৃত্বদের সঙ্গে কথা বলেছেন পরিবহণ দফতরের শীর্ষ আধিকারিকেরা। নবান্ন অভিযানের কারণে যাতে জনমানসে কোনও প্রভাব না পড়ে, আপাতত সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাইছে রাজ্য পরিবহণ দপ্তর।