৩৬৫ দিন। বাংলায় ভাজপা রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের প্রস্তাব মতো বঙ্গভঙ্গ করে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিকে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে জোড়ার প্রস্তাবে সায় দিলেন না শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্য বিধানসভায় মমতার নির্দেশে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে তৃণমূলের আনা প্রস্তাবে পূর্ণ সমর্থন জানালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার সঙ্গে স্পষ্ট হয়ে গেল বাংলায় ভাজপাতে শুভেন্দু বনাম সুকান্ত শিবিরের আড়াআড়ি ফাটল।
সেই সঙ্গে বাংলার বিধানসভায় দেখা গেল একের পর এক নজিরবিহীন ছবি। দ্বিতীয়বারের জন্য সংসদ নির্বাচিত হয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হয়েই আজ করা হয়েছে সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তিনি আগে দাবি করেন তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব দিয়েছেন উত্তরবঙ্গের জেলা গুলিকে বাংলা থেকে বিভক্ত করে উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার।
সেই সঙ্গে বাংলার বিধানসভায় দেখা গেল একের পর এক নজিরবিহীন ছবি। দ্বিতীয়বারের জন্য সংসদ নির্বাচিত হয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হয়েই আজ করা হয়েছে সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তিনি আগে দাবি করেন তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব দিয়েছেন উত্তরবঙ্গের জেলা গুলিকে বাংলা থেকে বিভক্ত করে উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার।
প্রস্তাবের পক্ষে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, বিরোধী দল জানে না কী চায়। কেউ বলছেন রাজ্য চাই। কেউ বলছেন ভাগ চাই। তাঁর মন্তব্যের প্রতিবাদ করেন ভাজপা বিধায়কেরা। তাঁদের দাবি, দলের কেউ রাজ্য ভাগ চায়নি। প্রস্তাবের বিপক্ষে বক্তব্য রাখতে উঠে শুভেন্দু বলেন, যে প্রস্তাব আনা হয়েছে, তা মনে হচ্ছে রাজনৈতিক দলের লিফলেট। রাজ্য থেকে নির্বাচিত সাংসদ, মন্ত্রী কখনও কেউ রাজ্য বিভাজনের কথা বলেননি।
এরপরেই অখন্ড পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের প্রস্তাব' আনার জন্য মন্ত্রী শোভনদেবকে অনুরোধ করেন শুভেন্দু। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী দলনেতার উদ্দেশে বলেন, আপনারাই আনতে পারতেন। শুভেন্দু বলেন, আপনাদের আজকের প্রস্তাব পুরোপুরি রাজনৈতিক। এটা পার্টির লিফলেট হয়ে গেছে। বিজেপির একজন সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীমাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটা প্রস্তাব দিয়েছেন যা আদৌ বাংলা ভাগের কথা নয়। তিনি বাংলা ভাগের কথা বলেননি। তিনি তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। আমি একটা প্রস্তাব দিচ্ছি। পরিষদীয় মন্ত্রী যখন উত্তর দেবেন তখন বর্তমান প্রস্তাবের বয়ানের কিছুটা পরিবর্তন করুন। আমার প্রস্তাব অখন্ড পশ্চিমবঙ্গ, অবিভক্ত পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন নিয়ে প্রস্তাব আনুন। আমরা সহমত পোষণ করব।
শুভেন্দুর এ কথা শুনে বিধানসভার অধ্যক্ষ তথা স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আপনারা কোনও সংশোধন প্রস্তাব জমা দেননি। তা জমা দিলে অবশ্যই বিচার করা হত।
ভাজপা সাংসদ অনন্ত মহারাজের বাড়িতে মমতার যাওয়া নিয়ে বিধানসভায় প্রশ্ন তুলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, গ্রেটার কোচবিহারের দাবি তোলেন যে নেতা, তার বাড়িতে কেন বৈঠক? তার জবাবে বক্তব্য রাখতে উঠে না মমতা বলেন, আলোচনার জন্য তাঁর বাড়িতে গিয়েছি, চা খেয়েছি, আপনি ডাকলেও যাব। মমতার এই বক্তব্যে কার্যত জবাব দেওয়ার কথা খুঁজে পাননি শুভেন্দু। সরকারের পক্ষ থেকে বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ। বাংলা ভাগে উস্কানি দেওয়ার জন্য তিনি ভাজপাকে আক্রমণ করেন। ভাজপা বাংলা ভাগে প্ররোচনা দিচ্ছে, এমন দাবি করে বেশ কয়েকটি উদাহরণও তুলে ধরেন তিনি।
শুভেন্দুর পর বলতে ওঠেন মমতা। শুভেন্দু যেভাবে অখণ্ড পশ্চিমবঙ্গের প্রস্তাব দিয়েছেন তাকে সমর্থন জানান মমতা। পরিষদীয় মন্ত্রী শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে মমতা বলেন, শুভেন্দু যেটা বলছেন সেই প্রস্তাবটা যুক্ত করে নিন। এর পরে আর বিরোধী দলের কাছে বিরোধিতা করার মত কোন ইস্যু ছিল না। ধ্বনি ভোটে বাংলার বিধানসভায় নজিরবিহীন ভাবে তৃণমূল এবং ভাজপা বিধায়করা সর্বসম্মতভাবে পাস করেন অখন্ড পশ্চিমবঙ্গের প্রস্তাব। পাশাপাশি আজকেই প্রথমবারের জন্য বাংলার রাজ্য সংগীত গাওয়ার সময় বিধানসভায় উঠে দাঁড়িয়ে গলা মেলান শুভেন্দু অধিকারী সহ সমস্ত ভাজপা বিধায়করা।
সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পশ্চিমবঙ্গ এক থাকবে, রাজ্যকে আমরা ভাগ হতে দেব না। আসুন সবাই মিলে এই প্রস্তাব নিই। বিরোধী দলনেতাও একটা প্রস্তাব দিয়েছেন। আসুন রাজ্যের প্রস্তাব কিছুটা সংশোধন করে গ্রহণ করা হোক। রাজ্য-কেন্দ্র হাত মিলিয়ে চলবে।